সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: পুজোর সময়টা ওঁদের 'সিজন'। রুজি-রুটির তাগিদে ছৌ শিল্পীরা ছুটে বেড়ান বিভিন্ন জায়গায়। পেটের টানে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন! তাছাড়া বাংলার হারিয়ে যাওয়া শিল্পের দায়িত্ব তাঁদেরই কাঁধে। ইচ্ছে থাকলেও পুজোতে সামিল হতে পারেন না। এছাড়াও বর্ণে তাঁরা শূদ্র। দেবীর আরাধনায় অবাধ অংশগ্রহণে আজও অদৃশ্য বাধা আছেই! সেই খেদ থেকেই দেবীর অকালবোধনের আগে, যোগমায়ার পুজোর আয়োজন করেন তাঁরা। মঙ্গলবার অন্ডালের উখড়া পাঠকপাড়ায় কলাবউ স্নানের মাধ্যমে শুরু হল মায়ের আরাধনা (Durga Puja In Rural Bengal)।
আজ দেবীর অকাল বোধনের আগের অষ্টমী। শুরু হল পুজো। দুর্গাপুজোর মতো আগামী চারদিনই পুজো চলবে। সমস্ত নিয়মরীতিই মানা হবে। তবে নেই কোনও পুরোহিত। ছৌ শিল্পীরা নিজেই পুজো করেন। মহিলা ঢাকিদের ঢাকের লড়াই-সহ চলে ছৌ নাচ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান। শুধু ছৌ শিল্পীরাই নয় এই পুজোয় সমবেত হন এলাকার সমস্ত শ্রেণির মানুষ।
মহিলা ঢাকিদের ঢাকের লড়াই।
উদ্যোক্তা অর্চিষ্মান পাল বলেন, "আমাদেরও দুর্গাপুজোয় আনন্দ করতে ইচ্ছা করে। কিন্তু পেশার তাগিদে মানুষকেই আনন্দ দিতে হয়। নিজেরা আনন্দ করতে পারি না। তাই আমরা দুর্গাপুজোর আগের অষ্টমীতে দেবী যোগমায়ার পুজোর আয়োজন করি। দুর্গাপুজোর মতোই সমস্ত কিছুই করা হয়। তবে পুজোয় কোনও ব্রাহ্মণ পুজো করেন না। পুজো করি আমিই। ৭ বছর ধরে চলে আসছে এই পুজো। শুধু আমরাই নয়, এই পুজোয় অংশ নেয় জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলেই।"