রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: আজ দশমী। আকাশে বাতাসে বিষাদের সুর। এবার পালা উমার বিসর্জনের। ফের শুরু অপেক্ষার। দেবী দুর্গার কৈলাসে ফিরে যাওয়ার এই পূণ্যলগ্নে দলের নেতা-কর্মীদের বিজয়ার শুভেচ্ছা জানালেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। খোলা চিঠি লিখলেন তাঁদের উদ্দেশ্যে। এদিন প্রকাশ্যে এসেছে সাংসদের তলোয়ার নিয়ে পুজোর একটি ছবি।
এদিন দিলীপ ঘোষ লেখেন, “বিজেপির রাজ্য সভাপতি হিসেবে সংঘাত ও সফলতার সুপরিচিত যাত্রাপথে বেশ কয়েকটা বছর কেটে গেল। আজ বিজয়া দশমীর পুণ্য দিনে আপনাদের সামনে অব্যক্ত কিছু মনের কথা তুলে ধরাটা প্রাসঙ্গিক মনে হল। বিগত কয়েক বছর যাবৎ আপনারাই আমার ভাই, বোন, বন্ধু, পরিবার। আমার আজও মনে আছে সেদিনের কথা, যেদিন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আমার কাঁধে রাজ্য সভাপতির গুরু দায়িত্ব অর্পণ করেন এবং আপনারা পরম আন্তরিকতার সঙ্গে আমাকে সসম্মানে বরণ করে নিয়েছিলেন। আপ্লুত হয়েছিলাম সেদিন, প্রতিজ্ঞা করেছিলাম সাফল্য অর্জন করে আপনাদের সম্মানিত করব। ঠিক সেদিন থেকেই আমি নিষ্ঠা, একাগ্রতা ও আনুগত্যের সঙ্গে দায়িত্ব নির্বাহ করার প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে গিয়েছি। অতি প্রয়োজন ছাড়া একদণ্ড অবসর নিইনি। আমার ব্যক্তিগত সুযোগ-সুবিধার চেয়েও দলের প্রয়োজনীয়তাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার চেষ্টা করেছি।”
[আরও পড়ুন: পুজোর অনুদানের অর্থ মানব কল্যাণে, ৫০ হাজার টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান হাওড়ার ক্লাবের]
২০১৯ এর নির্বাচনের ফল প্রসঙ্গে বলেন, “২০১৬ সালের নির্বাচনে ১০% জনগণের আশীর্বাদপুষ্ট আমাদের দল ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৪০ শতাংশের উপর মানুষের আশীর্বাদে ধন্য হয়েছে, যা আপনাদের “হার না মানা” জেদ তথা অধ্যাবসায়ের ফলেই সম্ভব হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১৮ জন সাংসদকে জিতিয়ে আনা, আপনাদের ত্যাগ-দায়বদ্ধতার স্বপক্ষেই এক প্রামাণ্য দলিল।” তিনি লেখেন, “২০১৪ সালে সারা দেশের মতো পশ্চিমবঙ্গও যখন মোদি ম্যানিয়ায় আক্রান্ত ছিল তখনও আমরা মাত্র ২ টি লোকসভা আসন জয় করতে সমর্থ হয়েছিলাম, যেখানে শতকরা ভোটার হার ছিল মাত্র ১৭%। ২০১৬ সালে আমার কৰ্মলগ্ন শুরু হয় রাজ্যের তিন প্রান্তের মাত্র তিন বিধায়ক দিয়ে। একটা সময় ছিল যখন বুথ ভিত্তিক কার্যকর্তা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর ছিল। আজ প্রায় সব বুথেই একাধিক কর্মী সক্রিয়, কোনও কোনও বুথে তো কর্মী সংখ্যা শতাধিক।”
এরপরই দৃঢ়তার সঙ্গে তিনি লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির শাসন প্রতিষ্ঠা করতেই হবে, কারণ বাংলার গণতন্ত্র আজ বিপন্ন। শাসকের ক্রমাগত বঞ্চনা-দুর্নীতি-অপশাসনে মানুষ অতিষ্ঠ|” তাঁর কথায়, “সোনার বাংলা গড়তে আমরা রাজ্যবাসীর কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রাজ্য সভাপতি হিসেবে আপনাদের কাছে আবেদন যে, বাংলার স্বার্থে, বাঙালির স্বার্থে আবারও একবার নিজেদের উজাড় করে দিয়ে আমাদের প্রমাণ করে দিতে হবে যে সদিচ্ছা থাকলে যে কোন অসাধ্য সাধন আমাদের কাছে অতি ক্ষুদ্র বিষয়। আমাদের পারদর্শিতা আমরা বারবার প্রমাণ করেছি তা সে লোকসভা ভোটই হোক অথবা পঞ্চায়েত। লক্ষ্য এবার একুশের বিধানসভা, আমাদের সকলকে একজোট হয়ে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে আনতেই হবে। সময় এসেছে যখন আমাদের এক সূত্রে গ্রথিত হয়ে সমবেত কণ্ঠে সংকল্প গ্রহণ করে বলতে হবে যে, ‘করব মোরা লড়ব মোরা সোনার বাংলা গড়ব মোরা’।”