সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বাধীনতা রক্ষায় জনগণের আস্থা নির্ভর করে বিচারব্যবস্থার উপরে। মুম্বইয়ে (Mumbai) এক স্মারক বক্তৃতায় এমনটাই জানালেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় (DY Chandrachud)। সেই সঙ্গে এদেশে প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলি সমাজের দুর্বল অংশের উপরে যে ভাবে কর্তৃত্ব ফলায়, তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।
শনিবার মুম্বইয়ে অশোক দেসাই স্মারক বক্তৃতা দেন তিনি। যার বিষয় ছিল ‘আইন এবং নৈতিকতা: সীমা এবং সার্থকতা’। সেই বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি মনে করিয়ে দেন, ”এমনকী আমনাদের সংবিধানের পরিকাঠামো নির্মাণের পরও আইনকে পর্যাপ্ত নৈতিকতা আরোপ করতে হয়েছে। যা আসলে প্রভাবশালী সম্প্রদায়ের নৈতিকতা। আমাদের গণতান্ত্রিক সংসদীয় ব্যবস্থায় আইন পাশ হয় সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটের ভিত্তিতে। অর্থাৎ জনগণের নৈতিকতা সংক্রান্ত আলোচনা সেই আইনটিই প্রণয়ন করে যা সংখ্যাগরিষ্ঠরা বলছে।”
[আরও পড়ুন: লগ্নে শনি, বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে মেসির রাশি ঘেঁটে দুশ্চিন্তায় জ্যোতিষীরা]
প্রধান বিচারপতির এহেন মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। বিশেষত, যখন উত্তরপ্রদেশ ও কর্ণাটকের মতো রাজ্যে বিয়ের জন্য ধর্ম পরিবর্তন নিয়ে কড়া আইন আনা হচ্ছে। লাভ জেহাদ সংক্রান্ত আইন নিয়ে ইতিমধ্যেই বহু বিশেষজ্ঞ তাঁদের ক্ষোভ জানিয়েছেন। এদিন প্রধান বিচারপতি আইন ও নৈতিকতা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেন, আইন বাহ্যিক সম্পর্কে কথা বলে ও সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু নৈতিকতা একান্তই অভ্যন্তরীণ বিষয়। যা বিবেকের উপর নির্ভরশীল।
সেই কারণেই সকলের নৈতিকতা সমান নয় বলে জানিয়ে দেন তিনি। আর এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই কার্যত রাষ্ট্রীয় দমনপীড়ন প্রসঙ্গও উঠে আসে প্রধান বিচারপতির মুখে। তিনি বলেন, ”নৈতিকতা রক্ষার আড়ালে রাষ্ট্র আইনের দমনমূলক ক্ষমতা ব্যবহার করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে আটকানোর চেষ্টা করেছে, যা সাংবিধানিক সূত্রে পাওয়া নিশ্চিত অধিকার। আর এর ফলেই আইনের অধীনস্থ সমাজেও আমরা দেখতে পাই কীভাবে নৈতিকতা আইনের ব্যাখ্যা ও প্রয়োগকে নিয়ন্ত্রণ করে।”