রাজা দাস, বালুরঘাট: ঝুঁকিপূর্ণ এবং জটিল অস্ত্রোপচার। সেই ঝুঁকি নিয়েই সফলভাবে কনজয়েন্ড টুইনস (Conjoined twins) অর্থাৎ নাভির সঙ্গে জোড়া যমজ সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখালেন দক্ষিণ দিনাজপুরের (South Dinajpur) চিকিৎসক। লাখের একটি এ ধরনের ঘটনা ঘটে বলে জানাচ্ছেন তিনি। বালুরঘাট সদর হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ তথা প্রসবকারী চিকিৎসক রঞ্জন কুমার মুস্তাফির এই অনন্য কীর্তিতে বিস্মিত সকলে। বালুরঘাট হাসপাতাল তো বটেই, গোটা উত্তরবঙ্গেই এ ধরনের কনজয়েন্ড টুইনস প্রসবের মতো ঘটনা এর আগে হয়নি বলে জানা যাচ্ছে।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রসব বেদনা নিয়ে বালুরঘাট (Balurghat) সদর হাসপাতালে ভরতি করনো হয় কুমারগঞ্জ ব্লকের অন্তর্গত বিশ্বনাথপুরের বাসিন্দা জয়া দাস মণ্ডলকে। স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ রঞ্জন কুমার মুস্তাফির অধীনে ভরতি হওয়া বছর তেত্রিশের ওই গর্ভবতীর শরীর থেকে তুলনামূলক বড় ছিল গর্ভ। সন্দেহ হওয়ায় চিকিৎসক ইউএসজি (USG) করান। সেখানে দেখা যায়, গর্ভে রয়েছে দু’টি যমজ সন্তান। তাদের নাভি নিচে জোড়া রয়েছে মায়ের নাভির সঙ্গে। এদের বলা হয় কনজয়েন্ড টুইনস। তেমন দেখেও ডাক্তার মুস্তাফি অন্যত্র রেফার করেননি। সব দিক বিবেচনা করে ঝুঁকি নিয়ে সফল অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক। মা ও দুই শিশু এখন ভাল রয়েছে বলে খবর হাসপাতাল সূত্রে।
[আরও পড়ুন: ‘আমি নমাজ পড়ি না, ইফতারে গেলে আপত্তি কোথায়?’, নাম না করে বিজেপিকে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর]
চিকিৎসক রঞ্জন কুমার মুস্তাফি বলেন, ”ওই মহিলার আগে দুটি সন্তান হয়েছে। এটি তৃতীয়বার। কনজয়েন্ড টুইনস বেবি ক্ষেত্রে প্রসব করা হয় সাধারণত মেডিক্যাল কলেজে। একটি পুরো টিম লাগে এর জন্য। এতে শিশু কিংবা মায়ের মৃত্যুর আশঙ্কা থেকে যায় প্রসবের সময়। সাধারণ যমজের ক্ষেত্রে একটি একটি করে বাচ্চা বের করা হয়। কিন্ত কনজয়েন্ড টুইনস হওয়ায় দরুণ দুটি বাচ্চাকে একসঙ্গে বের করতে হবে। এতে জরায়ু এবং অন্যান্য অঙ্গ ক্ষতি হতে পারে। এই অস্ত্রোপচারের সময় অনেক রক্তের প্রয়োজন। কিন্ত বাইরে ফেরার করাও যেত না এই রোগীকে। সব দিক বিবেচনা করে নার্সিং কর্মী দিয়ে একাই এই অস্ত্রোপচার করি।”
[আরও পড়ুন: ১০০ দিনের কাজে বকেয়া ৭ হাজার কোটি টাকা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক তৃণমূল সাংসদদের]
হাসপাতাল সূত্রে খবর, মা জয়াদেবী ভাল আছেন। তাঁকে সাধারণ ওয়ার্ডেই রাখা হয়েছে।সদ্যোজাতদের SNCU-তে রাখা হয়েছে। তারাও ভাল আছে। নাভির যুক্ত অংশ ছাড়াতে এখন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ দেখবেন। প্রসবকারী জয়াদেবীর দাদা অলোক দাস জানান, মা ও সন্তান ভাল রয়েছে চিকিৎসকের হাতযশে। পাশাপাশি এখানে সুপার স্পেশ্যালিটি পরিকাঠামো যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।