সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তামিল রাজনীতিতে জয়ললিতা এখন অতীত। তাঁর মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে প্রায় চারটি বছর। কিন্তু তাঁর দল অল ইন্ডিয়া আন্না দ্রাবিড় মুন্নেত্র কজাঘম এখনও গোষ্ঠীকোন্দল পুরোপুরি মিটিয়ে উঠতে পারেনি। জয়ললিতার মৃত্যুর পর তাঁর আসনে কে অধিষ্ঠান করবেন, এই নিয়েই গত চার বছর ধরে লড়াই চলছিল AIADMK’র অন্দরে। বুধবার সেই বিবাদের স্থায়ী সমাধান হল। অন্তত আপাত দৃষ্টিতে সেটাই মনে হচ্ছে। জয়ললিতার আসনে এবার স্থায়ীভাবে অধিষ্ঠান করতে চলেছেন তামিলনাড়ুর বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী এ কে পালানিস্বামী (E Palaniswami)।
‘আম্মা’র মৃত্যুর পর তাঁর দল স্পষ্টতই তিনভাগে ভাগ হয়ে যায়। সেই গোষ্ঠীগুলির নেতৃত্বে ছিলেন ও পনিরসেলভম, ই কে পালানিস্বামী এবং শশীকলা নটরাজন। এদের মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী ছিলেন শশীকলা নটরাজন। জয়ার মৃত্যুর পর শশীকলাই তাঁর দলের ক্ষমতা পাবেন বলে মনে করা হচ্ছিল। এবং ক্ষমতা প্রায় কুক্ষিগত করেই ফেলেছিলেন তিনি। কিন্তু এরই মধ্যে দুর্নীতির অভিযোগে জেলে যেতে হয় শশীকলাকে। জেলে যেতে হয়, তাঁর ভাইপো টিটিভি দিনাকরণকেও। সেই সুযোগে AIADMK’র ক্ষমতার অলিন্দ থেকে শশীকলাকে সরিয়ে দেয় পনিরসেলভম এবং পালানিস্বামীর নেতৃত্বাধীন বাকি দুই গোষ্ঠী।
[আরও পড়ুন: নয়া রেকর্ড মোদির, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে ক্ষমতার অলিন্দে কাটালেন দু’দশক]
এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে পনিরসেলভম ছিলেন জয়ললিতার বেশি ঘনিষ্ঠ, কিন্তু দলে প্রভাব বেশি ছিল পালানিস্বামীর। শশীকলাকে সরানোর পর এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। একটা সময় মনে হচ্ছিল তামিলনাড়ুর শাসকদল আড়াআড়িভাবে ভেঙে যাবে। কিন্তু শেষপর্যন্ত ক্ষমতার কাছাকাছি থাকার জন্যই সন্ধি করে নেয় দুই গোষ্ঠী। মুখ্যমন্ত্রী হন পালানিস্বামী। আর পনিরসেলভম (O Panneerselvam) হন উপমুখ্যমন্ত্রী। দলের রাশও থাকে পনিরসেলভমের কাছে। এতদিন এই অস্থায়ী ব্যবস্থাই চলছিল। কিন্তু আগামী বছর ভোট। তাই স্থায়ী ব্যবস্থার প্রয়োজন। তাছাড়া গত বছর লোকসভা নির্বাচনে দলের ভরাডুবি হয়েছে। এরই মধ্যে তামিলনাড়ুর বহু জায়গায় দেখা যায় পনিরসেলভমকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবিতে পোস্টার পড়তে। ফের উত্তপ্ত হয়ে যায় AIADMK’র অন্দরের পরিস্থিতি। নতুন করে শুরু হয় আলোচনা।
মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত সেই আলোচনা চলেছে। অবশেষে পনিরসেলভম ঘোষণা করেছেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী হতে চান না। আগামী নির্বাচনেও তাঁর দলের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হবেন পালানিস্বামীই। পনিরসেলভমের এই ঘোষণার অর্থ হল, এই প্রথম পূর্ণাঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে জয়ললিতার পরিবর্তে পালানিস্বামীর নেতৃত্বে লড়াই করবে AIADMK। অর্থাৎ আপাতত পালানিস্বামীই হবেন জয়ললিতার উত্তরসূরি।