শেখর চন্দ্র, আসানসোল: এবার রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাহায্যের হাত বাড়ানোর উদ্যোগ ডিভিসি কর্তৃপক্ষের। জল ছাড়া ও বন্যা নিয়ে ডিভিসি বনাম রাজ্য সংঘাতের আবহেই মানবিক মুখ দেখানোর চেষ্টা করল ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। রাজ্যের বন্যা ত্রাণ তহবিলে একদিনের বেতন দান করার জন্য কর্মীদের কাছে আবেদন করল ডিভিসি।
ডিভিসির তরফে কর্মীদের উদ্দেশে মঙ্গলবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কর্মীর কাছে আবেদন করা হয়েছে, বাংলায় যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেটার ত্রাণের জন্য একদিনের বেতন দিতে হবে। তবে তা বাধ্যতামূলক নয়। যারা এই আবেদনের ভিত্তিতে সাহায্য করতে রাজি হচ্ছেন না, তারা কেন রাজি হচ্ছেন না তা বৃহস্পতিবারের মধ্যে মেইল করে জানাতে হবে। তাহলে তাদের একদিনের বেতন কাটা হবে না।
রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির জন্য ডিভিসিকেই দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, রাজ্যে এখন যে বন্য পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেটা ম্যান মেড। ঝাড়খণ্ডকে বাঁচাতে ডিভিসি ড্যাম থেকে নিয়ন্ত্রণহীন বা বেলাগামভাবে জল ছেড়েছে ও ছেড়ে চলেছে। ডিভিসির মাইথন এবং পাঞ্চেত ড্যাম থেকে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছে। বুধবারও ২২ হাজার কিউসেক হারে দুটি ড্যাম থেকে জল ছাড়া হয়েছে। ফলে বানভাসি হয়েছে বাংলার বিস্তীর্ণ এলাকা। ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ডাকও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতার অভিযোগের পরই ডিভিসির তরফে বাংলায় বানভাসি মানুষের সাহায্যে ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হল। এই পরিস্থিতিতে ডিভিসির কর্মীদের একদিনের বেতন প্রদানের আবেদন কি তাহলে ক্ষতে প্রলেপ লাগানোর চেষ্টা? নাকি শুধু মানবিক দিক থেকেই রাজ্যের পাশে দাঁড়াতে চাইছে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ? সেসব প্রশ্নও উঠছে। ডিভিসির জনসংযোগ আধিকারিক অরবিন্দ কুমার সিং অবশ্য বলছেন, যখনই দেশের কোথাও প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটে, ডিভিসি এভাবেই এগিয়ে আসে। যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে তাতে সবকিছুই স্পষ্ট রয়েছে। এর সঙ্গে রাজ্য-ডিভিসি সংঘাতের কোনও সম্পর্ক রয়েছে কিনা, তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি তিনি।