রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: রোগী দেখছিলেন ডাক্তারবাবু। তার মাঝেই একটি ফোন আসে ডাক্তার বাবুর কাছে। তৎক্ষণাৎ রোগী দেখা বন্ধ করে বাড়ির পথে রওনা দেন তিনি। মুহূর্তে নদিয়ার করিমপুর বাজার এলাকায় রটে যায়, ডাক্তারবাবু নিজে করোনা পজিটিভ (Coronavirus)। সেই রিপোর্টের কথা জেনেই তিনি রোগী দেখা ছেড়ে চলে গেলেন। ফলে এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই চিকিৎসক আবার শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। বহু শিশুর চিকিৎসা করেছেন ইতিমধ্যে। তাঁর থেকে শিশুদের শরীরে ছড়িয়ে পড়েনি তো করোনা সংক্রমণ? এই চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকরা। কেন করোনা পরীক্ষার পর রিপোর্ট হাতে না পেয়েই চিকিৎসা করতে এলেন ডাক্তারবাবু? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তাঁর দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ নিয়ে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, করিমপুর বাজার সংলগ্ন একটি ওষুধের দোকানের পাশে একটি চেম্বারে বেশ কয়েক বছর ধরে প্রত্যেক সপ্তাহের রবিবার রোগী দেখেন এই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। বেশ নামী তিনি। মার্চে লকডাউন শুরু হওয়ার পর বেশ কিছুদিন তিনি করিমপুরে এসে রোগী দেখা বন্ধ রেখেছিলেন। কিন্তু আনলক পর্বে এলাকার রোগীদের আবেদনে ফের জুন থেকে করিমপুরের ওই চেম্বারটিতে এসে রোগী দেখা শুরু করেন।
[আরও পড়ুন: ৫ আগস্ট রাম মন্দিরের ভূমি পুজো, হুগলির ত্রিবেণী সঙ্গম থেকে পবিত্র জল গেল অযোধ্যায়]
আজ, রবিবারও তিনি গিয়েছিলেন সেখানে। পরপর সাতজনকে দেখার পর আট নম্বর রোগী দেখার সময় ওনার কাছে একটি ফোন আসে। দু’একটি কথা বলার পর তৎক্ষণাৎ তিনি রোগী দেখা ছেড়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। এরপর যা বোঝার, বুঝে যান সকলে। এলাকায় রটে যায়, করোনা পজিটিভ ডাক্তারবাবু রোগী দেখছিলেন। একজন নামী চিকিৎসক হয়ে লালারসের নমুনা দেবার পর রিপোর্ট না দেখে কেন উনি রোগী দেখতে শুরু করলেন? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
চিকিৎসকের চেম্বারের দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি জানান, নামী চিকিৎসক হওয়ায় প্রত্যেক সপ্তাহে ওনাকে দেখানোর জন্য প্রচন্ড ভিড় হয়, একদিন আগে নাম লিখে রাখতে হয়। প্রত্যেক সপ্তাহে তিনি যেভাবে আসতেন এদিনও সেইভাবে এসেছিলেন। এরপর তাঁকে ফোনে জানানো হয় যে তাঁর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তারপরে উনি চেম্বার ছেড়ে বারাকপুরের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।
[আরও পড়ুন: করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ফের রাজ্যে আসছে কেন্দ্রের প্রতিনিধি দল]
ঘটনার খবর পেয়ে করিমপুর ১ ব্লকের বিডিও অনুপম চক্রবর্তী ঘটনাস্থলে এসে তাঁর চেম্বারের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের তা সঙ্গে সঙ্গে স্যানিটাইজ (Sanitize) করার নির্দেশ দেন। বিডিও বলেন, ”ডাক্তারবাবুর সঙ্গে আমি যোগাযোগ করে ওনার কাগজপত্র পাঠাতে বলেছি। যে সমস্ত রোগীদের উনি দেখেছেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সকলেরই লালারসে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে পাঠানো হবে।” করোনা আক্রান্ত চিকিৎসকে প্রতিক্রিয়া, শরীরে কোনও উপসর্গ না থাকায় আবেগবশত তিনি করিমপুরের চেম্বারে চিকিৎসা করতে আসেন। এর জন্য তিনি ভীষণ অনুতপ্ত বলেও জানান।
The post নিজেই করোনা পজিটিভ! রোগী দেখার মাঝে জানতে পেরে দৌড় চিকিৎসকের appeared first on Sangbad Pratidin.