সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আলোর জ্যোতি থাকবে, দূষণের ক্ষতি নেই। উৎসবের রোশনাই থাকবে, স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা নেই। উপরি পাওনা, পোকামাকড়ও ধারেকাছে থাকবে না। শহর যখন আলোর অপেরার জন্য তৈরি, তখন পরিবেশবান্ধব মোমবাতি 'পুষ্পা'র কদর বাড়ছে পরিবেশ সচেতন নাগরিকদের মধ্যে।
দীপাবলি মানেই আলোর ঝরনাধারা। তবে আনন্দের আয়োজনের সঙ্গেই থেকে যায় দূষণের আশঙ্কা। অনেকেই, বিশেষত যাঁদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে, তাঁরা এই সময় আশঙ্কায় থাকেন। আনন্দের এই উৎসব ম্লান হয় না যদি আয়োজন হয় পরিবেশবান্ধব। সেই উদ্যোগই নেওয়া হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তরফ থেকে আনা 'পুষ্পা' আবির ইতিমধ্যেই সমাদৃত। দোলের সময় এই পরিবেশবান্ধব আবিরের খোঁজ করেন অনেকেই। একই ভাবে পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই মোমবাতিও তৈরি করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিশেষজ্ঞদের উদ্যোগে। এই মোমবাতি জ্বালানোর ফলে পরিবেশের কোনও ক্ষতি হয় না, স্বাস্থ্যহানিও হয় না।
বিক্রি হচ্ছে মোমবাতি। ছবি: শুভজিৎ মুখোপাধ্যায়
উদ্যোগের কাণ্ডারি অসীম চট্টোপাধ্যায় জানালেন, "ফুলের রং দিয়ে তৈরি আবিরের কথা এখন অনেকেই জানেন। আমাদের রাজ্যে ফুলের যে চাষ হয়, তার ব্যবহার আরও কী কী ভাবে করা যেতে পারে, এরকম ভাবনা থেকে এই উদ্যোগের শুরু। তাতে পরিবেশের উপকার হয়, কৃষকদের সহায়তাও হয়। ফুলের নির্যাস দিয় যেমন আবির তৈরি হয়, সেভাবেই এই মোমবাতি তৈরি হয়েছে। প্রাকৃতিক রং থাকার দরুন কোনও ক্ষতি হয় না। তা ছাড়া নিমপাতা, নিসিন্দার নির্যাসও এতে মিশিয়ে দেওয়া হয়। ফলে কীটপতঙ্গের উৎপাত থেকেও রেহাই মেলে।" আলোর উৎসবে যেন পরিবেশভাবনার কথাও মাথায় থাকে। তাই তাঁর একান্ত আবেদন, সিন্থেটিক রং যে সব মোমবাতিতে আছে তা ব্যবহার না করাই শ্রেয়। বরং সাদা মোমবাতি জ্বালানো যেতে পারে।
ছবি: শুভজিৎ মুখোপাধ্যায়।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ নং গেটের কাছেই মেলে এই মোমবাতি। অনেকেই সে খবর জানেন। তবে অসীমবাবুর মতে, এর বিপণনের জন্য আরও উদ্যোগ নেওয়া উচিত। তাঁর মতে, সরকারের তরফে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলোকে কাজে লাগিয়ে যদি এই মোমবাতির প্রসার ও প্রচারের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে তার থেকে ভালো আর কিছু হয় না। ব্যবস্থা করলে বিদেশেও তা রপ্তানি করা যেতে পারে। উৎসব পরিবেশবান্ধব করে তোলার এই আয়োজনে সকলেই সচেতন সকল মানুষই শামিল হবেন, এমনটাই তাঁর আশা।
ছবি: শুভজিৎ মুখোপাধ্যায়।