নন্দন দত্ত, সিউড়ি: চিকিৎসা করতে গিয়ে হাসপাতালে জেলবন্দির হাতে আক্রান্ত বীরভূমের (Birbhum) সিউড়ির এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। কাচের টুকরো, লোহার রড নিয়ে তাঁকে ব্যাপক মারধরের অভিযোগ উঠল ওই বন্দির বিরুদ্ধে। তাঁর মাথায়, ঘাড়ে, চোখে গুরুতর আঘাত হয়েছে। সিউড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের এই ঘটনায় জেল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। এ নিয়ে বেশ উত্তেজনা ছড়িয়েছে সিউড়ি সদর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে।
ঘটনা শুক্রবার রাতের। সিউড়ি (Suri) হাসপাতালের লকআপে ছিল এক বিচারাধীন বন্দি। শুক্রবার তাঁর চিকিৎসা করতে যান মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জিষ্ণু ভট্টাচার্য। অভিযোগ, তিনি লকআপের তালা খোলামাত্রই ওই বন্দি তাঁর দিকে কাচের টুকরো ছোঁড়ে। লোহার রড নিয়ে হামলা করা হয়। লকআপে উত্তেজনা হতেই এক নিরাপত্তারক্ষী ও এক পুলিশকর্মী তাঁকে উদ্ধার করতে যান। তাঁদের উপরও কাচ, লোহা দিয়ে হামলা চলে বলে অভিযোগ। তাঁরাও অল্পবিস্তর আহত হন। পরে অবশ্য ওই বন্দিকে ফের লকআপে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর পরিস্থিতি খানিকটা সামলে আক্রান্ত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জিষ্ণু ভট্টাচার্য জানান, ”আমি সেলের তালা খুলতেই আমার দিকে লোহা, কাচ নিয়ে তেড়ে আসে ওই বন্দি। আমার ধারণা, ও মাদকাসক্ত। কিন্তু হাসপাতালের পুলিশ লকআপে এই কাচ, লোহা কোথা থেকে এল, সেটাই বড় প্রশ্ন।”
[আরও পড়ুন: দিলীপ ঘোষকে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ, অনুব্রত মণ্ডলকে আইনি নোটিস পাঠাল বিজেপি]
হাসপাতাল চত্বরে বন্দির চিকিৎসা করতে গিয়ে এভাবে হামলার মুখে পড়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে চিকিৎসক সংগঠন IMA। তাঁরা সকলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পাশে দাঁড়িয়ে হাসপাতালকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন। এদিকে, সিউড়ি সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সুপার শোভন দে জানিয়েছেন, হাসপাতালের ওই ওয়ার্ডটি দেখভালের দায়িত্ব জেল কর্তৃপক্ষের। তাদের বিস্তারিত ঘটনা জানানো হয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ নেন, তার অপেক্ষায় রয়েছে হাসপাতাল। প্রয়োজনে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগ কিংবা পুলিশ হয়ত ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু হাসপাতালের লকআপে কীভাবে কাচ, লোহার মতো অস্ত্র এল, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে বন্দিদের হাতে চিকিৎসদের নিরাপত্তা নিয়েও।