সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গ্যাংস্টার আবু সালেমের (Abu Salem) মুক্তি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ল কেন্দ্র। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য আবু সালেম মামলায় কেন্দ্রের অবস্থান ‘অপরিণত’। তাছাড়া কেন্দ্র যেভাবে সুপ্রিম কোর্টকে এই মামলা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে জোর করছে, তা নিয়েও তীব্র আপত্তি জানিয়েছে শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ।
বিচারপতি এসকে কৌল (SK Kaul) এবং এমএম সুন্দ্রেশের ডিভিশন বেঞ্চ এদিন কেন্দ্রকে সাফ জানিয়ে দেয়, “বিচারব্যবস্থাকে জ্ঞান দেবেন না। যেটা আপনাদের ঠিক করার কথা, সেটা আমাদের ঠিক করতে বললে আমরা সেটা ভালভাবে নিই না।” বিচারপতি এসকে কৌল সাফ জানিয়ে দেন, “সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) কী করা উচিত, সেটা স্বরাষ্ট্রসচিব বলতে পারেন না।”
[আরও পড়ুন: ‘আমরা বুলডোজ চাই না, চাই বিশ্বাস’, বাণিজ্য সম্মেলনে ঐক্যের বার্তা মমতার]
১৯৯৩ মুম্বই হামলার (Mumbai Blast 1993) এবং গুলশন কুমার হত্যা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত কুখ্যাত গ্যাংস্টার আবু সালেম। মুম্বই হামলার পর পর্তুগালে পালিয়ে যায় সে। ২০০৫ সালে পর্তুগাল থেকে ভারতে প্রত্যর্পণ করা হয়েছিল তাকে। বিভিন্ন অভিযোগে আজীবন কারাবাসের সাজা পেয়েছে এই কুখ্যাত গ্যাংস্টার। কিন্তু সমস্যা হল পর্তুগালে সালেমের প্রত্যর্পণ মামলা চলাকালীন তৎকালীন উপপ্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আডবানী (LK Advani) পর্তুগালের আদালতে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছিলেন, সালেমকে ২৫ বছরের বেশি জেলে রাখা হবে না বা মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে না। সেই ২৫ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০৩০ সালে।
সালেম অবশ্য আগে থেকেই আডবানীর সেই প্রতিশ্রুতিকে হাতিয়ার করে জেলমুক্তির আবেদন করেছে। এ বিষয়েই শীর্ষ আদালত কেন্দ্রের মত জানতে চেয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক শীর্ষ আদালতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি। উলটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক শীর্ষ আদালতে দেওয়া হলফনামায় জানিয়েছে, “এটা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সঠিক সময় নয়। সুপ্রিম কোর্ট চাইলে নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে।” এখানেই আপত্তি জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। ডিভিশন বেঞ্চের বক্তব্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক (Home Ministry) যেভাবে হলফনামায় ‘সুপ্রিম কোর্ট চাইলে সিদ্ধান্ত নিতে পারে’ বলেছে, সেটা আমরা পছন্দ করছি না।”
[আরও পড়ুন: ‘মাত্র দু’দিনে ৩ লক্ষ ৪২ হাজার কোটিরও বেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব’, বাণিজ্য সম্মেলনে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
প্রসঙ্গত, ১৯৯৩-এর ধারাবাহিক বিস্ফোরণে রক্তাক্ত হয়েছিল বাণিজ্যনগরী। প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ২৫৭ জন নিরীহ মানুষ, আহত হন ৭১৩ জন। জানা যায়, ওই নৃশংস হামলার পিছনে হাত ছিল দাউদ ইব্রাহিম (Dawood Ibrahim) ওরফে ‘ডি কোম্পানি’র। ওই বিস্ফোরণের তদন্তের পর দাউদ, আবু সালেম থেকে শুরু করে বলিউড তারকা সঞ্জয় দত্ত-সহ অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রুজু হয়। ‘টেররিস্ট অ্যান্ড ডিসরাপটিভ অ্যাকটিভিটিস’ বা টাডা আদালত আবু সালেম-সহ, মুস্তাফা দোসা, ফিরোজ খান, রিয়াজ সিদ্দিকি, করিমুল্লাহ শেখ, মহম্মদ তাহির মার্চেন্ট ওরফে তাহির টাকলেয়া ও আবদুল কায়্যুম-সহ মোট ১০০ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। সেই মামলাতেই সালেম আজীবন কারাবাস হয়েছে।