রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: করোনা আতঙ্কে আরও কিছুদিন বন্ধ থাকবে দিঘা (Digha) মোহনার আন্তর্জাতিক মাছের বাজার। তাই এমাসের পরিবর্তে ১ জুলাই থেকে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল। তবে তার আগে কোনও মৎস্যজীবী চাইলে সমুদ্র যেতেই পারেন। আর এই সিদ্ধান্তেই জুলাইয়ের শুরুতে পাতে ইলিশ পড়বে বলে আশা করছে খাদ্যরসিক বাঙালি।
করোনা সংক্রমণের ভয়ে কাঁথি মহকুমার উপকূলবর্তী মৎস্য বন্দরগুলিতে সমুদ্রে মাছ ধরা অর্থাৎ ট্রলার-লঞ্চ-নৌকোয় সমুদ্রে নামার ক্ষেত্রে জোরদার বিরোধিতা শুরু করেছিলেন বেশকিছু ট্রলার-লঞ্চ মালিক, মৎস্যজীবী ও সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা। ফলে রাজ্য সরকারের নির্দেশে ৬১ দিন মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়। সেই মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ১৪জুন। ফলে ১৫ জুন থেকে ফের মাছ ধরা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু করোনা সংক্রমনের আতঙ্কে বন্ধ রয়েছে দিঘা মোহনার মাছের বাজার। ফলে মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে নামলেও মাছ বিক্রি নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। পাশাপাশি, সংক্রমণের আতঙ্কে সমুদ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে আপত্তি জানান অনেকেই। তা সত্ত্বেও ট্রলার মালিকদের একাংশ সমু্দ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে সায় দেন। তবে মৎস্যজীবীদের একাংশ সাফ জানিয়ে দেয়, এখন তাঁরা ট্রলার নামাতে রাজি নয়।
শংকরপুর ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন বৈঠক করে আগামী কিছুদিন সমুদ্রে ট্রলার না নামানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কাঁথির শৌলা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন সেই সিদ্ধান্তে সম্মতি দেয়। কাঁথির পেটুয়াঘাট দেশপ্রাণ মৎস্যবন্দরের মৎস্যজীবী ও মৎস্য ব্যবসায়ী ইউনিয়নও তাঁদের পাশে দাঁড়ায়। শুধু তাই নয়, আপাতত দীঘা মোহনা মৎস্য বিপনণ কেন্দ্র যাতে খোলা না হয় এবং মাছ ধরা যাতে শুরু না হয়, সেই আরজি জানিয়ে দিঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের কাছে স্মারকলিপি দেন স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। স্থানীয়দের দাবি, ট্রলার নামলে এবং মাছ স্থানীয় পাইকারি বাজারে এলে বাইরে থেকে আসা ট্রলার কর্মী, মৎস্যজীবী, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বহু মানুষের সমাগম হবে। তখন করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়বে।
[আরও পড়ুন: অনুমতি ছাড়াই ক্যানসার রোগীর ছবি পোস্ট, প্রতিবাদ করে বিজেপি কর্মীদের হাতে ‘প্রহৃত’ যুবক]
এরপরই এই বিষয়ে দফায় দফায় বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, কেউ চাইলে মাছ ধরার জন্যে ট্রলার সমুদ্রে নামাতেই পারেন। কিন্তু দিঘা মোহনার মাছের মূল বিপনণ কেন্দ্র খোলা হবে না। যারা মাছ ধরে আনবেন তাঁরা নিজ উদ্যোগে বাজারে তা বিক্রি করবেন। দিঘা মোহনা মৎস্যজীবী সংগঠনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস জানান, এখন অনেকে ট্রলার প্রস্তুত করতে পারেনি। তাছাড়া করোনা আতঙ্ক রয়েছে। যারা চাইবে ট্রলার সমুদ্রে নামাতে তারা নামাবেন। কিন্তু মোহনা মাছের বাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ১ জুলাই দিঘা মোহনা মাছের বাজার খুলে দেওয়া হবে। এদিন থেকে ট্রলার সমুদ্রে নামতে পারে।
[আরও পড়ুন: ‘চিনা সেনা না ঢুকলে ভারতীয় জওয়ানরা শহিদ হলেন কীভাবে?’, মোদিকে প্রশ্ন মহুয়ার]
The post ইলিশপ্রেমীদের জন্য সুখবর, জুলাইয়ের শুরুতেই গভীর সমুদ্রে পাড়ি দেবেন দিঘার মৎস্যজীবীরা appeared first on Sangbad Pratidin.