রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: সিবিআইয়ের (CBI)সঙ্গে রাজ্য সরকারের ‘সেটিং’ তত্ত্ব খাঁড়া করে নয়া বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। রবিবারই কলকাতায় কেন্দ্রের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, সিবিআইয়ের সঙ্গে সেটিং হয়ে গিয়েছিল। অর্থমন্ত্রক বুঝতে পেরে এখানে ইডিকে (ED) পাঠিয়েছে দুর্নীতি মামলার তদন্তের জন্য। তাঁর এই মন্তব্য আসলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অপমান এবং তার কাজের উপর অনাস্থা প্রকাশ বলেই মনে করছিল তৃণমূল-সহ ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। তবে একদিন পরও দিলীপ ঘোষ কিন্তু নিজের বক্তব্য থেকে সরলেন না একচুলও। উলটে সাফাই দিলেন। সোমবারও তাঁর মত, সিবিআইকে বিশ্বাস করে ন্যায় পাননি। তাই বিশেষ ভরসা করেন না। ইডি-ই এখন সবচেয়ে বেশি ভরসাযোগ্য।
সোমবার নিউটাউনের (New Town) ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে গিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এটা তাঁর একেবারে ধরাাবাঁধা রুটিন। আর এই সময়ে তাঁকে বেশ হালকা মেজাজে দেখা যায়। যে কোনও প্রশ্নের উত্তরই দেন হাসিমুখে। এদিনও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। রবিবার তাঁর নিজেরই বলা কথা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন সাংবাদিকরা। সুযোগ পেয়েই তাঁর কাছ জানতে চাওয়া তাঁর নিজের মুখের কথার ব্যাখ্যা। বললেন, ”সিবিআই দেশের সর্বোচ্চ তদন্তকারী সংস্থা। আমরা বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু ন্যায় পাইনি। ভোটের পর আমাদের ৬০ জন কর্মী মারা গিয়েছেন। কোর্ট বলেছিল সিবিআইকে, তদন্ত করে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে। কিন্তু সিবিআই তো এফআইআরই দায়ের করতে পারল না। তুলনায় ইডি অনেক ভাল কাজ করেছে। প্রমাণ করে দিয়েছে, তারাই সবচেয়ে বিশ্বস্ত এজেন্সি।”
[আরও পড়ুন: ‘পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলব’, গেট খুলতে দেরি হওয়ায় নিরাপত্তারক্ষীকে বিশ্রী গালি, কলার ধরে মার মহিলার]
রবিবার কলকাতা অনুষ্ঠানে দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) মুখে শোনা গিয়েছিল, “আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত হলেও এফেক্ট পড়ছিল না। গত কয়েক বছর ধরে বাংলায় সিবিআইয়ের সঙ্গে সেটিং করা হচ্ছিল। অর্থমন্ত্রক বুঝতে পেরে ইডিকে পাঠিয়েছে।” ইডির তদন্ত নিয়ে অনেকের আপত্তি রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন খড়গপুরের বিজেপি সাংসদ। তাঁর কথায়, “ইডি পোষ মানবে না, কামড়াবে। যারা সেটিং করেছে তাঁরাই এখন ইডির তদন্ত নিয়ে আপত্তি করছে। আদালতে যাচ্ছে। প্রশ্ন করছে, কেন ইডি তদন্ত করবে?”
[আরও পড়ুন: প্রোমোটিং বিবাদে নারকেলডাঙায় অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি, গুরুতর অসুস্থ বধূ]
এর পালটায় তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “দিলীপদা কহি পে নিগাহে, কহি পে নিশানা করলেন না তো? কোথাও শুভেন্দুর সঙ্গে সিবিআইয়ের সেটিং করে গ্রেপ্তারি এড়ানোর প্রশ্ন তুলে দিলেন না তো?” এরপর সোমবারও ফের সিবিআইয়ে অনাস্থা প্রকাশ করেন বিজেপি সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের মত, এসএসসি দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তারির জন্য ইডির প্রশংসায় মুখর হন দিলীপ, তবে তাঁকে এও মনে রাখতে হবে, অনুব্রত মণ্ডলও কিন্তু গরু পাচার মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে।