shono
Advertisement

মেহেন্দি হাতেই অস্ত্রোপচার, রোগীর প্রাণ বাঁচিয়ে দাম্পত্যের ইনিংস শুরু সার্জনের

নাকতলার কনের কাণ্ডে আপ্লুত সকলে।
Posted: 02:09 PM Oct 10, 2021Updated: 02:09 PM Oct 10, 2021

অভিরূপ দাস: মাত্র ঘণ্টা দুয়েক পরে মালাবদল। নতুন জীবনে প্রবেশ। বিয়ের মণ্ডপে যাওয়ার আগে কনের গাড়ি ছুটল অন্য রুটে। কোনও বিউটি পার্লার নয়। গন্তব্য ছিল হাসপাতাল। মেহেন্দি লাগানো হাতে উঠল ছুরি, কাঁচি, ফরসেপ। নতুন জীবনে প্রবেশের আগে হবু কনের হাতে নতুন জীবন পেলেন অর্ণব মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

চতুর্থীর সকালে সার্জন (Sergeon) ডা. প্রিয়াঙ্কা সাহার কাণ্ডে তাক লেগে গিয়েছে অনেকেরই। এহেন কাণ্ড দেখে সহকারী চিকিৎসকরা বলছেন, গিরিনন্দিনী উমা তো শুধু মণ্ডপে নেই। মূর্তির বাইরে চারপাশেও তো ছড়িয়ে মা দুর্গা। ফি দিন দু’হাতে যাঁরা দশ রকম কাজ সামলে দিচ্ছেন। অলিগলি থেকে রাজপথ, বাস-ট্রাম-ট্রেন-ট্যাক্সি, পাশের বাড়ি, পাড়ার মোড়, অফিস, বাড়ির রান্নাঘর এমন মেয়েদের দেখা মেলে। এবার দেখা গেল রানিকুঠি লায়ন্স হাসপাতালে।

[আরও পড়ুন: কলেজিয়ামের সুপারিশে ছাড়পত্র, নতুন প্রধান বিচারপতি পেল কলকাতা হাই কোর্ট]

সেখানেই ভরতি ছিলেন যন্ত্রশিল্পী অর্ণব মুখোপাধ্যায়। বছর চল্লিশের অর্ণবের পেটে পেল্লায় এক টিউমার। আকারে ফুটবলের মতো। চিকিৎসা পরিভাষায় যার নাম রেট্রোপেরিটোনাল সারকোমা। পেটের এই টিউমারের সমস্যা নিয়ে প্রথমে চিকিৎসক দীপঙ্কর সরকারকে দেখান অর্ণব। প্রকাণ্ড ওই টিউমার পেট কেটে বের করা সহজ ছিল না। দীপঙ্কর সরকার অর্ণবকে রেফার করেন ডা. মাখনলাল সাহার কাছে। এসএসকেএম হাসপাতালের অস্ত্রোপচারের বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান, দক্ষ শল্য চিকিৎসক। তাঁর কথায়, “প্রথমটায় উনি ধরতে পারেননি। পেটটা ভার ভার থাকত। সব সময় বমি বমি ভাব। শেষ তিন-চার মাস ধরে সাংঘাতিক অবস্থা।”

অস্ত্রোপচার ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। অস্ত্রোপচারের আগে রোগীর কাউন্সেলিং হয়। রোগী রাজি হতেই প্রস্তুতি শুরু। বাবা অস্ত্রোপচারে নামছে। হোক না বিয়ের সকাল! মেয়ের আবদার ছিল, “আমিও অস্ত্রোপচারে সাহায্য করব।” ডা. মাখনলাল সাহা মেয়েকে বলেন, “তোমায় আসতে হবে না।” কিন্তু নাছোড়বান্দা হবু কনেকে আটকানো যায়নি। দীর্ঘ অস্ত্রোপচারের পর পেট কেটে বের করা হয়েছে ১০ কেজি ওজনের টিউমারটি। সম্পূর্ণ অস্ত্রোপচারে অ্যানাস্থেটিস্ট ছিলেন ডা. পারমিতা।

[আরও পড়ুন: সপ্তমীর দিন পাহাড় সমস্যা নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক কেন্দ্রের, ডাক পেলেন না গুরুং, বিনয় তামাং]

অস্ত্রোপচার শেষে দক্ষিণ কলকাতার নাকতলার কনের গাড়ি ছুটেছে বাইপাসের ধারের অভিজাত হোটেলের পথে। সেখানেই বিয়ের মণ্ডপ। চিকিৎসক মাখনলাল সাহা জানিয়েছেন, প্রতিটি মেয়েই দশভুজা, অবলীলায় যাঁরা সামলাচ্ছেন সংসার থেকে কর্মক্ষেত্র।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement