স্টাফ রিপোর্টার: এসএসসি নিয়োগ (SSC Scam) দুর্নীতিতে চাকরিপ্রার্থীদের সুপারিশ তালিকা পাঠিয়েছেন অন্তত ৮৫ জন কাউন্সিলর। এ ছাড়াও বহু বিধায়ক, এমনকী, কয়েকজন মন্ত্রীও চাকরিপ্রার্থীদের সুপারিশ তালিকা পাঠিয়েছেন বলে অভিযোগ কেন্দ্রীয় এজেন্সির গোয়েন্দাদের।
এদিকে, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় সোমবার ফের জেল হেফাজতে গেলেন মানিক ভট্টাচার্যর স্ত্রী ও ছেলে। এদিন ব্যাঙ্কশালে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের বিশেষ আদালতে হাজিরা দেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য ও ছেলে শৌভিক ভট্টাচার্য। তাঁদের পক্ষের আইনজীবী কোনও জামিনের আবেদন করেননি। ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি আদালতে আবেদন জানিয়ে বলেন, ইতিমধ্যে মানিক ভট্টাচার্যর স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য ইডি আদালতের দেওয়া আগের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে গিয়েছেন। তাই ইডি-র পক্ষ থেকে দু’জনের দীর্ঘমেয়াদি জেল হেফাজতের আবেদন করা হয়। মানিকের স্ত্রী ও ছেলেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
[আরও পড়ুন: কলকাতার পথে অনুব্রত, দোলেই কি দিল্লি যাত্রা কেষ্টর?]
এদিকে, এসএসসির শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই (CBI) ও ইডির (ED) হাতে এসেছে প্রচুর সংখ্যক সুপারিশপত্র। এ ছাড়াও যে যে পথে দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা পাচার হয়েছে, তার সন্ধান চালাচ্ছে ইডি ও সিবিআই। সম্প্রতি এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহার দক্ষিণ কলকাতার সন্তোষপুরের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে সিবিআই বিপুল টাকা ও সোনা উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে অন্তত দেড় হাজার চাকরিপ্রার্থীর তালিকা উদ্ধার করে। একইভাবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, হুগলির যুবনেতা কুন্তল ঘোষ, মানিক ভট্টাচার্য, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকেও উদ্ধার হয়েছিল চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা। আবার উদ্ধার হয় প্রচুর সুপারিশপত্রও।
সেই সূত্র ধরেই তদন্ত চালিয়ে সিবিআই ও ইডি জানতে পারে যে, কলকাতা ও বিভিন্ন জেলার প্রভাবশালীরা চাকরিপ্রার্থীদের নামে সুপারিশ পাঠিয়েছিলেন। গোয়েন্দাদের দাবি, বিভিন্ন জেলার পুরসভা ও কলকাতা পুরসভার অন্তত ৮৫ জন কাউন্সিলর সুপারিশপত্র পাঠিয়েছেন প্রভাবশালীদের। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন শান্তিপ্রসাদ সিনহা, আবার কয়েকজন সরাসরি কুন্তল ঘোষকেও পাঠান সুপারিশের চিঠি ও তার সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা। একইভাবে এই তালিকায় রয়েছেন কয়েকজন বিধায়ক। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন মন্ত্রীও রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। যদিও ওই সুপারিশ অনুযায়ী সব প্রার্থী চাকরি পাননি। কিন্তু চাকরি দেওয়ার টোপ দিয়ে ওই প্রার্থীদের কাছ থেকে প্রভাবশালীরা টাকা নিয়েছেন কি না, সেই তথ্য জানার চেষ্টা করছে সিবিআই ও ইডি। সেই সূত্র ধরে ওই তালিকায় থাকা কাউন্সিলর ও বিধায়কদের তলব করে জেরা করা হতে পারে বলে জানিয়েছে সিবিআই ও ইডি।