স্টাফ রিপোর্টার: প্রতিপক্ষের আক্রমণ নয়। ভয় লাগে আপনাদের…! শনিবারের সূর্য তখন মাঝ আকাশে। ইকো পার্কে দাঁড়িয়ে জনাচারেক সংবাদমাধ্যম কর্মীর উদ্দেশে মজা করে বলছিলেন কোয়েস ইস্টবেঙ্গল সিইও সঞ্জিত সেন। বিষয়টায় হয়তো ছিল নেহাত রসিকতা। কিন্তু প্রতিপক্ষ নিয়ে ইস্টবেঙ্গল অন্দরমহলের ভাব এখন এমনটাই। শেষ ১০ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট পেয়ে টপ গিয়ারে লাল-হলুদ। দু’দিন আগেই শিলং লাজংকে পাঁচ গোলের মালা পরানোয় রালতে, এনরিকেরদের আত্মবিশ্বাস এখন আকাশছোঁয়া। টানা খেলে চলা ফুটবলারদের বিশ্রাম দিতে তাই ম্যাচের আগেরদিন ডে আউট ইস্টবেঙ্গলে।
[অ্যাওয়ে ম্যাচে আইজলকে হারিয়ে স্বস্তি ফিরল মোহনবাগানে]
সাংবাদিক সম্মেলন করতে কোচ আলেজান্দ্রো মেনেজেস, মারিও এবং টনি ডোভালে তখন যুবভারতীতে। হোটেল থেকে ছাড়ল টিম বাস। থামল এসে সোজা ইকো পার্কের চার নম্বর গেটে। কাজ মিটিয়ে স্টেডিয়াম থেকে চলে এলেন আলেজান্দ্রোরাও। তারপর ঘণ্টাখানেক চলল ছুটি-ছুটি। কোথাও বিভিন্ন ‘ফান গেমে’ মাতলেন জবি, চুল্লোভারা। কোথাও আবার গলফ খেলতে ছুটলেন টনি, এনরিকে। বাকিরা কেউ এমনিই হেঁটে বেড়ালেন। কেউ আবার ঘুরে বেড়ালেন সপ্তম আশ্চর্যের রেপ্লিকাগুলোর সামনে।
এখানেই উঠছে প্রশ্ন। যতই চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে ছিটকে যাক, তবু তো আই লিগের প্রথম চারে চার্চিল। এত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগেরদিন অনুশীলন না করা কি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস বা আত্মতুষ্টি নয়? সাংবাদিক সম্মেলনে সেই উত্তর দিয়ে এসেছেন আলেজান্দ্রো এবং টনি ডোভালে। লাল-হলুদের স্প্যানিশ কোচ বলছিলেন, “আমাদের রিকভারির প্রয়োজন ছিল। তাই ভাবলাম এটাই বেটার অপশন। আর আত্মতুষ্টি? ওসব আমার দলে নেই। যেটা আছে সেটা হল সঠিক আত্মবিশ্বাস। তবে কখনও আত্মতুষ্টি এলে, তা কীভাবে কাটাতে হয় আমি জানি।” আলেজান্দ্রো কিছুটা রাখঢাক করে বললেও, আসল কথা বেরিয়ে এল টনির গলায়। “দলে সবাই নিজের কাজ জানে। তাই কোনও সমস্যাই নেই।”
[আইএসএলে খেলার জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি দিতে নারাজ দুই প্রধান]
কিন্তু তাই বলে কি কোনওরকম প্রস্তুতি ছাড়াই মাঠে নামছে দল? একেবারেই না। ইকো পার্ক থেকে ফিরে লাঞ্চ। তারপর সবাইকে নিয়ে চলল আলেজান্দ্রো ও মারিওর ভিডিও ক্লাস। সেখানেই চার্চিল বধের মহড়া নিলেন স্প্যানিশ কোচ। এমনিতে আগেরদিনের খেলা দলে রবিবার সম্ভবত কোনও পরিবর্তন আনছেন না আলেজান্দ্রো। তবে বিদেশিহীন লাজং আর লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতার দল চার্চিল যে এক নয়, সেই বার্তা ফুটবলারদের দিয়ে রেখেছেন কোচ। বিপক্ষ দলে সিসে না থাকায় প্লাজার জন্য বল সাপ্লাই হয়তো কম আসবে। কিন্তু না দেখা ফুটবলারদের কে কখন বিপজ্জনক হয়ে ওঠে, তা নিয়ে সতর্ক প্রত্যেকে। তাছাড়া চার্চিলের ফিজিক্যাল ফুটবল থেকে বেঁচে খেলার নির্দেশও দিয়েছেন কোচ। সাংবাদিক সম্মেলনে এসে আলেজান্দ্রো, টনিরা জানতে পারলেন চোট-সমস্যায় চার্চিল পাচ্ছে না সিসে, এল্ডর, মোহনরাজ ও রিচার্ড কোস্টাকে। তবে তাতে যেন কিছুই যায় আসে না তাঁদের। প্রসঙ্গ উঠতেই ভাবলেশহীন ভাবে আলেজান্দ্রো বললেন, “ওরা তো এগারো জনেই খেলবে। তার কমে তো নিশ্চয়ই নয়?” সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রোজ একটু করে চ্যাম্পিয়নশিপের আরও কাছে পৌছচ্ছে ইস্টবেঙ্গল। মাঠে যাতে বেশি করে সমর্থকরা আসেন, তাই টিকিটের দাম কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। হোম ম্যাচে টুয়েলভথ ম্যান গ্যালারির সাহায্য চাইলেন টনি ডোভালেও। অনুরোধ করলেন বেশি করে মাঠে আসতে। কোচের ডে আউট টোটকায় চাঙ্গা ইস্টবেঙ্গল। দেখার শুধু এই ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় কী হাল হয় চার্চিলের।
The post লিগের খরা কাটাতে চার্চিলের বিরুদ্ধে জয়ই লক্ষ্য ইস্টবেঙ্গলের appeared first on Sangbad Pratidin.