সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রবিবার কটকে ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে মহাডার্বিতে মুখোমুখি হতে চলেছে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল। ২০১০ সালে ফেড কাপের ফাইনালে হারলেও সাত বছর চিত্রটা কিন্তু অন্যরকম। পারফরম্যান্স হোক কিংবা খেলোয়াড়দের মানসিকতা, সবদিক থেকেই এগিয়ে মোহনবাগান। দু’টি জয় এবং একটি ড্র করে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেখানে শেষ চারে উঠেছে মোহনবাগান, সেখানে একটি জয় ও দু’টি ড্রয়ের সৌজন্যে দ্বিতীয় হয়ে শেষ চারে উঠেছেন মেহতাবরা। তার উপর রয়েছে চোট-আঘাত সমস্যা এবং খেলোয়াড়দের মানসিক প্রস্তুতিতে খামতি। যদিও ম্যাচের আগের দিন খোশ মেজাজেই পাওয়া গেল লাল-হলুদ খেলোয়াড়দের। উল্টোদিকে, বাগান শিবিরে যেন ফিলগুড আবহাওয়া। যদিও অল্পের জন্য আই লিগ হাতছাড়া হওয়ায় ফেডারেশন কাপ জিতেই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে চাইছে গঙ্গাপাড়ের ক্লাবটি। তাই অনুশীলনে খেলোয়াড়দের চোখ-মুখে দেখা গেল প্রত্যয়ের ছাপ।
[পুলিশের জালে পলাতক বন্দি কর্ণ, জানাল সুযোগ পেলে ফের পালাবে]
আই লিগের ফিরতি ডার্বিতে শিলিগুড়িতে নিজেদের গড়েই বাগান ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। তাহলে ফর্মে থাকা মোহনবাগান কী আবারও চির-প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে দেবে? মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন কিন্তু মানতে নারাজ। ড্রিম ইউনিভার্সিটির মাঠে প্র্যাকটিস শেষ করার পর মোহনবাগান কোচ বলেই ফেললেন, “অতীতে কী হয়েছে ভেবে কী হবে? আমাদের এখানে ফেডারেশন কাপ জিততে গেলে ইস্টবেঙ্গলকে হারাতে হবে৷ সেই লক্ষ্যে আমরা এগোব৷ শিলিগুড়িতে আমরা জিতেছিলাম ঠিকই৷ কিন্তু সেসব ভেবে লাভ কি? তাই ছেলেদের বলেছি, তোমরা পুরনো দিনের কথা ভুলে যাও৷ লক্ষ্য রাখ সামনে৷ যেভাবেই হোক ম্যাচটা জিততে হবে৷”
[আর ইমাম নয় বরকতি, ঘোষণা টিপু সুলতান মসজিদ কর্তৃপক্ষের]
খাতায়-কলমে তো বটেই, পারফরম্যান্সের নিরিখেও অনেক বেশি এগিয়ে রয়েছে মোহনবাগান৷ তাই জেতা নিয়ে কোনও টেনশন থাকার কথা নয়৷ কিন্তু সঞ্জয় এসব মানতে নারাজ৷ তাঁর সোজা কথা, “ডার্বিতে কেউ এগিয়ে থাকে না৷ অনেক ম্যাচ আছে যেখানে মোহনবাগান ফেভরিট হয়ে হেরেছে৷ আবার ইস্টবেঙ্গল পিছিয়ে থেকেও বাজিমাত করে বেরিয়ে গিয়েছে৷ তাই এই ম্যাচে কেউ যেমন এগিয়ে নেই, আবার পিছিয়েও নেই৷ সোজা কথা হল, কাল যে ভাল খেলতে পারবে সেই ম্যাচ জিতবে৷” এদিকে, সোনি নর্ডিও স্টেডিয়াম ছাড়ার মুখে জানিয়ে গেলেন, “আমরা এখানে ট্রফি জিততে এসেছি৷ তাই কে সামনে পড়ল সেসব ভেবে লাভ নেই৷ সোজা কথা হল, কাল আমরা খেলতে নামব সেমিফাইনাল ম্যাচ৷ আমাদের মাথায় আছে৷ প্রতিপক্ষ ইস্টবেঙ্গল না বেঙ্গালুরু মাথায় রাখছি না৷ তাই আমরা জেতার জন্য সবদিক দিয়ে ঝাঁপাব৷ তারপর যা হওয়ার হবে৷”
[মন্দারমণি যাওয়ার পথে মৃত্যু আয়কর দপ্তরের আধিকারিকের, আহত ৫]
উল্টোদিকে, ইস্টবেঙ্গলের কাছে এই ম্যাচটা অনেকটা বদলার ম্যাচ। একবার জিততে পারলে দলের গুমোট পরিবেশটাই পালটে যাবে। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর লাল-হলুদ খেলোয়াড়রাও যেন ম্যাচটি জেতার জন্য মরিয়া হয়ে রয়েছন। কারণ তাঁরা জানেন, ম্যাচটি একবার জিতে গেলে অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের গলাতেও একই সুর। ইস্টবেঙ্গলের ‘ঘরের ছেলে’ স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, রবিবারের ম্যাচে তাঁরা আন্ডারডগ হয়ে নামবেন৷ যদি জিততে পারেন তাহলে বহু প্রশ্নের জবাব দেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব হবে, নচেত্ নয়৷
[আইপিএল গড়াপেটায় এবার পুলিশের নজরে গুজরাট লায়ন্সের ২ ক্রিকেটার]
“ছেলেদের বলছি, তোমরা কোনও অংশে মোহনবাগানের থেকে পিছিয়ে নেই৷ শুধু লড়াই করার মানসিকতাটা হারিয়ে ফেল না৷ যদি তোমরা জিততে পার তাহলে ফের তোমাদের সামনে ফেডারেশন কাপ জেতার সুযোগ চলে আসবে৷ আর যদি না পার তাহলে বুঝতে হবে তোমরা অযোগ্য৷ তখন ক্লাব তোমাদের আগামিদিনে রাখবে কিনা সেটাই ভেবে দেখবে৷ অতএব প্রমাণ করতে হলে রবিবার নিজেদের একটা উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা কর৷” কথাগুলো শুনতে শুনতে মনে হচ্ছিল, ইস্টবেঙ্গলের ঘরের ছেলে বোধহয় সাংবাদিক নয়, ফুটবলারদের সামনে বক্তব্য রাখছেন৷ মেহতাব অবশ্য জানিয়ে গেলেন, তাঁরা জেতা ছাড়া অন্যকিছু ভাবছেন না৷ “কোচকে বাদ দিয়ে আমরা প্রত্যেকেই বসছি৷ সকলে আলোচনা করছি৷ একটা কথা বলতে পারি, শিলিগুড়ির পুনরাবৃত্তি এখানে ঘটবে না৷ সকলে প্রতিশোধের আগুন মনের মধ্যে জ্বেলে রেখেছে৷ এখন দেখতে হবে বাস্তবে তার কতটা প্রতিফলিত হয়৷ যদি আমরা শুরু থেকে বল পজিশনে এগিয়ে যেতে পারি তাহলে আমাদের ধরা মুশকিল হবে৷”
[বাবাকে ‘ডন’ হিসেবে দেখাবেন না, রজনীকে হুমকি হাজি মস্তানের ছেলের]
The post ডার্বিতে এগিয়ে মোহনবাগান, জিতে সমালোচনার জবাব দিতে মরিয়া ইস্টবেঙ্গল appeared first on Sangbad Pratidin.