ধীমান রায়, কাটোয়া: মাস তিনেক ধরে পেট অস্বাভাবিক ভাবে ফুলতে শুরু করেছিল। পাশাপাশি ঘন ঘন বমিও হচ্ছিল। পরিবারের লোকজন ভেবেই নিয়েছিলেন, বছর তিরিশের বধূ আবারও সন্তানের জন্ম দিতে চলেছেন। কিন্তু না, ওই মহিলা অন্তঃসত্ত্বা হননি। পরীক্ষা করে জানা গেল, আসলে তাঁর পেটে রয়েছে একটি ১০ কেজি ওজনের টিউমার। শেষ পর্যন্ত কাটোয়া (Katwa) মহকুমা হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডাঃ প্রদীপ করণ অস্ত্রোপচার করে তা বের করেন। আপাতত সুস্থই আছেন ওই গৃহবধূ। আগামী দু, তিনদিনের মধ্যেই তিনি বাড়ি ফিরবেন। অপারেশন সফল হওয়ায় স্বস্তিতে তাঁর পরিবার।
জানা গিয়েছে, নদিয়া (Nadia) জেলার কালীগঞ্জ থানার নসিপুরে বাড়ি খোসনেহার বিবির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তবে সম্প্রতি তাঁর পেট ফুলে উঠছিল প্রায় গর্ভবতীর মতো। সঙ্গে বমি। বাড়ির লোক প্রথমে ভেবেছিলেন যে তিনি ফের অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন। এরপর তাঁরা এক শল্য বিশেষজ্ঞকে দেখান। এই প্রসঙ্গে গৃহবধূর শাশুড়ি নইমা বিবি বলেন, ‘‘তিন মাস ধরে খেয়াল করি, আমার বউমার পেট ফুলতে শুরু করেছে। প্রথমে ভাবি, আবার হয়ত নাতিপুতি হবে। বউমা বারবার বমি করত। কিছু খেলেই বমি হয়ে যেত। তারপর দিন পাঁচেক আগে কাটোয়ায় একজন সার্জেনকে দেখাতে নিয়ে যাই।’’
[আরও পড়ুন: দলীয় কোন্দলের মুখে মহুয়া মৈত্র, মেজাজ হারিয়ে কর্মীদের গালিগালাজ করলেন তৃণমূল সাংসদ]
এদিকে, ওই শল্যবিশেষজ্ঞ আবার রোগীকে পরীক্ষা করার পর একজন স্ত্রী ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞকে দেখাতে বলেন। তারপরই কাটোয়া হাসপাতালের ডাক্তার প্রদীপ করণের কাছে ওই বধূকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষা করার পর ১০ কেজি ওজনের টিউমারটির কথা জানা যায়। এরপর কাটোয়া শহরের টেলিফোন ময়দান এলাকায় একটি সাধারণ বেসরকারি নার্সিংহোমে এই অস্ত্রোপচার করেন প্রদীপ করণ।
[আরও পড়ুন: ‘তৃণমূল নেতারাই ক্ষতি করছে দলের’, এবার বেসুরো উদয়ন গুহ, তুঙ্গে দলবদলের জল্পনা]
এ নিয়ে ডাঃ প্রদীপ করণ বলেন, ‘‘রোগীর একাধিক পরীক্ষা করার পর বোঝা যায়, পেটের ভেতর টিউমার রয়েছে। আমি তাকে হাসপাতলে ভরতি হতে পরামর্শ দিই। কিন্তু পরিবারের লোকজন নার্সিংহোমে ভরতি করেন। এরপর সেখানেই অস্ত্রোপচার করা হয় তাঁর। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। তবে এত বড় টিউমার আমার চিকিৎসক জীবনে দেখিনি।’’ বর্তমানে ওই গৃহবধূ সুস্থ। শনিবার রাতে অস্ত্রপচারের পর এখনও ওই নার্সিংহোমেই ভরতি রয়েছেন তিনি। তবে তাঁকে দিন তিনেকের মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হবে বলেও জানান প্রদীপবাবু।