নব্যেন্দু হাজরা: যাত্রী নিয়ে এক মাস ছোটা হয়ে গেল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর। দু’-একটি ঘটনা বাদ দিলে মেট্রো চলাচলে মোটামুটি কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু মেট্রো ঠিক ছুটলেও যাত্রীসংখ্যার হাল খুব খারাপ। এক মাস কেটে যাওয়ার পর মেট্রোর হিসেব বলছে নয়া মেট্রোয় দিনে গড়ে যাত্রী উঠেছে মাত্র সাড়ে পাঁচ হাজার।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবার উদ্বোধন করে রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। যাত্রী নিয়ে ট্রেন ছোটা শুরু করে ১৪ ফেব্রুয়ারি। মেট্রো সূত্রে খবর, ওই দিন থেকে থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত নয়া মেট্রোয় যাত্রী চড়েছেন ১ লক্ষ ৬৬ হাজার। যেখানে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় বর্তমানে রোজ গড়ে ৭ লক্ষের বেশি যাত্রী চড়েন। ফলে নয়া মেট্রো চালু হলেও তা যে মানুষের মধ্যে বিশেষ জনপ্রিয় হয়নি তা বোঝা যাচ্ছে যাত্রীসংখ্যা দেখেই। এই এক মাসে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় টিকিট বিক্রি থেকে আয় হয়েছে ১৪ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা। সবমিলিয়ে নয়া মেট্রোয় প্রথম মাসের যাত্রীসংখ্যার হাল দেখে চোখ কপালে মেট্রো কর্তাদের।
[ আরও পড়ুন: করোনার প্রভাবে পিছোচ্ছে পুরভোট? চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে কমিশনে আজ সর্বদল বৈঠক ]
তবে তাঁদের দাবি, ফুলবাগান পর্যন্ত পরিষেবা চালু হলে যাত্রীসংখ্যা অনেকটাই বাড়বে। এই পাঁচ স্টেশনে মানুষ যে ‘জয় রাইড’ করবে তেমনটাই আশঙ্কা করেছিলেন তাঁরা। আর সেটাই হয়েছে কার্যত। মাস দু’য়েকের মধ্যেই তাই সেক্টর ফাইভ থেকে ফুলবাগান পর্যন্ত ট্রেন চালাতে চাইছে কর্তৃপক্ষ। কারণ ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রোর অপারেটিং রেশিও এবং আনুষঙ্গিক খরচ বর্তমানের উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর থেকে অনেকটাই বেশি। কিন্তু সেই তুলনায় যাত্রী হচ্ছে না সেখানে। খরচ বাড়ছে দিন দিন।
সেক্টর ফাইভ থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত সকাল আটটা থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে। চলছে কুড়ি মিনিট অন্তর। মাঝে রয়েছে করুণাময়ী, সেন্ট্রাল পার্ক, সিটি সেন্টার এবং বেঙ্গল কেমিক্যাল স্টেশন। কিন্তু নয়া মেট্রোয় অফিসবাবু থেকে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী কেউই বিশেষ চড়ছেন না। কার্যত ‘জয় রাইড’ হয়ে দাঁড়িয়েছে তা। মূলত সিটি সেন্টার ওয়ান, সেক্টর ফাইভ, এই দুই স্টেশনেই ওঠানামা করছেন যাত্রীরা। কিন্তু এই কিছু যাত্রী দিয়ে বিশেষ আয় হচ্ছে না মেট্রোর।
[ আরও পড়ুন: পেটিএমের KYC আপডেটের নামে জালিয়াতি, ব্যাংক থেকে উধাও লক্ষাধিক টাকা ]
কেএমআরসিএল–সূত্রে খবর, তাই ফুলবাগান স্টেশনে পরিষেবা নিয়ে যাওয়াই এখন প্রধান লক্ষ্য মেট্রোর। প্রথম ধাপে সেই কারণেই চালু করা গেল না। কিন্তু যেহেতু প্রথম ফেজের ট্রেন চালু হয়ে যাচ্ছে। তাই ছাড়পত্র এসে গেলে আর একটি স্টেশনে পরিষেবা বাড়াতে কোনও বেগ পেতে হবে না। তেমনটাই জানাচ্ছেন কর্তারা। কিন্তু যাত্রীসংখ্যা এতটা কম হবে, তেমনটা কী আশা করেছিলেন? জবাবে মেট্রোর এক আধিকারিক জানান, দিনে অন্তত হাজার দশেক যাত্রী হবে ধরা হয়েছিল। কিন্তু প্রথম এক মাসে যাত্রী মেরেকেটে পাঁচ হাজার হয়েছে। তবে ফুলবাগান পর্যন্ত চালু হলে আশা করা যায় এমন অবস্থা বদলে যাবে। কারণ ফুলবাগানে অনেকগুলি অটোরুট রয়েছে। গিরিশ পার্ক, এমজি রোড, উল্টোডাঙা, শিয়ালদহ থেকে অটো যায় সেখানে। তাই যাত্রীরা অটোয় করে সেখানে গিয়ে দ্রুত পৌঁছে যেতে পারবেন গন্তব্যে। কিন্তু এখন যাত্রীদের এই মেট্রো খুব একটা প্রয়োজন হচ্ছে না। তাই প্রায় ফাঁকাই রোজ ছুটছে ঝাঁ চকচকে নয়া রেক।
The post প্রত্যাশার তুলনায় যাত্রী সংখ্যা কম, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো যেন ‘জয় রাইড’ appeared first on Sangbad Pratidin.