দুলাল দে: হয়তো কাকতালীয়। কিন্তু ঘটনাটা ঘটল। মঙ্গলবারই ইস্টবেঙ্গল কর্তারা ক্লাবের কার্যকরী কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন, ভাল দল গড়ার অনুরোধ করে চিঠি দেওয়া হবে বিনিয়োগকারী সংস্থা ইমামিকে। আর সেদিনই কথাবার্তা মোটামুটি পাকা হয়ে গেল হায়দরাবাদ এফসির স্ট্রাইকার জাভি সিভেরিওর সঙ্গে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে শুক্রবারের মধ্যেই লাল-হলুদের চুক্তিপত্রে সই করে দেবেন তিনি। সেক্ষেত্রে সামনের মরশুমে লাল-হলুদ জার্সিতে ক্লেটনের সঙ্গে ‘সেকেন্ড স্ট্রাইকার’ হিসাবে দেখা যাবে এই সিভেরিওকে।
এই মরশুমে বিদেশি ফুটবলার নির্বাচন করতে গিয়ে ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) ইমামি কর্তারা প্রাথমিকভাবে যে হিসাব কষেছেন, তাতে গত মরশুম থেকে ক্লেটন আর ইভান রয়েছেন। বাকি চারটি জায়গায়- ফরোয়ার্ডে ক্লেটনের সঙ্গে একজন স্ট্রাইকিং পার্টনার। একজন ডিফেন্ডার। দু’জন মিডফিল্ডার। যার মধ্যে একজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। এই হিসাবে দল গড়তে নেমে প্রথমেই ক্লেটনের স্ট্রাইকিং পার্টনারের খোঁজে নেমে পড়েন লাল-হলুদ কর্তারা। বেশ কয়েকজন বিদেশি স্ট্রাইকারের নাম ঠিক করে কোচ কুয়াদ্রাতের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তার মধ্যে থেকেই হায়দরাবাদের স্ট্রাইকার জাভি সিভেরিওকে ঠিক করা হয়।
[আরও পড়ুন: বাংলায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’র পরোক্ষ প্রভাব পড়লেও কমবে না গরম, কবে বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গে?]
জাভি সিভেরিওকে ঠিক করার ক্ষেত্রে যে পয়েন্টগুলি ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা হল, হায়দরাবাদের হয়ে দু’টি মরশুমে ৪৫টি ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ১২টি। প্রথম মরশুমে ৭টি। শেষ মরশুমে ৫টি। তারমধ্যে গোল রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধেও। শুধু হায়দরাবাদ এফসির হয়েই নয়, ৬ ফুট উচ্চতার এই স্প্যানিশ তারকা যখন স্পেনের দ্বিতীয় ডিভিশনের দল রায়ো কান্তাব্রিয়াতে খেলতেন, সেই দলের হয়ে গোলের গাড়ি ছুটিয়েছিলেন। ৪৮টি ম্যাচ খেলে করেছিলেন ৪০টি গোল। ফলে সিভেরিওর গোল করার দক্ষতা নিয়ে ইস্টবেঙ্গল কোচ থেকে কর্তাদের মধ্যে সামান্যতম সন্দেহের অবকাশ নেই। সঙ্গে থাকবেন আবার ক্লেটন। ফলে সামনের মরশুমে ইস্টবেঙ্গলের স্ট্রাইকার লাইনে ব্রাজিল-স্প্যানিশ স্ট্রাইকার জুটি যে গোলের ঝড় তুলবে, বলাইবাহুল্য।
তাছাড়া সিভেরিওকে বেছে নেওয়ার আরও একটি বড় কারণ হল, স্প্যানিশ স্ট্রাইকারটির বয়স। আইএসএলে যেখানে অনেক বেশি বয়সের বিদেশি ফুটবলাররা খেলতে আসেন, সেখানে জাভি সিভেরিওর বয়স মাত্র ২৫। এদিনই কথাবার্তা পাকা হয়ে যাওয়ার পর আশা করা যাচ্ছে, শুক্রবারের মধ্যে লাল-হলুদের চুক্তিপত্রে সই করে দেবেন স্প্যানিশ স্ট্রাইকার। ঠিক হয়েছিল, এদিনই সই করে দেবেন। কিন্তু চুক্তিপত্রের বেশ কয়েকটি শর্ত নিয়ে ইস্টবেঙ্গল এবং জাভি সিভেরিওর মধ্যে এখনও টানাটানি চলছে। যে কারণে শেষপর্যন্ত সইটা আর হয়ে ওঠেনি। তবে লাল-হলুদ কর্তারা আশাবাদী, শুক্রবারের মধ্যেই বাকি শর্তগুলো নিয়ে এক জায়গায় চলে আসবে দুই পক্ষ। সিভেরিও পাকা হয়ে যাওয়ার পর এখন বাকি তিনজন বিদেশি ফুটবলারের খোঁজে লাল-হলুদ কর্তারা। পাশাপাশি কয়েকজন ভারতীয় ফুটবলারের সঙ্গেও চুক্তির ব্যাপারটা পাকা হয়ে গিয়েছে। তবে আলাদা করে কোনও ফুটবলারের চুক্তির বিষয়টি এই মুহূর্তে ঘোষণা করতে চাইছে না ইস্টবেঙ্গল। পরিকল্পনা হল, বেশ কয়েকজনকে সই করিয়ে একসঙ্গে ফুটবলারদের নাম ঘোষণা করা।
[আরও পড়ুন: কর্ণাটকে ভোটের পর ভোটাররা পাবেন বিনামূল্যের খাবার, অনুমতি দিল হাই কোর্ট]
ডুরান্ড শুরু হচ্ছে ২৪ জুলাই। ইস্টবেঙ্গল কর্তারা তাই চেষ্টা করছেন, জুনের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যেই কোচ কুয়াদ্রাতকে কলকাতায় নিয়ে আসতে। ইচ্ছে, প্রি-সিজন ট্রেনিং করানোর জন্য দলের স্প্যানিশ কোচকে বেশ কিছুদিন সময় দেওয়া। কারণ এবার শুধু আইএসএল নয়, ডুরান্ড থেকেই ভাল ফল করতে চাইছে ইস্টবেঙ্গল। সেই কারণেই মরশুম শেষ হওয়ার আগেই পরের মরশুমের কোচ নির্বাচন করতে নেমে পড়েছিলেন কর্তারা। আর দলবদলের কাজও করা হচ্ছে সেভাবে। সমস্যা একটাই। ভাল মানের ফ্রি ভারতীয় ফুটবলার পাওয়া যাচ্ছে না। আর যাঁদের পাওয়া যাচ্ছে, এমন ট্রান্সফার ফি চাইছে ক্লাবগুলি, হাত দিতে পারছেন না ইমামি কর্তারা। তবুও চেষ্টা চলছে এর মধ্যেই ভাল দল গড়ার।