ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: পঞ্চি শাড়ি পরেন যাঁরা ভাল জানবেন, শাড়িটা বেশ ভারী। অথচ সাঁওতালদের এই সিগনেচার শাড়ি ইদানীং নজর কেড়েছে নানা মহলে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জঙ্গলমহলের বেশ কিছু কর্মসূচিতে গিয়ে এই শাড়ি জড়িয়ে সাঁওতালদের সঙ্গে মিশে যেতে দেখা যায়। শাড়িটি নিয়ে স্বভাবিকভাবেই কৌতূহল বেড়েছে। রাজ্য বিধানসভার পশ্চিম ফটকের কাছে একটা অংশ ঘিরে নিয়ে আম জনতার জন্য বসেছে তন্তুজর পুজো সম্ভারের কাউন্টার। এই পঞ্চি শাড়িকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় হালকা করে এনে সেখানে তুলে ধরেছে তন্তুজ।
পুজোর (Durga Puja) এক মাসও আর বাকি নেই। সেই আবহেই বিধানসভাতেও লেগে গেল উৎসবের আঁচ। তন্তুজ ও বিধানসভার সমবায় সংস্থার উদ্যোগে এই বিপণন কাউন্টার চলবে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত। শুক্রবার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, উপাধ্যক্ষ আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়রা এই বিপণনীর উদ্বোধন করেন। ছিলেন প্রধান সচিব সুকুমার রায়ও। মূলত স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলোর কাছে কিনে তন্তুজ এই ধরনের ‘পিওর কটন’ শাড়ি বিক্রি করে। অথচ শাড়ির ভারিক্কি ব্যাপারটার জন্য সেটাকে শহুরে করে তোলা যাচ্ছিল না। আবার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলোর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল বিশেষ চাহিদার এই শাড়ি শহরেও বিক্রি হোক। শেষে একটা উপায় বার করেন তন্তুজর এমডি রবীন্দ্রনাথ রায়।
পুজোর সময় গ্রামের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলোর একটু বিক্রি বেশি হলে তাঁদেরই উপকার। গোষ্ঠীগুলোর সদস্যদের মুখে হাসি ফোটে। সেই ভাবনা থেকেই পুরুলিয়ার এই ‘পিওর কটন’ শাড়িকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় নরম করে শহরের ক্রেতাদের জন্য ‘কাস্টমাইজ’ করে চাহিদা মেটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন সংস্থার লিড ডিজাইনার অনিন্দিতা পুরকাইত। শুধু শাড়ি নয়, একই কাপড়ে ডিজিটাল প্রিন্ট করে পাঞ্জাবি, জওহর কোট তৈরি হয়েছে। পাওয়া যাবে সেসবও। পুরুলিয়ার মূল ভারী পঞ্চি শাড়িও পাওয়া যাচ্ছে। মূল্য ৩০০ থেকে ১ হাজারের মধ্যে। এছাড়া টাঙ্গাইল, গরদ মিলছে সব।
প্রথম দিনই বিক্রি হয়েছে ১৫ হাজার টাকার বেশি। ক্রেতাদের মধ্যে যেমন রয়েছে আম জনতা, রয়েছেন বিধানসভার কর্মীরাও। আম জনতা সেখানে ঢুকতে পারবেন হাই কোর্টের দিকের ফটকের সামনে থেকে। বিধায়করাও অনেকে দেখে গিয়েছেন। অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, সচিবরাও নিজেদের পছন্দের করা শার্ট, শাড়ি, নরম তোয়ালে নিয়েছেন। পছন্দ করে দেখে রেখেও গিয়েছেন অনেকে। ৫০০ টাকার উপর কেনাকাটায় মিলছে ২০ শতাংশ ছাড়।