রাজা দাস, বালুরঘাট: খুদে নাতনি আবদার করেছিল। সেই আবদার মেটাতে খানিকটা হুজুগেই সূঁচ-সুতো হাতে নিয়ে সেলাই শুরু। কিন্তু রঙিন সুতো আর সূচে ফুটে ওঠা নকশাই যে দেবী দুর্গার (Durga) মুখ, অবয়ব হয়ে উঠবে, ভাবতে পারেননি কেউ। কিন্তু বালুরঘাটের রথতলার বাসিন্দা রুপালি চক্রবর্তী হাতে সূচ-সুতো নিয়ে কাপড়ের টুকরো দিয়েই বানিয়ে ফেলেছেন সপরিবার দুর্গা। পাশে কার্তিক-গণেশ এবং লক্ষ্মী-সরস্বতী। তাঁর নিখুঁত সূচিশিল্পে তৈরি ছোট্ট সেই দুর্গা এবার পূজিত হবে। বালুরঘাট (Balurghat) শহরের রথতলার চক্রবর্তীর বাড়ির এই পুজো নিয়ে তাই প্রতিবেশীদের মধ্যে ব্যাপক উন্মাদনা।
হাতে গোনা আর কদিন বাদেই দুর্গা আরাধনায় মাতবে আমবাঙালি। করোনা (Coronavirus) কাঁটায় এবারও পুজো হবে বিধিনিষেধের মধ্যে। এই আবহে বালুরঘাটের রুপালি দেবীর কাছে দুর্গা তৈরি করে দেওয়ার বায়না ধরেছিল তার নাতনি। তার আবদার মেটাতে গেরস্থালির কাজ সামলে একটুকরো কাপড়ের মধ্যেই সূঁচ-সুতো দিয়ে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন দশভুজা। সঙ্গে মায়ের সন্তানরাও। তা দেখে ভারী খুশি নাতনি।
[আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: করোনা কালে নয়া উদ্যোগ পারিবারিক পুজোতেও, অষ্টমীতে ভারচুয়ালি অঞ্জলি দেবসরকার বাড়িতে]
তবে সূঁচ-সুতোর টানে তৈরি দুর্গাটি শুধুমাত্র ঘরের শোভা বর্ধন করে রাখতে রাজি নন রুপালিদেবী। নিয়মনিষ্ঠা করেই সূচিকাজে তৈরি দুর্গাকে পূজার করার প্রস্তুতি নিচ্ছে চক্রবর্তী পরিবার। রুপালিদেবীর তৈরি এই দুর্গা দেখতে পাড়াপড়শিরা ভিড় জমাতে শুরু করেছেন ওই বাড়িতে। রুপালি চক্রবর্তী বলছেন, ”এর আগে কখনও এরকম কোনও প্রতিমা তৈরির কাজ করিনি। আর পাঁচজন গৃহিণীর মতো সূচ-সুতোয় হাতের সূক্ষ্ম কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই ঘরবন্দি নাতনির আবদার মেটাতে বাড়িতে থাকা পুরনো কাপড়চোপড় ব্যবহার করে সূচ-সুতোর টানে দুর্গা, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী, লক্ষ্মী-সহ তাদের বাহনকেও তৈরি করেছি। বাজার থেকে সাজসজ্জা কিনে এনে এই দুর্গা তৈরিতে সময় লেগেছে ১৫ দিন।”
[আরও পড়ুন: পুজোয় নতুন শাড়ি পাবেন অভাবীরাও, বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছে ‘দিদির উপহার’]
স্রেফ রীতিটুকু মেনে নমো নমো করে দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2021) পরিকল্পনা থাকলেও প্রসাদ বিতরণ ও পারিবারিক আনন্দ উৎসবে কোনও কার্পণ্য রাখতে চায় না চক্রবর্তী পরিবার। রুপালিদেবীর মতে, করোনা আবহে এভাবেই ঘরে ঘরে ভক্তির নিবেদনে হোক শক্তির আরাধনা।