সুকুমার সরকার, ঢাকা: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধজয়ের দিনই মেট্রোরেল পাচ্ছে ঢাকা। সব ঠিক থাকলে ১৬ ডিসেম্বর থেকে রাজধানীতে মেট্রোরেল পরিষেবা শুরু হবে। মহানগরকে প্রবল যানজটের হাত থেকে মুক্তি দিয়ে মেট্রোরেলের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মেট্রো পরিষেবা নিয়ে বাংলাদেশে উচ্ছ্বাস থাকলেও ভাড়া যা নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে আমজনতার মাথায় হাত। সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা পর্যন্ত ধার্য করা হয়েছে টিকিটের। ঢাকার উত্তরা থেকে মতিঝিল স্টেশন পর্যন্ত যেতে খরচ হবে ১০০ টাকা। প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ টাকা। এনিয়ে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ”যেসব যাত্রী সাপ্তাহিক, মাসিক, পারিবারিক কার্ড ব্যবহার করবেন, তাঁদের বিশেষ ছাড় দেওয়া হবে। তবে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিনামূল্যে মেট্রোরেলে ভ্রমণ করতে পারবেন।”
[আরও পড়ুন: ঢাকার রাস্তায় ‘মৃত্যুফাঁদ’, ম্যানহোলে পড়ে জখম জার্মান উপরাষ্ট্রদূত]
জানা গিয়েছে, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল অংশে স্টেশন রয়েছে নয়টি। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত আগামী বছরের শেষে পরিষেবা চালুর পরিকল্পনা আছে। ওই অংশে স্টেশন থাকবে সাতটি। মেট্রোরেল পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড। কলকাতা-দিল্লির মতো কার্ড কিনে মেশিনে পাঞ্চ করে তবেই যাত্রীরা স্টেশনে ঢুকতে ও বেরতে পারবেন। থাকবে মাসিক কার্ডও। ঢাকার মেট্রোরেলে মরিয়ম আফিজা ও আসমা আক্তার চালকের আসনে বসার জন্য তৈরি।
এছাড়া, এমআরটি-১ এর আওতায় রাজধানীর এয়ারপোর্ট থেকে কমলাপুর রুটে পাতালপথে মেট্রোরেল চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত মোট ২৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রুট ঠিক করা হয়েছে। এই রুট নির্মাণে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার পিতলগঞ্জ মৌজায় ৮৮ দশমিক ৭১ একর এলাকার ভূমি অধিগ্রহণ চলছে। মেট্রো রেল লাইন-১ নামে পরিচিত দেশের প্রথম পাতালরেলের নির্মাণকাজ শুরু হতে যাচ্ছে আগামী ডিসেম্বরে। প্রথম প্যাকেজের নির্মাণকাজের জন্য জাপানি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করছে ঢাকা মাস ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। পুরো প্রকল্পের নির্মাণকাজ ১২টি প্যাকেজে করা হবে। প্রথম প্যাকেজে কাজ করবে জাপানের টোকিউ কনস্ট্রাকশন কম্পানি লিমিটেড এবং বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। পাতাল মেট্রো রেল নির্মাণে ব্যয় হবে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪০ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এবং বাকিটা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।