সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রথমে ছবি। তারপর ভিডিও। জনপ্রিয় গেম শো ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’-এর একটি এপিসোড নিয়ে তুলকালাম সোশ্য়াল মিডিয়া। এমনকী, সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’ (Didi Number one) বন্ধেরও ডাক দিয়েছেন দর্শকরা। তা হঠাৎ ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’ নিয়ে এত বিতর্ক কেন?
সম্প্রতি ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’-এর এক এপিসোডে সুন্দরবনের এলাকা থেকে এসেছিলেন এক প্রতিযোগী। নিজের জীবনের গল্প এই গেম শোর সঞ্চালিকা রচনা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের (Rachna Banerjee) কাছে তুলে ধরেন তিনি। প্রতিযোগীর কথায়, তিনি বাঘের মুখ থেকে তাঁর স্বামীকে উদ্ধার করেছিলেন। এক রোমহর্ষক গল্পও শুনিয়েছিলেন সুন্দরবনের সেই মহিলা। এই শোয়ে দেখা মিলেছিল তাঁর স্বামীরও।
মহিলার এই গল্পকে ভুয়ো বলেই দাবি করছে নেটিজেনরা। নেটিজেনদের অভিযোগ টিআরপি বাড়ানোর জন্য এধরনের ভুয়ো গল্পের আশ্রয় নিচ্ছে এই গেম শো।
নেটিজেনদের এমন অভিযোগ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া নেওয়ার জন্য সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের তরফ থেকে ফোনে ধরা হয় দিদি নাম্বার ওয়ানের সঞ্চালিকা ও অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি জানান, ‘বিষয়টা এখনও আমার কানে আসেনি। তাই এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাই না। গোটা বিষয়টা ভালভাবে জেনে নিয়ে তবেই প্রতিক্রিয়া দেব।’
[আরও পড়ুন: মালদ্বীপে রাজের সঙ্গে অন্তরঙ্গ শুভশ্রী, অভিনেত্রীর উষ্ণ ছবিতে মজল অনুরাগীরা]
সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচিত হওয়া সুন্দরবনের এই মহিলার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তাঁরই পূর্ব পরিচিত পদ্মাবতী মণ্ডল। সোশ্যাল মিডিয়ায় পদ্মাবতী জানিয়েছেন, ‘সম্প্রতি দিদি নং ওয়ান-এ এই দিদিভাই এসেছিলেন নিজের সাহসিকতার পরিচয় দিতে। নিজের ঘটনা খুলে বলেছেন ! তাতেই কিছু অশিক্ষিত মানুষ ভীষণ খারাপ ভাবে হাসাহাসি করছে ! আসল গল্পটা হল, এই পরিবারটি সুন্দরবনের বাসিন্দা। আমি রুবি শেখ দিদির কাছ থেকে বরাবর দেখে আসছি এনাদের, রুবিদি প্রতিমাসে এনাদের কাছে যায় এবং রেশন দিয়ে আসে। খুবই দুস্থ আর অসহায়, বাঘে আক্রমণ করার পর হাতটা অকেজো হয়ে যায়, ওই হাতটা পঙ্গু, তাই ওভাবেই ঝুলে থাকে। এই দাদাটির একটা মেয়ে আছে ইলেভেনে পড়ে, ভাল ছবি আঁকে। আর একটা ছোটো নাতনি আছে ভালো নাচ করে। রুবিদি ছোটো মেয়েটিকে নাচ শেখাবারও দায়িত্ব নিয়েছে। এগুলো আমি প্রতিদিন দেখতে পাই। তাই আমি জানি সত্যিই এই গল্পটা বানানো নয়। কিন্তু দিদি নং ওয়ান-এ আসার পর ওদের নিয়ে কী জঘন্য মিম বানানো হচ্ছে ! মার্ক করে দেখানো হচ্ছে জামার ভিতর ঝুলে থাকা হাত ! ভীষণ খারাপ লাগছে এটা জেনে যে মানুষ না জেনেই বিচার করছে সবকিছুর। একটা অনুরোধ সেই সব মানুষ গুলোকে, যারা দাদাটিকে নিয়ে ট্রোল করছেন তারা দাদাভাইয়ের সারাবছরের দায়িত্ব নিন। কাউকে নিয়ে ট্রোল করা সহজ , কিন্তু তার পরিস্থিতি অনুযায়ী মোকাবিলা করা ততটাও সহজ নয় ! এই পরিবারটি সত্যিই খুব অসহায়, নেটিজেনদের অনুরোধ জানাই সুন্দরবন গেলে ওদের একবার খোঁজ নিন। সাহায্য করুন। হাসির খোরাক বানাবেন না।’