সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোমবারের মতো মঙ্গলবারও টলিপাড়া স্তব্ধ। শোনা যায়নি লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশনের শব্দ। বন্ধ সিনেমা, সিরিয়াল, সিনেমার শুটিং। টলিউডের এই অচলাবস্থায় ইতি টানতে, মঙ্গলবার নবান্নে পৌঁছে গেলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, দেব, গৌতম ঘোষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে বিশেষ বৈঠকে বসলেন তাঁরা। বৈঠক শেষে টুইট করলেন দেব। দেবের সেই টুইটে আশার আলো দেখছে গোটা টলিপাড়া।
দেব টুইটে লিখলেন, ''ধন্যবাদ। দিদি। আশা করা যায় আজকে বিকেলের মধ্যেই সব সমাধান হবে। আর আগামীকাল থেকে ফের শুটিং শুরু হবে। সমস্ত টেকনিশিয়ান, পরিচালক ও স্টেকহোল্ডারদের ধন্যবাদ। ''
[আরও পড়ুন: গরুপাচার কাণ্ড: CBI মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের জামিন, জেলমুক্তি হবে?]
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারও কর্মবিরতি চলছে বলে জানিয়েছেন পরিচালক ও প্রযোজকরা। ফেডারেশনের সঙ্গে সমস্যা মেটাতে সোমবার দুপুরে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে একদফা বৈঠক হয় পরিচালক ও প্রযোজকদের। তার পরই পালটা সংবাদ সম্মেলনে পরিচালকদেরই কাঠগড়ায় তোলে ফেডারেশন। সংগঠনের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, ষড়যন্ত্র করে শুটিং বন্ধ রাখা হয়েছে। কলাকুশলীরা কাজ বন্ধ করেনি। এই প্রেক্ষাপটে সোমবার রাত সাড়ে নটা নাগাদ সাংবাদিক বৈঠক করে পরিচালকরা ‘নিরপেক্ষ’ তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁরা কাজ বন্ধের পক্ষে নয়। তাঁরা কাজ বন্ধ করেননি। চাপ দিয়ে কাজ বন্ধ করানো হয়েছে।
এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন অঞ্জন দত্ত। তিনি জানান, “আমরা তো সিনেমা করি। তাই যে সিনেমা বোঝে। নিরপেক্ষ। আইন বোঝে। এমন কাউকে এই তৃতীয় পক্ষ করা উচিত।” এই তালিকায় কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, আমলাও থাকতে পারেন বলে মত পরিচালকদের। কাজ বন্ধ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পরিচালক-অভিনেতা অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি অ্যালিগোরিকালি বলছি। এতোদিন আমাদের জ্বর হলে দোকান থেকে টপ করে ওষুধ কিনে খেয়ে ফেলতাম। এবার আমার একটা ডাক্তার চাইছি। প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিকের একটা লম্বা কোর্স করতে চাইছি।” তাঁদের সাফ কথা, বিষয়টা আর একজনের অপমানের উপর দাড়িয়ে নেই। এতদিনে চাওয়া-পাওয়ার বিষয়টিও যুক্ত হয়ে গিয়েছে। কাজ বন্ধ না রাখা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের উল্লেখ করেছিল ফেডারেশন। এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনে পরিচালক রাজ চক্রবর্তী বলেন, “আমরা কাজ বন্ধ রাখছি না। আমরা কাজ বন্ধ করিনি। এখন মুখ্যমন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে আমরা কাজ বন্ধ রাখছি বোঝানো হলে, তা সম্পূর্ণ ভুল হবে। আমাদের ফ্লোরে না ঢুকে কাজ বন্ধ করানো হয়েছে।”
বন্ধ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্যদের পুজো রিলিজের শুটিং। পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের উপর ক্ষুব্ধ কলাকুশলীরা। এদিকে রাহুলের পাশে দাঁড়িয়ে শনিবার টলিপাড়ার পরিচালকরা সম্মিলিতভাবে ফ্লোর বয়কটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আর তার পর থেকেই স্তব্ধ হয়ে যায় টলিউডের শুটিং। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে আশার আলো দেখছে টলিউড।