স্টাফ রিপোর্টার: চায়ের স্বাদ পরীক্ষক, সহজ কথায় ‘টি টেস্টার’ হিসাবে কেরিয়ার শুরু করে পরবর্তীতে বাংলার মানুষকে চা-পানের নতুন ঠিকানা দিয়েছিলেন তিনি। ঢাকুরিয়ার দক্ষিণাপণ শপিং মলে খুলেছিলেন বাঙালির শৌখিন চা-আস্বাদনের সেন্টার। নিজের নামেই নাম দিয়েছিলেন তার–‘ডলি’স টি’। কলকাতার শিল্প-সংস্কৃতি জগতের খুব কম মানুষই আছেন, যাঁরা তাঁর ঠিকানায় চায়ের স্বাদ নিতে আসেননি। বাংলার চায়ের ইতিহাসে স্বতন্ত্র জায়গা করে নেওয়া সেই ব্যক্তিত্ব ডলি রায়। সাংসদ-অধ্যাপক সৌগত রায়ের স্ত্রী। দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। চিকিৎসায় অনেকটাই সুস্থ ছিলেন। বছর দেড়েক আগে তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। দিনকয়েক আগে তাঁকে বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই শুক্রবার সকাল সাড়ে ন’টায় প্রয়াত হন তিনি। তাঁর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ডলি রায়ের শেষকৃত্য়ে এদিন কেওড়াতলা মহাশ্মশানে হাজির হয়ে মরদেহে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান অভিষেক।
[আরও পড়ুন: ‘NRC করতে দেব না, ভেদাভেদের রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই চলবে’, রেড রোড থেকে হুঙ্কার মমতার ]
প্রয়াতর পরিবারকে গভীর সমবেদনা জানিয়ে শোকবার্তায় মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘ডলি রায়ের মৃত্য়ুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। এই কঠিন সময়ে আমি সৌগত রায় এবং তাঁর পরিবারের পাশে রয়েছি। এবং তাঁর জন্য প্রার্থনা করছি। ডলি একজন চূড়ান্ত সফল নারী ছিলেন। আপন কৃতিত্বে তিনি তাঁর কর্মক্ষেত্রে শীর্ষে আরোহণ করেছিলেন। তাঁর সামাজিক শিষ্টাচার ও যোগাযোগ ছিল বিখ্যাত, সমাজের নানা স্তরে বন্ধুত্ব ও যোগাযোগ ছিল প্রবাদপ্রতিম। সৌগতদা আর ডলি বউদির উপস্থিতিতে উজ্জ্বল হত বহু সভা।’’
সৌগত-পত্নীর প্রয়াণের খবর পেয়েই সকালে হাসপাতালে পৌঁছে যান কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী সুজিত বসু, বিধায়ক তাপস রায়, নির্মল ঘোষ-সহ দমদম সংসদীয় এলাকার বহু পুর-প্রতিনিধি ও তৃণমূল নেতৃত্ব। দুপুরে মরদেহ নিয়ে আসা হয় দক্ষিণাপণে ‘ডলিস টি’ শপে। কান্নায় ভেঙে পড়েন দীর্ঘদিনের সহকর্মী থেকে শুরু করে দক্ষিণাপণের ব্যবসায়ী ও কর্মীরাও। এরপর লেক গার্ডেন্সের বাড়িতে নিয়ে এলে সেখানে প্রয়াতর মরদেহে শ্রদ্ধা জানান মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়, বিধায়ক দেবাশিস কুমার, প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়, মেয়র পারিষদ বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, স্থানীয় কাউন্সিলর মৌসুমি দাস, বরানগরের পুরপ্রধান অপর্ণা মৌলিক প্রমুখ। কেওড়াতলা শ্মশানে শেষকৃত্যে সাংসদ অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ছাড়াও ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, সাংসদ মালা রায়, বিধায়ক অশোক দেব, মেয়র পারিষদ সন্দীপরঞ্জন বক্সি, তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, বরো চেয়ারপার্সন চৈতালি চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।