সুব্রত বিশ্বাস: পুজোর আগে হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশনে ‘হাই এলার্ট’ জারি করল পূর্ব রেল। অপরাধ দমনের পাশাপাশি এবার লাইনের ধারের পুজোর জন্য যাতে কোনওরকম দুর্ঘটনা না ঘটে সেই জন্য করা হয়েছে বিশেষ পদক্ষেপ। দুর্ঘটনা এড়াতে পুজো প্যান্ডেলগুলোর আশপাশে চব্বিশ ঘণ্টার জন্য প্রহরায় থাকবে আরপিএফ বা রেলরক্ষী বাহিনী।
এই বিষয়ে পূর্ব রেলের আরপিএফের আইজি পরমশিব বলেন, “বেশ কয়েক বছর আগে দশেরার অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে পাঞ্জাবে ৫৯ জন ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান। ছোটো বড় কোনও রকমের দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য আগাম সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার থেকেই নাশকতা রুখতে শুরু হয়েছে ‘অ্যান্টি স্যাবোতাজ’ চেকিং। জোর দেওয়া হয়েছে মাদক মিশ্রিত খাবার খাইয়ে যাত্রীদের লুঠপাটের ঘটনা রোখার দিকে।”
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার প্রথম রাতেই হাওড়া ৬-৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করে আরপিএফ। ধৃত মহম্মদ মাসুম বিহারের বেগুসরাইয়ের বাসিন্দা। যাত্রীদের মাদক মিশ্রিত ঠান্ডা পানীয় খাওয়ানোর চেষ্টা করার সময় তাকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে প্রচুর মাদকজাতীয় ট্যাবলেটও উদ্ধার করা হয়। এখন পুজোর ভিড়ে এই ধরনের দুষ্কর্ম বাড়ছে বলে জানিয়েছে আরপিএফ।
[আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতির টাকা ব্যবসায় বিনিয়োগ? তথ্যের খোঁজে নদিয়ায় জোর তল্লাশি]
অপরাধ আটকাতে হাওড়া, শিয়ালদহের মতো বড় স্টেশনগুলোতে সিসিটিভিতে নজারদারি বাড়ানো হয়েছে। ভিড়ে সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি দাগী অপরাধীদের ফটো টাঙানো হয়েছে। যাতে অপরাধীদের আগাম চিনে রাখতে পারেন যাত্রীরা। মহিলাদের সব ধরনের সহযোগিতার জন্য আরপিএফের ‘মেরি সহেলি’ বিভাগ সক্রিয় থাকছে। একই সঙ্গে পরিচ্ছন্নতার দিকেও নজর রাখছে রেলের স্বাস্থ্যবিভাগ। যাত্রীদের সহযোগিতায় একাধিক হেল্প ডেস্ক থাকবে বড় স্টেশনগুলোতে। ঢোকা ও বেরনোর জন্য স্টেশনের দ্বারগুলোকে প্রশস্ত রাখা হবে। হাওড়া সাবওয়ের বন্ধ লেনগুলোর সঙ্গে শিয়ালদহ স্টেশনের বন্ধ গেটও পুজোর দিনগুলোতে খুলে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, চুরি যাওয়া চব্বিশটি মোবাইল উদ্ধারের পর তা মালিকদের হাতে ফিরিয়ে দিল হাওড়া জিআরপি। বুধবার ‘ফিরে পাওয়ার আনন্দ’ নামের এক অনুষ্ঠানে জিআরপির ওসি সিদ্ধার্থ রায় চব্বিশজনের হাতে মোবাইল তুলে দেন। এনিয়ে তিনি জানান, মুম্বই, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও দিল্লি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে চোরাই মোবাইলগুলো। এসওজি সহযোগিতা ও নিজেদের সূত্র মারফত এই মোবাইলগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। ফেরত পাওয়া মোবাইলগুলোর মালিকদের মধ্যে যেমন রয়েছে পড়ুয়া, তেমন রয়েছেন সওদাগরি অফিসের কর্মী এমনকি হাওড়া স্টেশনের মহিলা টিকিট পরীক্ষকও। খোয়া যাওয়া মোবাইল ফেরত পেয়ে ওই টিকিট পরীক্ষক আনন্দের সঙ্গে জানান, “মনে হচ্ছে পুজোর উপহার পেলাম। জানতাম ফোন আর ফিরে পাব না। কিন্তু পুলিশের তৎপরতায় তা পেলাম।” ঠিক দুদিন আগে একইভাবে চুরি যাওয়া দশটি মোবাইল উদ্ধার করে মালিকদের হাতে তুলে দেয় বেলুড় জিআরপি থানা।