সুকুমার সরকার, ঢাকা: সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে কাজ করতে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সহযোগিতা চাইছেন বাংলাদেশের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। আজ রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে “সিকিউরিটি সিম্পোজিয়াম অ্যান্ড সাইবার সেন্টিনেল অ্যাওয়ার্ড বাংলাদেশ” শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি। তিনি ছাড়াও এই মঞ্চ থেকে বক্তব্য রাখেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান, ইনফোসেক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সুশোভন মুখোপাধ্যায় ও এন্টারপ্রাইজ আইটি ওয়ার্ল্ডের সঞ্জয় মহাপাত্র।
বক্তব্য রাখার সময় ভারতের প্রতিনিধি-সহ উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “আপনি স্মার্ট, অন্য ব্যক্তিও স্মার্ট। আপনি যদি আরও স্মার্ট হন, সেও আরও স্মার্ট হবে। তাই সীমাহীন সাইবার দুনিয়ায় নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এখানে যারা আছেন, আপনাদের বাংলাদেশে স্বাগতম। এখানে আপনারা ব্যবসা করেন। আপনারা যদি এক পা এগোন, আমরা দুই পা এগোব- এটাই আমাদের নীতি।” তিনি বলেন, “আমরা একে অপরকে সমৃদ্ধ করব। যৌথভাবে অগ্রগতির দিকে আমাদের এ যাত্রা। আমি আপনাদের আহ্বান জানাব, আমাদের সঙ্গে যোগ দিন। এটা সাইবার নিরাপত্তার ব্যাপার। এটা প্রয়োজন। সাইবার দুনিয়ায় আমরা আপনাদের সঙ্গে চলতে চাই।”
প্রথম যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কথা বলা হয়েছিল, তখন অনেকে ঠাট্টা-মশকরা করত উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “ডিজিটাল বাংলাদেশ করব, ১৫ থেকে ২০ বছর আগে আমরা যখন কথাটা তুললাম, আমার বন্ধুরা অনেকে ঠাট্টা করত। বলত, তোমরা পাগল নাকি। যে দেশের অর্ধেকের বেশি মানুষ নাম লিখতে পারে না, প্রায় ৬০ থেকে ৭০ ভাগ জায়গায় বিদ্যুৎ নেই, সড়ক নেই, যোগাযোগ নেই, প্রায় ৪০ ভাগ মানুষ ঠিকঠাকভাবে খেতে পায় না, গরিব। সেখানে তোমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করবে? কী পেয়েছ? এটা তামাশা নাকি? কিন্তু আমরা এটা করে ফেলেছি। তবে এখনও অনেকটা যাওয়ার বাকি, সেটাও আমরা করে ফেলব। এই যে বিরাট কাজ, এটা একা সম্ভব নয়। আমাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। প্রতিবেশী দেশ-সহ সব ক্ষেত্র থেকেই সমর্থন প্রয়োজন,”
[জামাত শিবিরে তীব্র অন্তর্দ্বন্দ্ব, দল ছাড়লেন শীর্ষ নেতা]
এরপরই তিনি যোগ করেন, “যারা ঠাট্টা-মশকরা করত, এখন তারা নিজেরাই লজ্জা পায় সেটা মনে করলে। আমাদের ছেলেমেয়েরা, পরিশ্রমী মানুষেরা- সমস্ত ব্যাপারটাকেই পাল্টে দিয়েছে। আর নেতৃত্বের কথা তো বলতেই হবে, কারণ এই ধরনের কাজ নেতৃত্ব ছাড়া হয় না। সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে এই অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আজই যশোরের অভিজাত হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে শুরু হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) চারদিনের ১১তম সীমান্ত সমন্বয় সম্মেলন। এতে দুই দেশের বিদেশ মন্ত্রক ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও উপস্থিত রয়েছেন। অংশ নিয়েছেন বিজিবির যশোর ও রংপুর রিজিয়ন কমান্ডার এবং বিএসএফ’র নর্থ বেঙ্গল, সাউথ বেঙ্গল ও গুয়াহাটি ফ্রন্টিয়ার পর্যায়ের কর্মকর্তারাও।
বিজিবি দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিয়নের পরিচালক (অপারেশন) আহমেদ জুনাইদ আলম খান জানান, বিজিবি উত্তর-পশ্চিম রিজিয়ন রংপুরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আবু তাহের মোহাম্মদ ইব্রাহিম এনডিসি’র নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছে। অপরদিকে বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি শ্রী ইয়াগেশ বাহাদুর খুরানিয়া, আইপিএস-এর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদলের পাশাপাশি রয়েছেন বিএসএফ নর্থবেঙ্গল ও গুয়াহাটি ফ্রন্টিয়ারের আইজি, সংশ্লিষ্ট ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজিগন, ফ্রন্টিয়ার ও সেক্টর পর্যায়ের স্টাফ অফিসারবৃন্দ, বিদেশ মন্ত্রক ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা।
এই সম্মেলনের আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের চোরাচালান, অস্ত্র ও গোলাবারুদ চোরাচালান, সীমান্তে নিরস্ত্র নাগরিকদের গুলি করে হত্যা, আটক, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম, সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ কাজ-সংক্রান্ত ইস্যু, সীমান্তে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ, বিজিবি-বিএসএফ সমন্বিত টহল, উভয় বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি এবং যৌথ সেমিনার/সিম্পেজিয়াম/ওয়ার্কসপ ইত্যাদি বিষয় থাকবে। ২০ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ থেকে ফিরবে। আজ সকাল ১০টার দিকে প্রতিনিধি দলটি পেট্রাপোল-বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সেখানে ফুল দিয়ে তাদের শুভেচ্ছা জানায় বিজিবি’র সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আরশাদুজ্জামান।
The post সাইবার নিরাপত্তায় নয়াদিল্লির সহযোগিতা চাইছে ঢাকা appeared first on Sangbad Pratidin.