স্টাফ রিপোর্টার : যদি বড় কোনও চাপের কাছে এসে শেষ পর্যন্ত চুক্তিপত্রে সই করতে হয়, তাহলে কার্যকরি কমিটির সবাই একযোগে পদত্যাগ করবে বলে জানালেন ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) ফুটবল সচিব সৈকত গঙ্গোপাধ্যায়। শ্রী সিমেন্ট কর্নধার এইচ এম বাঙ্গুর পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন, যতক্ষন না ইস্টবেঙ্গল কর্তারা টার্মশিটের চুক্তিকে সম্মান জানিয়ে মূল চুক্তিপত্রে সই করছেন, ততক্ষন পর্যন্ত শ্রী সিমেন্ট (Shree Cement) কর্তৃপক্ষ নতুন করে কোনও অর্থ বিনিয়োগ করবে না..। এমনকি, কোনও ইস্যুতে লাল-হলুদ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনাতেও বসবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন শ্রী সিমেন্ট কর্নধার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার কার্যকরী কমিটির মিটিং ডাকা হয় ইস্টবেঙ্গলে। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, শেষ পর্যন্ত যদি সই করতেই হয়, তাহলে সবাই মিলে পদত্যাগ করবেন।
এদিন কার্যকরী কমিটির মিটিংয়ে সবার সামনেই টার্মশিটের চুক্তির অংশগুলি তুলে ধরা হয়। সেখানে কার্যকরী কমিটির সদস্যরা প্রত্যেকেই মূল চুক্তিপত্রে সই করতে বিরুদ্ধ মত দেন। কথা ওঠে যদি, এরপরেও চুক্তিপত্রে সই করতে হয়, তখন কি হবে? সদস্যরা বলেন, বড় কোনও চাপের কাছে বাধ্য হয়ে যদি একান্তই চুক্তিপত্রে সই করতে হয়, তাহলে এর প্রতিবাদে কার্যকরী কমিটির সদস্যরা একসঙ্গে সবাই মিলে পদত্যাগ করবেন।
পরে ফুটবল সচিব সৈকত গঙ্গোপাধ্যায় বলছিলেন, “এদিন কার্যকরী কমিটির সভায় টার্মশিট এবং চুক্তিপত্রের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরা হয়। যদিও সদস্যরা সবাই আগেই জানতেন পার্থক্যটা। তবুও এদিন ফের টার্মশিট আর চুক্তিপত্র নিয়ে আরও ভালভাবে আলোচনা হয়। সেখানে সব সদস্যরাই একমত হয়েছেন, যেভাবে চুক্তিপত্র রয়েছে, তাতে এই মুহূর্তে সই করা হবে না।”
[আরও পড়ুন: ভারতে টি-২০ বিশ্বকাপ আয়োজন ও বিশ্ব ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল ICC]
ইস্টবেঙ্গল ফুটবল সচিব আরও বলেন, “এদিন কার্যকরী কমিটির সবাই একটা ব্যাপারে এক জায়গায় এসেছেন যে, যদি বড় কোনও চাপের কাছে নতি স্বীকার করে শেষ পর্যন্ত শ্রী সিমেন্টের দেওয়া চুক্তিপত্রে সই করতেই হয়, তাহলে সবাই একযোগে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত আছেন। আর সভায় উপস্থিত সচিব কল্যান মজুমদার কার্যকরী কমিটির সদস্যদের এই মানসিক অবস্থানের সঙ্গে সহমত পোষণ করে সভাপতি ডাঃ প্রনব দাশগুপ্তকে পুরো ব্যপারটা দেখতে বলেছেন। সভাপতি অবশ্য, এখনই সদস্যদের পদত্যাগ করতে বারণ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এদিন কার্যকরী কমিটির সদস্যদের মতামতের সঙ্গে একমত হলেও, তিনি পুরো ব্যাপারটা নিজের মতো করে দেখভাল করবেন। তিনি না জানানো পর্যন্ত পদত্যাগের সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখতে বলেছেন।”
এদিন ইস্টবেঙ্গলের কার্যকরী কমিটির সিদ্ধান্ত শুনে দুবাই থেকে শ্রী সিমেন্টের কর্নধার এইচ এম বাঙ্গুর বললেন, “আমার কাছে একটাই জিনিস পরিস্কার। টার্মশিটকে সম্মান জানিয়ে ইস্টবেঙ্গল চুক্তিপত্রে সই করছে কি না। ওরা সই করলে, তারপর থেকে সব আর্থিক দায়িত্ব আমার। আর যদি চুক্তিপত্রে সই না করা হয়, তাহলে আর কোনওরকম অর্থ বরাদ্দ করব না আমি।” বড় কোনও চাপের কাছে নতি স্বীকার বলতে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব কার চাপের কথা বলতে চাইছেন, জানতে চাওয়া হলে সৈকত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “বড় চাপ বলতে আমরা শ্রী সিমেন্টের কথাই বলতে চেয়েছি। চুক্তিপত্রে সই করার জন্য আমাদের উপর অন্য কারও চাপ নেই।” সব মিলিয়ে ইস্টবেঙ্গল আর শ্রী সিমেন্টের মধ্যে পরিস্থিতি কিছুতেই স্বাভাবিক হচ্ছে না। বরং পরিস্থিতি জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে।