shono
Advertisement

Durga Puja 2021: ঘন জঙ্গলে দশভুজার আরাধনা, বিশ্বের প্রথম দুর্গাপুজোর ইতিহাসের সাক্ষী কাঁকসার গড়চণ্ডীধাম

কথিত আছে, রাজা সুরথ ও তাঁর সহযোগী মিলে প্রথম দুর্গাপুজো শুরু করেন।
Posted: 05:05 PM Sep 21, 2021Updated: 05:05 PM Sep 21, 2021

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: ঘন জঙ্গলের মধ্যে ইমারতের ভগ্নস্তুপ। ভেঙে পড়া ইঁটের দেওয়ালে শ্যাওলা ও পুরাতন গাছ ডালপালা মেলেছে। ভগ্ন ইটের দেওয়ালের কোণায় কোণায় সাপেদের আড্ডা। কথিত আছে, এখানেই বৈশ্য রাজা সুরথ বিশ্বের মধ্যে প্রথম দুর্গাপুজো (Durga Puja) করেন। দুর্গাপুরের (Durgapur) কাঁকসার গড়জঙ্গলে গড়চণ্ডীধাম। মেধাশ্রমের পাশেই সুরথের এই দুর্গা মন্দিরের ভগ্নাশেষ এখনও ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। ফি বছর সেই ইতিহাস স্মরণ করেই দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন এলাকাবাসী।

Advertisement

কথিত আছে, মেধা মুনির নির্দেশে আজকের এই জায়গাতেই সপ্তম শতকে গভীর অরণ্যের মাঝে রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ্য বসন্তকালে প্রথম দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন। তৎকালীন বীরভূমের অন্তর্গত বোলপুরে বিশাল রাজ্য ছিল রাজা সুরথের। সুপুর ছিল রাজধানী। বহিরাগতদের আক্রমণে রাজ্য ও রাজধানী হারিয়ে সুরথ ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী সমাধি বৈশ্য ছদ্মবেশ ধারণ করেন। প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে কাঁকসার অজয় নদের দক্ষিণে শাল, সেগুন, মহুয়ার গভীর জঙ্গলে মহর্ষি মেধা মুনির আশ্রমে আশ্রয় নেন তাঁরা। যা এখন কাঁকসার গড়জঙ্গল নামে পরিচিত। মেধা মুনির আদেশেই রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ্য মৃন্ময়ী দুর্গামূর্তি নির্মাণ করে শুরু করেন পুজো।

[আরও পড়ুন: কাটোয়ার এই গ্রামে ‘কাঁথেশ্বরী’ রূপে পূজিতা হন দুর্গা, ৮০০ বছরের পুরনো এই প্রথার কারণ কী?]

তারপরই রাজা তাঁর রাজ্য পুনরুদ্ধার করেন। আত্মজ্ঞান লাভ করেন তাঁর সহযোগী সমাধি বৈশ্য। বর্তমানে রাজা সুরথের সেই দুর্গামন্দির সংস্কারের অভাবে জঙ্গলের মাঝে হারিয়ে গিয়েছে। ইতিউতি এখনও ছড়িয়ে রয়েছে জীর্ণ মন্দিরের অংশবিশেষ। ভগ্ন মন্দির ভেদ করে উঠেছে বহু পুরাতন বটগাছ। রাঢ় বাংলার মহাতীর্থ ভূমি নামে পরিচিত এই গড়চণ্ডীধাম। মেধাশ্রমের বর্তমান সেবাইত যোগীরাজ ব্রহ্মনন্দগিরি জানান, “মেধা ঋষি প্রাচীন শাল গাছের তলায় বসে মহাকালী, মহালক্ষী ও মহা সরস্বতী – তিনরূপে চণ্ডীপাঠ করেছিলেন। সেই চণ্ডীপাঠ শ্রবণ করে এখানেই দীর্ঘ তপস্যা করেন রাজা সুরথ।”

[আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: দুর্গামণ্ডপে এবার ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’, ঝাড়গ্রামের এই পুজো সেজে উঠছে রাজ্য সরকারি প্রকল্পে]

এরপর রাজা সুরথ রাজ্যে ফিরেই কাঁকসার (Kaksa) এখানে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে তিনটি মন্দির নির্মাণ করেন। সেসব ধংস হয়েছে বহুদিন। তার নিদর্শন এখনও ছড়িয়ে রয়েছে গড়চণ্ডীধামের এদিক ওদিক। মেধা মুনির নির্দেশমতো এবং রাজা সুরথের দুর্গাপুজোর রীতি ও পদ্ধতি মেনেই এখনও দুর্গাপুজো হয় এখানে। এখনও পুজোর পাঁচদিনই প্রথমে রাজা সুরথের তিন মন্দিরের পাঁচিলের ধংসবশেষ প্রদক্ষিণ করে তবেই শুরু হয় পুজো। বিশ্বের প্রথম দুর্গাপুজোর ধংসাবশেষ ও ইতিহাস জানতে, দেখতে বহু মানুষের ভিড় জমে স্রেফ দুর্গাপুজোর সময়েই।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement