shono
Advertisement

রিওতে বসেও এমএ পরীক্ষার প্রস্তুতি দীপার

দীপা এখন ফিট৷ জিমন্যাস্টিকসের ফাইনালের আগে গোটা দেশের জন্য এটাই যা ভাল খবর৷
Posted: 03:11 PM Aug 12, 2016Updated: 09:41 AM Aug 12, 2016

দীপক পাত্র, রিও ডি জেনেইরো: ২৩ তম জন্মদিন কীভাবে চলে গেল!

Advertisement

লেখক শোভা দে’র কথাগুলো আরও তেতো লাগছিল তখন৷ তিনি জানেন, দীপা কর্মকার গত চার বছর জন্মদিনে বাড়িতে থাকতে পারেনি৷ জানেন কী, গত ১৭ বছরে জিমন্যাস্টিকসের জন্য কত কিছুর সঙ্গে আপস করতে হয়েছে তাঁকে! জানেন কী, ফ্ল্যাট ফুট হওয়ার জন্য দীপাকে সাইয়ের তরফ থেকে বলা হয়েছিল, ‘ও কোনওদিন জিমন্যাস্ট হতে পারবে না৷ আমরা ওর দায়িত্ব নেব না৷’ জানেন কী, একটা সময় জীবন বাজি রেখে ম্যাট্রেস-এর উপরই ভল্ট দিতেন দীপা? তারপর ত্রিপুরা সরকারের তরফে ফোম পিট ব্যবস্থা করা হয়৷ তিনি আরও কত কী জানেন না৷ তবুও টুইট করেন, সমালোচনা করেন৷

রিওতে বসে থাকা ভারতীয় সাংবাদিকদের অনেকে বলছিলেন, “দীপার বাড়ির লোকের সঙ্গে একবার শোভা দে’র কথা বলানো দরকার৷” রাগের কথা নয়৷ তাঁকে উপলব্ধি করানোর জন্য৷ পদক জয়ই শুধু দেখবেন, তার আগের কষ্ট, লড়াই, জীবনযুদ্ধ, এই সব কিছু এড়িয়ে যাবেন?

দীপার মা গৌরী কর্মকার ফোনে বলছিলেন, ‘‘দীর্ঘদিন মেয়েটাকে অন্যের ব্যবহার করা সামগ্রী দিয়ে প্র্যাকটিস করতে হয়েছে৷ ও প্রথম যেটার উপর ভল্ট দিয়েছিল সেটা ভাঙা স্কুটার থেকে তৈরি করা ছিল৷ অনেক কষ্ট করেছে৷’’ এরকম অনেক ভাঙা ভাঙা লড়াই জোড়া লাগিয়েই আগরতলার দীপা রিও ওলিম্পিক জিমন্যাস্টের ফাইনালের সিঁড়ি তৈরি করেছিলেন৷

ত্রিপুরাতে তিনি অনেকদিন আগে থেকেই সেলিব্রিটি৷ শপিং মল, খোলা মাঠ, ছোটবেলার স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠান, দীপা যেখানেই যান এখন ভিড় জমে যায়৷ দীপার বাড়ির লোকরা বলেন, ওকে সবাই ভালবাসে৷ ওর লড়াইকে ভালবাসে৷ ‘সেলিব্রিটি’ তকমাটা নাকি মিডিয়া লাগিয়ে দিয়েছে৷ দীপা কর্মকার ফিরলে বিমানবন্দর থেকে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে একটি হুড খোলা জিপে৷ পদক জিতুন বা নাই জিতুন, তাঁর জন্য ব্যাপক জমায়েত হবে আগরতলা বিমানবন্দরে৷ এসব এখন থেকেই ঠিক হয়ে রয়েছে৷

রিও ওলিম্পিকের ফাইনালের পর আবার ‘নেক্সট টার্গেট’ ঠিক করে রেখেছেন দীপা৷ নাহ, জিমন্যাস্টিকসের কোনও আন্তর্জাতিক ইভেন্ট নয়৷ রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ পরীক্ষা দেবেন দীপা৷ রিও থেকে যেদিন ফিরবেন ঠিক তার পরের দিন পরীক্ষা৷ ফিরে এসেই নাকি বই নিয়ে পড়তে বসে পরবেন তিনি৷ দীপার বাবা দুলাল কর্মকার বলছিলেন, “ওলিম্পিকে যাওয়ার আগে আমাকে বলল, বাবা নোটস সব জোগাড় করে রেখো৷ আমি ফিরে সময় পাব না৷” তাঁদের মেয়ে নাকি এমনই৷ যত সহজে ভল্ট দিয়ে আকাশ ছুঁতে পারেন, ততটা সহজেই ল্যান্ড করতে তাঁর সমস্যা হয় না৷

দেশ থেকে দীপার ফিজিও সাজ্জাদকে তড়িঘড়ি উড়িয়ে আনা হয়েছিল৷ তবে জানা গিয়েছে, দীপা এখন ফিট৷ জিমন্যাস্টিকসের ফাইনালের আগে গোটা দেশের জন্য এটাই যা ভাল খবর৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement