shono
Advertisement

Breaking News

Artificial Rain

দূষিত রাজধানীর প্রাণভোমরা কৃত্রিম বৃষ্টিপাত, বিপদ আরও বাড়বে না তো?

শ্বাসরুদ্ধ দিল্লিকে বঁাচাতে এই সিদ্ধান্ত আদৌ কার্যকর হবে তো?
Published By: Biswadip DeyPosted: 04:16 PM Nov 21, 2024Updated: 04:16 PM Nov 21, 2024

কৃত্রিম বৃষ্টিপাত এখন দূষিত রাজধানীর প্রাণভোমরা। ‘ওয়েদার মডিফিকেশন’-এর মধ্যেও বিপদ লুকিয়ে নেই তো?

Advertisement

ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর কুখ‌্যাত আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণের চক্রান্ত, ‘অপারেশন পপাই’, আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল একদা। আবহাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করবে রাষ্ট্র– এই ভাবনাই আতঙ্ক দিতে পারে অনেককে। কিন্তু ‘ওয়েদার মডিফিকেশন’-এর শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই– এমন অবস্থায় পৌঁছলে রাষ্ট্ররই-বা কী করার থাকে?

দিল্লিতে সাম্প্রতিক দূষণ মাত্রাছাড়া অবস্থায় পৌঁছনোর পর কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের চিন্তা শুরু হয়েছে সরকারি তরফেই। কয়েক বছর আগে দিল্লির সরকারের তরফে এই আবেদন করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। কিন্তু লাল ফিতের ফাঁসে আটকে গিয়েছিল সেই প্রয়াস। এবারে অবশেষে কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের আশ্রয় নিতে হয় কি না, তা সময় বলবে।

পরিবেশ বঁাচানোর উপায় হলেও এই কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের সিদ্ধান্তর সঙ্গে কিন্তু আশঙ্কা ও হতাশা জুড়ে থাকছেই। সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার বোর্নিও দ্বীপের কাছে ‘নুসানতারা’ নামে এক নতুন রাজধানী পত্তনের কাজে বাধা হয়ে দঁাড়াচ্ছিল অতিবৃষ্টি। তা ঠেকাতে নুসানতারার আগেই বৃষ্টি ঝরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেখানকার সরকার। ৫ জুলাই ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর উত্তর সম্পাদকীয় স্তম্ভে এই বিষয়ক লেখায় বিমান নাথ উল্লেখ করেছিলেন বিজ্ঞানীদের এই সংক্রান্ত আশঙ্কার কথাও। এই বলপূর্বক, মনুষ‌্যসৃষ্ট বৃষ্টিপাতে কি পরিবেশ অন‌্য কোনওভাবে বিগড়ে যাবে? সেই সম্ভাবনা এড়িয়ে যাওয়াও যাচ্ছে না। আর ইন্দোনেশিয়ায় অতিবৃষ্টি ঠেকাতে যে-সিদ্ধান্ত নেওয়া, শ্বাসরুদ্ধ দিল্লিকে বঁাচাতে সেই সিদ্ধান্ত– আদৌ কার্যকর হবে তো?

দেশের রাজধানীর এই অবস্থা আজকের নয়। বার বার দূষণ, শীতকালীন কুয়াশার বাড়বাড়ন্ত এই শহরকে প্রায় জরাগ্রস্ত করে তুলেছে। রাজনৈতিক চাপানউতোর পেরিয়ে এই পরিস্থিতি থেকে দিল্লিবাসীকে বঁাচানোর ভাবনাও এবার ভাবা প্রয়োজন। তাই তার জন‌্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতেই হবে। কিন্তু ‘ওয়েদার মডিফিকেশন’-এর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পরিবেশবিদদের সঙ্গে এই নিয়ে যথেষ্ট কথা বলার প্রয়োজন আছে কি না, তা-ও ভাবা দরকার। কোভিড অতিমারীর পর থেকেই নানাভাবে এই সম্ভাবনার কথা উঠে এসেছিল, এই বিপর্যয় কৃত্রিম কি না।

বিজ্ঞানের প্রয়োগ যত বেড়েছে, এই সম্ভাবনা ততই আর কেবল ‘কনস্পিরেসি থিওরি’ বা ষড়যন্ত্র তত্ত্বে সীমাবদ্ধ থাকেনি। আমরা ক্রমে পৌঁছে গিয়েছি এমন এক সময়ে, যেখানে কল্পবিজ্ঞান আর বাস্তবের মধে‌্য ফারাক ক্রমে কমছে। তাই সায়েন্স ফ‌্যান্টাসি জাতীয় সাহিত‌্য-সিনেমায় যে বিপদের আভাস এত বছর আমরা পেয়ে এসেছি এত বছর, তা যাতে সত‌্য না-হয়ে ওঠে, তা-ও দেখা বা বিবেচনা প্রয়োজন।

‘জুরাসিক পার্ক’-এ ডাইনোসরদের বিবর্তনের উলটো মুখে ফিরিয়ে আনার প্রকল্পে হয়তো শুভ ইচ্ছা ছিল, কিন্তু এই ছবির সেই বিখ‌্যাত সংলাপের মতোই বলতে হয়– ‘লাইফ ফাইন্ডস আ ওয়ে’। পরিবেশ তার নিজের রাস্তা নিজে বেছে নেবেই, মানুষেরই কি উচিত নয়, ধ্বংস থেকে বিরত থাকা?

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • কৃত্রিম বৃষ্টিপাত এখন দূষিত রাজধানীর প্রাণভোমরা।
  • ‘ওয়েদার মডিফিকেশন’-এর মধ্যেও বিপদ লুকিয়ে নেই তো?
  • শ্বাসরুদ্ধ দিল্লিকে বঁাচাতে এই সিদ্ধান্ত আদৌ কার্যকর হবে তো?
Advertisement