সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে নিজেদের মধ্যেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন চিকিৎসকরা। এই ঘটনা খাস কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনার অভিঘাতে মাথা হেঁট চিকিৎসা সমাজের। তাদের বক্তব্য, এই যদি চিকিৎসকদের ব্যবহার হয়, কোন ভরসায় তারা হাসপাতালে আসবেন!
বীরভূমের এক বাসিন্দা দিন কয়েক আগে সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে হাত ভাঙেন। তাঁকে নিয়ে আসা হয় কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (RG Kar Medical College & Hospital)। গত শুক্রবার সন্ধেয় অর্থোপেডিকের তিন নম্বর ইউনিটে তাঁর অস্ত্রোপচার শুরু হয়। রোগীর বাঁ-হাত সাময়িক অসাড় করে, চোখ ঢেকে অস্ত্রোপচার হচ্ছিল। হঠাৎই এক চিকিৎসক তাঁর সহকর্মীকে বলে ওঠেন, “ওখানে ২২ ও ২৪ নম্বর স্ক্রু লাগবে। তুই ১৬ আর ১৮ নম্বর স্ক্রু দিলি কেন?” এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা শুরু হয়ে যায়। পাশ থেকে আরেক চিকিৎসক বলে দেন, “যা হয়েছে, হয়েছে। ওখানে ২০ নম্বর স্ক্রু লাগিয়ে দে।” এই বাদানুবাদই হাতাহাতিতে পৌঁছে যায়।
[আরও পড়ুন: মোদির জনসভার অনুমতি খারিজ মেঘালয়ে, ‘প্রধানমন্ত্রীকে রোখা যাবে না’, পালটা হুঙ্কার BJP’র]
এদিকে রোগীর সামনেই এ সমস্ত ঘটনা ঘটছিল। তিনি দেখতে না পেলেও গোটাটাই শুনতে পান। ফলে অস্ত্রোপচারের পর তিনি রীতিমতো আতঙ্কিত! ভয়ে কথা সরছিল না তাঁর। রোগীর কথায়, “এ হাসপাতাল না অন্য কিছু! এমনটাও হয়! একই ভাঙা হাড়ে দু’ধরনের স্ত্রু লাগালে রোগীর জীবনের ক্ষেত্রে তা কতটা মারাত্মক হতে পারে, সেই প্রাথমিক জ্ঞানটুকুও কি নেই?” যদিও এ বিষয়ে মুখ খুলতে চায়নি আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে সরব হয়েছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের বক্তব্য, এ কেমন চিকিৎসক, যে আগে থেকে এক্স-রে করে আঘাতের চিহ্ন নির্ধারণের পরও ভুল করে? আর ভুল যদি বা করেলন, তা শোধরাতে আরেক চিকিৎসক তাঁর সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন কী করে!
খবর পৌঁছেছে স্বাস্থ্যভবনেও। সোমবার স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা হাসপাতাল ঘুরে আসেন। যদিও তাঁরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে ওই দুই সিনিয়র রেসিডেন্ট যে কড়া শআস্তির মুখে পড়বেন, তার ইঙ্গিত মিলেছে। আর জি করের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক ডা. সুদীপ্ত রায়ের কথায়, “প্রশাসনিক ভাবে হাসপাতালের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। এমন ভুলে কোনও অজুহাতই কাজ করবে না।” স্বাস্থ্যভবনের অভিমত, সাম্প্রতিক অতীতে কোনও হাসপাতালে রোগীর সামনে চিকিৎসকদের মধ্যে এমন হাতাহাতি হয়নি বা প্রকাশ্যেও আসেনি।