অলোক সরকার, রাঁচি: তুমি উইকেটকিপিং করবে?
ধুর, আমি তো ছোট বলে কখনও খেলিনি৷ পারব না কি?
রাঁচির ডিএভি স্কুলের গেম টিচার তবু নাছোড়বান্দা৷ গোলকিপার মাহিকে উইকেটের পিছনে নিয়ে এসেছিলেন৷ তারপর রুদ্ধশ্বাস টানাপোড়েন৷ দেশের সফলতম অধিনায়ক৷ ছোট শহরের বড় নায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি৷
রাঁচিজুড়ে ধোনির বায়োপিকের রেশ এখনও অটুট৷ সেই সূত্রে পরিচিত মুখ স্কুলের সেই গেম টিচারের৷ কেশব বন্দোপাধ্যায়৷ দু’জনের আবার দেখা হতে পারত বুধবার৷ যেমন দেখা হয় শচীন তেণ্ডুলকর আর রমাকান্ত আচরেকরের৷ কিন্তু জীবন তো আর চিত্রনাট্য নয়! না হলে এমন হবে কেন? ধোনি শহরে পা রাখলেন আর তার আগেরদিন থেকে তাঁর স্যার হাই ব্লাড প্রেশারের কবলে পড়ে হাসপাতালে৷
সোমবার রাতে মোকামার হাসপাতালে ফোন করলে কেশববাবুই ধরলেন৷ গলার স্বর ক্ষীণ৷ জানালেন খুব ইচ্ছা ছিল মাঠে বসে মাহির খেলা দেখবেন৷ কিন্তু সেটা বোধহয় হওয়ার নয়! তিনি শুনেছেন ছাত্রের কাছে খবর গিয়েছে৷ খোঁজ নিয়েছেন? স্যার সেটা জানেন না৷ তাঁর কাছে তো ফোন ছিল না৷ তবে ধরে নিয়েছেন মাহি খবর নিয়েছেন৷ আর স্যার চান, মাহি যেন এটা নিয়ে বেশি না ভাবেন৷ সবার আগে খেলা৷ দেশের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে৷
রাঁচিতে মাল্টিপ্লেক্সে এখনও রমরমিয়ে চলছে ‘এমএস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’৷ প্রথম দিন প্রথম শো দেখা লোকের ছড়াছড়ি এখানে৷ কিন্তু আর এক কোচ চঞ্চল ভট্টাচার্যের গলায় এমন আশাহতের সুর কেন? একসময় তাঁর স্কুটারে চড়ে এ মাঠ-সে মাঠে খেলে বেড়াতেন মাহি৷ কিন্তু পর্দায় চঞ্চলবাবুর উপস্থিতি খুবই কম সময়ের জন্য৷ সোমবার দুপুরে মাঠেই দেখা হল মাঝ বয়সি প্রবাসী বাঙালীর সঙ্গে৷ সেই স্কুটার চড়েই ধোরুয়া এসেছেন৷ একসময় মাহি না কি তাঁর বাড়িতে হাজির হয়ে স্ত্রীকে বলতেন, ‘ভাবি আচ্ছাসে চাউমিন খিলাও৷’ এখন আর সেসব মনে রাখতে চান না চঞ্চলবাবু৷
তবে সেসব গৌণ৷ বুধবারের মাচে কেউ মাঠে থেকেই মাহির ব্যাটে রান চাইবেন৷ কেউ হাসপাতালের বিছানা থেকে৷ পর্দার ধোনি পিছনে চলে যাবেন৷ আর রাঁচির সমস্ত আবেগ গায়ে মেখে বাইশ গজে থেকে যাবেন মেকন কলোনির সেই কিশোর৷ এই গল্প পুরনো হওয়ার নয়৷ হবেও না৷
The post ধোনির কোচ অসুস্থ, ছাত্রের ম্যাচ দেখা নিয়ে অনিশ্চয়তা appeared first on Sangbad Pratidin.