সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নতুন বছরের প্রথম সকালে কল্পতরু উৎসব উপলক্ষে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়েছে কাশীপুর উদ্যানবাটি ও দক্ষিণেশ্বরে। রবিবার সকালে বিশেষ মঙ্গলারতি হয়েছে কাশীপুর উদ্যানবাটিতে। দিনভর চলবে পূজাপাঠ, রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের জীবন ও বাণী নিয়ে আলোচনা।
১৮৮৬ সালের ১ জানুয়ারি, ক্যানসারে আক্রান্ত রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব তখন গুরুতর অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য তাঁকে আনা হয় উত্তর কলকাতার কাশীপুর উদ্যানবাটিতে। ওই দিন সকালে একটু সুস্থ বোধ করায় বাগানে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভক্ত তথা বিখ্যাত নাট্যকার গিরীশচন্দ্র ঘোষ। ঠাকুর আচমকাই গিরীশচন্দ্রকে জিজ্ঞেসা করলেন, ‘তোমার কী মনে হয়, আমি কে?’ উত্তরে তাঁর ভক্ত বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব ‘মানবকল্যাণের জন্য মর্ত্যে অবর্তীণ ঈশ্বরের অবতার।’
[আরও পড়ুন: তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে একগুচ্ছ কর্মসূচি, সোমবার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক মমতার]
এরপর কাশীপুর উদ্যানবাটিতে ভক্তদের স্বরূপ দর্শন দেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। আর্শীবাদ করেন, ‘তোদের চৈতন্য হোক।’ ভক্তরা বলেন, সেদিন হিন্দু পুরাণে বর্ণিত কল্পতরু হয়েছিলেন ঠাকুর। রামকৃষ্ণের সেই রূপের সাক্ষী ছিলেন তাঁর গৃহী ভক্তেরা। সেই থেকে প্রতি বছর ১ জানুয়ারি কল্পতরু উৎসব হয় কাশীপুর উদ্যানবাটি ও দক্ষিণেশ্বরে।
এদিন দক্ষিণেশ্বর এবং কাশীপুর উদ্যানবাটিতে প্রতিবারই হাজার হাজার ভক্ত সমাগম হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। যদিও করোনা কাঁটায় দু’বছর কাশীপুর উদ্যানবাটিতে ভক্তের আনাগোনা বন্ধ ছিল। এবার শনিবার রাত থেকেই কাশীপুর উদ্যানবাটি থেকে দক্ষিণেশ্বরে ভক্তদের সমাগম। রবিবার সকালে মন্দিরের বাইরে ফুলের ডালা হাতে ভক্তদের লম্বা লাইন চোখে পড়েছে। কল্পতরু উৎসবের দিন পরমহংসদেবের কাছে মন থেকে চাইলে সে ইচ্ছাপূরণ হয়, সেই বিশ্বাস থেকেই সাতসকালে মন্দিরের বাইরে ভক্তের ঢল। দীর্ঘ লাইন পেরিয়ে পুজো দিতে সময় লাগছে বেশ খানিকটা বেশি।
নতুন বছরের প্রথম দিনকে চেটেপুটে উপভোগ করতে দক্ষিণেশ্বর, কাশীপুর উদ্যানবাটির পাশাপাশি বিভিন্ন বিনোদন পার্কেও মানুষের ঢল। আট থেকে আশির ভিড় চিড়িয়াখানাতেও।