সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নির্বিচারে একের পর এক গাছ কাটা হচ্ছে। বনের ভিতর থেকে ভেসে আসা ময়ূরের ত্রাহি ত্রাহি চিৎকার শুনলে গা শিউড়ে উঠবে। হায়দরাবাদের এহেন ভিডিও ঘিরে গোটা দেশ তোলপাড়। সুর চড়িয়েছেন পরিবেশপ্রেমীরাও। বুধবারই সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে রাহুল গান্ধী এবং তেলেঙ্গানার কংগ্রেস সরকারকে বিঁধেছিলেন রিচা চাড্ডা। এবার তেলেঙ্গানার বনাঞ্চল ধ্বংস বন্ধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলেন মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty)।
মিমি বরাবরই পশুপ্রেমী তথা পরিবেশপ্রেমী, তার প্রমাণ এর আগেও পাওয়া গিয়েছে। এবার ফের একবার বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য আওয়াজ তুললেন টলিউড অভিনেত্রী। ঠিক কী ঘটেছে? হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অনতিদূরেই ৪০০ একর জমির গাছ কাটা নিয়ে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি! ওই জমিতে তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তেলেঙ্গানা সরকার। সেই প্রেক্ষিতেই রবিবার থেকে বুলডোজার চালিয়ে গাছ কাটা শুরু হয়। বাদ সাধে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। জমি দখল নিয়ে লাগাতার আন্দোলনে নেমেছিল তাঁরা। পুলিশি ধরপাকড়ের মুখেও পড়তে হয় পড়ুয়াদে। সেসব ধ্বস্তাধ্বস্তির ছবি-ভিডিও নেটপাড়ায় দাবানল গতিতে ভাইরাল। সেই ইস্যুতেই এবার সুর চড়ালেন মিমি চক্রবর্তী। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে অবিলম্বে বনাঞ্চল ধ্বংসের কাজ বন্ধ করার আর্জি জানিয়েছেন অভিনেত্রী।
ইনস্টা স্টোরিতে গাছ কাটার ভিডিও শেয়ার করে মিমি মনে করিয়ে দিলেন, 'এটা মারাত্মক বিপর্যয়। এখনও কেন আমরা বুঝতে পারছি না, কেন? এত বিল্ডিং, কনস্ট্রাকশন কীসের জন্য, যখন নিত্যদিন বাতাস এভাবে বিষিয়ে যাচ্ছে। আমরা সকলে তো ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছি।' শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দরবারেও সাহায্যের আবেদন রেখেছেন মিমি। এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, 'দয়া করে সাহায্য করুন স্যর, ৪০০ একর বন ধ্বংস হচ্ছে, বন্যপ্রাণীরা যন্ত্রণায় ছটফট করছে, কাঁদছে। প্রতিবাদ করার জন্য ছাত্রদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমাদের আপনার সাহায্য দরকার।'
প্রসঙ্গত, রবিবার হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অনতিদূরের জমিতে গাছ কাটা শুরু হতেই ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিয়ে বুলডোজারের উপরে উঠে পড়েন পড়ুয়ারা। পুলিশের সঙ্গেও বচসায় জড়ান একাংশ। বুধবার, তেলেঙ্গানা পুলিশের লাঠিচার্জের কোপে পড়ে হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত পড়ুয়ারা। কার্যত অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। পড়ুয়াদের মতে, ৪০০ একর জমিতে প্রচুর জীববৈচিত্র্য রয়েছে। গাছ কেটে ফেললে তা একেবারে ধ্বংস হয়ে যাবে। তাঁদের সঙ্গী হয় ভাটা ফাউন্ডেশন নামে একটি এনজিও। যৌথভাবে তাদের আবেদন, ওই এলাকাটি বনাঞ্চল হিসাবে ঘোষিত হোক। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনের আওতায় ওই অঞ্চলকে জাতীয় উদ্যান হিসাবে গড়ে তোলা হোক, এমনটাই প্রস্তাব দিয়েছেন পড়ুয়ারা। যদিও তেলেঙ্গানা সরকারের পালটা জবাব, হায়দরাবাদের অনেক জায়গাতেই সাপ, ময়ূর রয়েছে। কিন্তু সবকিছুকে বনাঞ্চল বলা যায় না। এবার সেসব ভিডিও শেয়ার করে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি রাখলেন টলিউড অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী।