shono
Advertisement

বাংলা সিনেমার ভালো হোক, আলো হোক, ‘বনবিবি’র হাত ধরেই শুরু হল ‘দুয়ারে সিনেমা’ আন্দোলন

'বনবিবি' টিমের সুন্দরবন সফরের অনবদ্য অভিজ্ঞতা সংবাদ প্রতিদিন ডট ইন-এর পাতায়।
Posted: 08:38 PM Feb 29, 2024Updated: 09:33 PM Feb 29, 2024

সন্দীপ্তা ভঞ্জ: ‘বাংলা সিনেমার পাশে দাঁড়ান’, সিনে ইন্ডাস্ট্রির সর্বত্রই এমন কাতর আর্তি। ব্যতিক্রমও অবশ্য আছে বইকী! তারকাদের মুখে প্রায়শই শোনা যায়- “বাংলাকে বাঁচাতে হলে, বাঙালিকে বাঁচাতে হলে, বাংলা সিনেমাকে বাঁচাতেই হবে।” আলবাৎ! কিন্তু সিনেমা হলেরই যেখানে অভাব, সেখানে ‘বাংলা সিনেমার পাশে দাঁড়ানো’ স্লোগান থেকে বেরিয়ে বাস্তবায়িত হওয়া দূরঅস্ত। আর সেই স্বপ্নপূরণের পথেই ‘বনবিবি’ টিম একধাপ এগিয়ে গেল।

Advertisement

যেখানকার মানুষদের নিয়ে ছবি, সেই প্রান্তিক মানুষেরা যেন সিনেমার স্বাদ থেকে বঞ্চিত না থাকে, তার জন্য গোসাবার বিজয়নগর আদর্শ বিদ্যামন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয়েছিল ‘বনবিবি’র বিশেষ স্ক্রিনিং। স্কুলমাঠে প্রজেক্টার টাঙিয়ে সিনেমা দেখানো হবে শুনে, সেখানকার মানুষের সে কী আনন্দ। আমফান যেখানে ধ্বংসলীলার ছবি এঁকে গিয়েছে, সেই মানুষগুলোর মুখে নির্মল হাসি। কেউ সংসারের কাজ সেরে আবার কেউ পড়াশুনো শেষ করে সন্ধেয় ঠিক নির্ধারিত সময়ে হাজির হয়ে গিয়েছিলেন স্কুলমাঠে। সিনেমার ভাষা না বুঝুক, কিন্তু নিজেদের জীবন আর চারপাশের দৃশ্য যখন প্রজেক্টারের পর্দায় জীবন্ত হয়ে উঠল, তখন সুন্দরবনের মানুষেরা একাত্ম হয়ে গেলেন। নিত্যদিন প্রতিকূলতার সঙ্গে যুঝে চলা মানুষগুলোর জন্য এই স্পেশাল স্ক্রিনিং যেন খোলা জানলার মতো একরাশ বাতাস এনে দিল। আর এক আকাশ তারা আর চাঁদ সাক্ষী থাকল ‘বনবিবি’র অভিনব প্রিমিয়ারের। এ এক অন্য প্রিমিয়ার কাহন। যেখানে মলিন মুখের নির্মল হাসি গ্ল্যামারদুনিয়ার ফ্ল্যাশের ঝলকানিকে টেক্কা দেবে। আর সেই অভিনব মুহূর্তের সাক্ষী সংবাদ প্রতিদিন ডট ইন।

শৈশবের স্বাদ ফিরে পেয়ে তখন ‘বনবিবি’র ‘দক্ষিণা রায়’ দিব্যেন্দু ভট্টাচার্যও ততোধিক উচ্ছ্বসিত। চপ-মুড়ি সহযোগে খোলা আকাশের নিচে সিনেমা উপভোগ করার সুযোগ পাওয়া চারটিখানি কথা নয় ঝা চকচকে মাল্টিপ্লেক্স, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রেক্ষাগৃহের যুগে। সিঙ্গলস্ক্রিন সেই কবে থেকেই গুটি গুটি পায়ে বাংলার বুক থেকে বিদায় নিয়ে যাচ্ছে। কমতে কমতে সেই সংখ্যা এখন হাতে গোনা। আর সেই প্রেক্ষিতেই বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের বিনোদনের স্বাদ দিতে ‘দুয়ারে সিনেমা’ ক্যাম্পেইন শুরু হল ‘বনবিবি’ টিমের হাত ধরে।

সিনেমার প্রযোজক রানা সরকার অবশ্য এই উদ্যোগকে ‘আন্দোলন’-এর আখ্যাই দিলেন। পরিচালক রাজীব ঘোষও একথায় সায় দিয়েছেন। ভবিষ্যতে এরকম আরও বিশেষ স্ক্রিনিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানালেন প্রযোজক। সুন্দরবনের বাঘবিধবাদের লড়াইয়ের প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছে ‘বনবিবি’। যে সিনেমার মুখ্য ভূমিকায় পার্ণো মিত্র অভিনয় করেছেন। সুন্দরবনে ‘বনবিবি’ সফরের অংশ ছিলেন তিনিও। বিশেষ স্ক্রিনিংয়ে মহিলাদের দেখে তিনিও ততোধিক উচ্ছ্বসিত।

গ্রামবাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে আজও সিনেমা দেখা বিলাসীতা মাত্র। একে প্রেক্ষাগৃহের অভাব, দ্বিতীয়ত বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম এখানে টেলিভিশন। অতঃপর বাংলা সিনেমার পাশে দাঁড়াতে হলে কিংবা সিনে ব্যবসা চাঙ্গা করতে হলে যে প্রান্তিক মানুষগুলোর কাছেও সিনেশিল্পকে পৌঁছে দিতে হবে, সেই ভাবনা থেকেই ‘দুয়ারে সিনেমা’। যার উদ্ঘাটন হল সুন্দরবনের একমেবাদ্বিতীয়ম দেবতা ‘বনবিবি’র আশীর্বাদে। সেই বিশ্বাস বুকে আঁকড়েই স্কুল প্রাঙ্গনে জড়ো হয়ে এই আন্দোলনের সলতে জ্বালালেন সুন্দরবনের মানুষেরা।

বিঃ দ্রঃ- কেমন হল ‘বনবিবি’ টিমের সুন্দরবন সফর? জানতে হলে চোখ রাখুন সংবাদ প্রতিদিন ডট ইন-এর সোশাল মিডিয়া পেজে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement