সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিনের শুরুর ছবিটা বেশ আশাব্যঞ্জক ছিল। সোমবার সকালে রাজভবনে রাজ্য মন্ত্রিসভার শপথ শেষে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar) এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) একান্তে আলাপচারিতা করতেও দেখা গিয়েছিল। বেশ কিছুক্ষণ তাঁরা পাশাপাশি বসে কথা বলেন। মনে করা হচ্ছিল, মেঘ কেটেছে বোধহয়। গত বুধবার স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠানের দিনই যেভাবে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে নেতিবাচক কথা বলেছিলেন রাজ্যপাল, সেখানেই নতুন সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্বের সূচনা হয়েছিল।
তবে সোমবার ছবিটা বদলে গিয়েছিল। কিন্তু সেই বদল ক্ষণস্থায়ী। মন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরই সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যপাল বেশ তপ্ত বাক্য খরচ করলেন রাজ্য সরকারের উদ্দেশে। নতুন মন্ত্রীদের প্রতি বার্তা দিলেন, ”শপথ নিয়েছেন গণতন্ত্র রক্ষার। এবার সেই কাজই ভালভাবে করুন। করতে না পারলে এই শপথ ব্যর্থ হয়ে যাবে।” তাঁর এমন ‘পরামর্শ’ খুব একটা ভালভাবে গ্রহণ করেননি নতুন মন্ত্রীরা।
[আরও পড়ুন: মমতার মন্ত্রিসভায় নতুনদের ঠাঁই করে দিতে গিয়ে বাদ কয়েকজন প্রাক্তন মন্ত্রী, দেখে নিন তালিকা]
রাজ্যে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে বরাবরই অসন্তোষ প্রকাশ করে এসেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তৃতীয় তৃণমূল সরকারের সঙ্গেও যে রাজভবনের সম্পর্ক এমনই তিতকুটে থেকে যাবে, তার ইঙ্গিত তিনি দিয়েছিলেন গত বুধবারই। মুখ্যমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠানের দিন। তাঁকে পাশে দাঁড় করিয়েই ধনকড় সোচ্চার হয়েছিলেন রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে। তার পালটা জবাবও দিয়েছিলেন মমতা। এরপর আর উভয়ের বাক্যালাপ এগোয়নি। রাজভবন থেকে সোজা বেরিয়ে মমতা চলে গিয়েছিলেন নবান্নে। তবে সোমবার সকালে দু’জনে বেশ কিছুক্ষণ একান্তে কথা বলেন।
তারপরই সাংবাদিক বৈঠক করে ধনকড় নয়া মন্ত্রীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দেওয়ার পর অভিযোগ করেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তাঁকে অন্ধকারে রাখা হচ্ছে। রাজ্য প্রশাসন তাঁকে কোনও রিপোর্ট দিচ্ছে না। এরপর সাংবিধানিক কর্তব্য মেনে অশান্ত এলাকাগুলিতে তিনি নিজে পরিদর্শনে যাবেন বলেও জানান।
[আরও পড়ুন: রাজভবনে শপথ নিলেন মন্ত্রীরা, ৪৩ জনকে নিয়ে শুরু তৃতীয় মমতা সরকারের পথ চলা]
এদিকে, নারদ মামলায় সদ্যই রাজ্যের চার বর্তমান ও প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্তে সবুজ সংকেত দিয়েছেন রাজ্যপাল, এমন একটি খবর শোনা গিয়েছিল। তাঁর এই পদক্ষেপের প্রতিবাদ করেছিলেন মন্ত্রীরা। তবে শুভেন্দু অধিকারী, মদন মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায়দের বিরুদ্ধে তদন্তে তাঁর এই ভূমিকার খবর সর্বৈব মিথ্যা বলে টুইটে জানিয়েছেন ধনকড়। ফলে এ নিয়েও রাজ্যের মন্ত্রীদের সঙ্গে রাজ্যপালের কিছুটা সংঘাত তৈরি হয়েছে।