সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তারা অতিথি। তবে তিথি মেনেই আসে। মানে এতদিন তাই আসত। কিন্তু এবার তারা নির্ধারিত সময়ের আগেই চলে এসেছে এদেশে। সাধারণত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বারাণসীতে দেখা মিলত সুদূর সাইবেরিয়ার পরিযায়ী পাখিদের। কিন্তু এবার এক সপ্তাহ আগেই হাজির তারা। নেপথ্যে সম্ভবত লকডাউনের সময় যানবাহনের স্তব্ধতার ফলে হ্রাস পাওয়া দূষণের মাত্রা।
পরিযায়ী পাখিদের আগাম আগমনে পরিবেশের স্বচ্ছতাকেই তুলে ধরছেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক রঞ্জনকুমার গুপ্ত। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘ওরা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আসে। কিন্তু এবার এক সপ্তাহ আগেই চলে এসেছে। লকডাউনের সময় যান চলাচল বন্ধ থাকায় দূষণের মাত্রা কমাটাই সম্ভবত এর পিছনের কারণ।’’ আরেক অধ্যাপক জ্ঞানেশ্বর চৌবের মতে, ‘‘সাইবেরিয়ার পাখিদের সময়ের আগে চলে আসাটা খুব ভাল লক্ষণ। এর থেকে বোঝা যাচ্ছে, মহামারী ওদের পরিযায়ী স্বভাবে কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি।’’
[আরও পড়ুন: প্রতিমা নিরঞ্জনের ফুল ও বেলপাতা দিয়ে জৈবসার তৈরির ভাবনা শিলিগুড়ি পুরনিগমের]
এই পাখিরা প্রতিবছরই পৃথিবীর কোনও এক বা একাধিক দেশ বা অঞ্চল থেকে বিশ্বের অন্য কোনও অঞ্চলে যায় একটি বিশেষ ঋতুতে। তারপর সেই ঋতু শেষে আবার ফিরেও যায়। পৃথিবীর প্রায় ১৯ শতাংশ প্রজাতির পাখিই পরিযায়ী শ্রেণির। মূলত খাদ্যের সহজলভ্যতা ও বংশবৃদ্ধির লক্ষ্যেই দীর্ঘ দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয় এরা।
বছরের এই সময়ে প্রতিবারই বহু বিদেশি পর্যটক আসেন বারণসীতে। গঙ্গার ঘাটে বসে পাখিদের দেখতে ও তাদের ছবি তুলতেই মূলত আসেন তাঁরা। বোট চালক শম্ভু মাঝি জানাচ্ছেন, পাখিদের আগেই চলে আসার ফলে তিনি খুব খুশি। আশা করছেন আরও বেশি পর্যটকের। যদিও এবার বিদেশিদের আসার সম্ভাবনা নেই। তবে পাখিদের উপস্থিতিতে ঘাটের সেই সরগরম চরিত্র আবার ফিরবে, মহামারীর সময়ে এটুকু আশাতেই বুক বাঁধছেন শম্ভুর মতো আরও অনেক মানুষই। যাঁদের রুটিরুজির সঙ্গে এই পাখিদের এক নিবিড় যোগ রয়েছে।