প্রথম সিনেমার প্রথম শট কিংবদন্তি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। এখনও সেই কথা মনে পড়লে শিহরিত হয়ে ওঠেন বিদ্যা বালান (Vidya Balan)। প্রয়াত অভিনেতার স্মৃতিচারণায় এককালের সহ-অভিনেত্রী। শুনলেন ইন্দ্রনীল রায়।
প্রশ্ন: ২০০৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘ভাল থেকো’। কিংবদন্তি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে নবাগতা বিদ্যা বালনের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
বিদ্যা বালান: হ্যাঁ, সৌমিত্রদার সঙ্গে কেরিয়ার শুরু করেছিলাম। আমার প্রথম ছবি ‘ভাল থেকো’র প্রথম দৃশ্য সৌমিত্রদার সঙ্গেই ছিল। জ্যাঠামশাইয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। পরিষ্কার মনে আছে আমার, খুব নার্ভাস ছিলাম। অবশ্যই ‘দ্য লেজেন্ড’ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের (Soumitra Chatterjee) কথা শুনেছিলাম। ‘চারুলতা’, ‘কাপুরুষ মহাপুরুষ’-এর মতো ছবি দেখেছিলাম আমি। ভাবছিলাম, ও মাই গড! আমি সেই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করব, যিনি সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Ray) ১৪টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। ভাবতে পারছেন এত বড় মাপের অভিনেতা। অথচ উনি সেটে কি সাদাসিধে ভাবেই না এসেছিলেন। পরিচালক গৌতমদা আমাদের সিন বোঝালেন। আর প্রথম টেকেই হয়ে গেল। আমি তো অবাক। মানে? হয়ে গেল? কী সহজ ছিল! এই সহজ বিষয়টাই ওনার মধ্যে ছিল। শুধু অন ক্যামেরা নয়, অফ ক্যামেরাতেও। ছিল বিনম্রতা। ওনার আত্মার শান্তি কামনা করি।
প্রশ্ন: সত্যিই কত কিছুই না শেখার আছে!
বিদ্যা বালান: জানেন তো! যখন আপনি এমন কোনও মানুষের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাবেন বুঝবেন খ্যাতির সঙ্গে ভারসাম্য রেখে খুব সহজেই চলা যায়। তা আলাদা করে দেখানদারির প্রয়োজন হয় না। এমন একজন ব্যক্তিত্ব, যাঁর প্রতি এমনিতেই সম্মান জাগবে। ভেবেছিলাম ওনার সঙ্গে আবার কাজ করার সুযোগ পাব, কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় তা আর হয়নি। তবে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের ৮০তম জন্মদিনে ফোনে তাঁর ইন্টারভিউ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। দারুণ ছিল সেই অভিজ্ঞতা। সারা জীবনের সম্পদ হয়ে থাকবে।
[আরও পড়ুন: বাড়ির আউট হাউসকেই স্টুডিও বানিয়ে ফেলেন সৌমিত্র, শেষ জীবনে এঁকেছিলেন একাধিক ছবি]
প্রশ্ন: অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কোন বিষয়টি আপনাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করে?
বিদ্যা বালান: নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারব না। তবে ওই যে বললাম, একটা সহজাত বিষয় ছিল ওঁর মধ্যে। কোনও কিছু বাড়তি ছিল না। এক্কেবারে সঠিক পরিমাণে, তবে পরিকল্পিত নয়।
প্রশ্ন: ‘ভাল থেকো’র পর তো বাকিটা ইতিহাস। নবাগতা বিদ্যা বালান যখন বলিউড স্টার তখন দেখা হয়েছিল?
বিদ্যা বালান: কিছু বছর আগে দেখা হয়েছিল। সেই বছর আমি ‘দ্য ডার্টি পিকচার’-এর জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলাম। দারুণ খুশি হয়েছিলাম, কারণ আমার সফর ওনার সঙ্গে শুরু হয়েছিল। কী ভাল আর প্রাণবন্ত মানুষ ছিলেন! সেই সাক্ষাৎ আমার মনে আজীবন রয়ে যাবে।