ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: দলের সঙ্গে বিরোধ হতে পারে, নেত্রীর সঙ্গে নয়। তাই তো তৃণমূল ছেড়ে চলে যাওয়ার সময়ও সঙ্গে রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ছবি। শুক্রবার বিধানসভায় গিয়ে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর সেখান থেকে বেরনোর সময় দলনেত্রীর বড় একটা ছবি সঙ্গে নিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। তারপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বললেন, ”নেত্রী আমার কাছে মায়ের মতো। সবসময়ে শ্রদ্ধার জায়গায় থাকবেন, আমি আজ বিধানসভা থেকে তাঁর এই ছবি সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছি। সবসময়ে এটা সঙ্গে থাকবে।” একথা বলতে গিয়ে আজ ফের বাষ্পরুদ্ধ হয়ে আসে তাঁর কণ্ঠস্বর। শনিবার নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন, আবেগ সামলে এ কথা জানিয়েই বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যান রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত ২২ তারিখ মন্ত্রী পদে ইস্তফা দেওয়ার সময়েই তৃণমূল নেত্রীর প্রতি তাঁর অভিমান প্রকাশ পেয়েছিল। রাজভবনের গেটে দাঁড়িয়ে কান্নাভেজা গলায় জানিয়েছিলেন, কতটা বাধ্য হয়ে তিনি মন্ত্রিত্বে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, তাঁকে না জানিয়ে দলনেত্রী তাঁর দপ্তর বদল করে দেওয়ার পরই দানা বেঁধেছিল অভিমান। তখনই দলত্যাগের কথা ভেবেছিলেন। বছর খানেক আগে ভাবা কথা এবার বাস্তবায়িত করে ফেললেন ডোমজুড়ের বিধায়ক। দলের সঙ্গে হাজারও বিরোধ থাকলেও, নেত্রীকে তিনি যে কতটা সম্মান করেন, শুক্রবার নেত্রীর ছবি সঙ্গে নিয়ে বিধানসভা থেকে বেরিয়ে গিয়েই তা বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূল ও শাসকশিবিরের একদা ভরসাযোগ্য ব্যক্তি।
[আরও পড়ুন: মন্ত্রিত্বের পর বিধায়ক পদও ছাড়লেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা তুঙ্গে]
বিধানসভা ছেড়ে বেরনোর আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কার্যত কোনও রাখঢাকই করলেন না রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর তিনি মানসিক প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সাতদিন পর বিধায়ক পদ ছাড়লেন। তিনি আবারও রাজনীতির পথে হেঁটেই মানুষের কাজ করবেন, তাও জানালেন। আর এতেই স্পষ্ট হয়ে গেল, তাঁর পরবর্তী গন্তব্য পদ্মশিবির।যদিও তা ভাঙলেন না। বললেন, ”সিদ্ধান্ত জানাব শনিবার।” পাশাপাশি তিনি এতদিন ধরে তৃণমূলে যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বিধানসভার স্পিকারের মুখোমুখি হয়ে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।