সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: পড়ুয়াদের চাপে ও শারীরিক নিগ্রহের ভয়ে তাদেরই লেখা ইস্তফাপত্রে সাক্ষর করতে বাধ্য হলেন কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এনআইটির ডাইরেক্টর অরবিন্দ চৌবে। ইস্তফার পর একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন উন্মত্ত পড়ুয়া ও পুলিশের উপর। রবিবার দুর্গাপুরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (এনআইটি) হস্টেলে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া অর্পণ ঘোষের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। চিকিৎসক ও ডিরেক্টরের চরম গাফিলতিতেই পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে ডিরেক্টরকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ হয় পড়ুয়াদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় পড়ুয়াদের। একসময় উন্মত্ত পড়ুয়ারা সংস্থার ডিরেক্টর অরবিন্দ চৌবেকে গলা ধাক্কা দিয়ে এনআইটির গেট দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে দেয়। চরম হেনস্তা করা হয় তাঁকে। রাত প্রায় ১০ টা পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি চলে। কিন্তু পুলিশকে ডাকলেও তারা আসেনি বলে অভিযোগ ডিরেক্টর অরবিন্দ চৌবের। এবার শুরু হয় তাণ্ডবের অন্য রুপ। পড়ুয়ারাই সাদা কাগজে ডিরেক্টরের ইস্তফা পত্র লিখে এনে জোর করিয়ে তাতে সই করায় বলে অভিযোগ করেছেন অরবিন্দবাবু। তিনি জানান, "রবিবার রাতে পড়ুয়ারা জোর জবরদস্তি করে তাদের লিখে আনা ইস্তফাপত্রে সই করায়। না করলে মারধর করবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। আমার রুমের দরজা ভেঙে এনআইটির সিল নিয়ে এসে ইস্তফা পত্রে জোর করিয়ে সিল মারায় আমাকে দিয়েই।"
[আরও পড়ুন: পাঁচ মাস চলচ্ছক্তিহীন, চিকিৎসকদের নিরলস পরিশ্রমে সুস্থ জীবনে ফিরলেন ডাক্তারি ছাত্র]
তিনি আরও বলেন, "রেজিস্টারকেও জোর করে নিয়ে গিয়ে ওই ইস্তফাপত্র ইমেল করানো হয় কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকে। আমি নিরুপায় ছিলাম। এই রকম আচরণ আমার কাছে অনভিপ্রেত। মন্ত্রক যা সিদ্ধান্ত নেবে তা মেনে নেব।" তিনি আরও জানান, "ওই ছাত্রের মৃত্যু অত্যন্ত বেদনাদায়ক। গাফিলতি যদি থাকে তা আলোচনা করে মেটানো সম্ভব ছিল। কিন্তু তা করেনি পড়ুয়ারা। ওই অবস্থায় আমি পুলিশকে বারবার বললেও তারা আসেনি। এটা দুর্ভাগ্যজনক।" রবিবারের ঘটনার পর অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে এনআইটিতে। সোমবার আতঙ্কে এনআইটি ক্যাম্পাসে থাকা ঘর থেকেই অফিসের কাজ সেরেছেন ডিরেক্টর অরবিন্দ চৌবে।