shono
Advertisement
Bangladesh

বাংলাদেশ ও পাক সংকটে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থান কী হওয়া উচিত?

প্রতিবেশী দুই দেশের অস্থির পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।
Published By: Biswadip DeyPosted: 03:53 PM Dec 03, 2024Updated: 07:28 PM Dec 03, 2024

ভারতের পূর্ব-পশ্চিমে দুই প্রতিবেশী দেশ– বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক অস্থির পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার এই অংশেও আঞ্চলিক চ‌্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শান্তিরক্ষায় ভারতের উচিত ভারসাম্যমূলক এবং সক্রিয় কূটনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করা। তবেই বিপর্যয় কাটবে।

Advertisement

যদিও দুই দেশের অশান্তির কারণ ও প্রেক্ষাপট ভিন্ন, তবে উভয়ের মধ্যে সাধারণ মিলটি হল, অভ‌্যন্তরীণ শাসন-সংক্রান্ত সমস‌্যা, যা দেশগুলির নাগরিকের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের সৃষ্টি করছে। এই ধরনের অস্থির ভূ-রাজনৈতিক আবহে, ভারতকে অবশ্যই একটি ভারসাম্যমূলক এবং সক্রিয় কূটনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করতে হবে, যাতে এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা প্রচারের সময় নিজ-স্বার্থ রক্ষা হয়।

বাংলাদেশের এই অস্থিরতা হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তারি এবং পরবর্তী সহিংস বিক্ষোভের ফলে সৃষ্ট। ঘটনাটি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অনিশ্চিত পরিস্থিতি তুলে ধরেছে। মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ করতে ব‌্যর্থ। হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টানদের উপর নির্যাতন আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে।

আর এর সূত্র ধরেই এক শ্রেণির বাংলাদেশির মধ্যে প্রবল ভারত-বিদ্বেষ প্রকট হতে দেখা গিয়েছে। পাকিস্তানের পরিস্থিতি সমান ভয়ংকর, তবে তা সেই দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে। ইমরান খানের ‘পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ’ (পিটিআই) এবং শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সেনা-সমর্থিত সরকারের মধ্যে সংঘাত দেশকে পঙ্গু করে দিয়েছে। ইমরান খানের গ্রেফতার ও পিটিআই সমর্থকদের ধরপাকড় রাজনীতিতে আরও মেরুকরণ করে, ক্রমাগত প্রতিবাদকে উসকে দিয়েছে।

সেই সঙ্গে রেকর্ড উচ্চতার মুদ্রাস্ফীতি এবং পাকিস্তানের গুরুতর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে সংকট আরও বেড়েছে। উভয় দেশের অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতকে তার কৌশলগত স্বার্থ রক্ষা করার সময় উত্তেজনা বৃদ্ধি এড়াতে সতর্কতার সঙ্গে তার প্রতিক্রিয়া নির্ধারণ করতে হবে। কারণ, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে এই অস্থিরতা চলতে থাকলে, ভারত তার থেকে প্রভাবমুক্ত হয়ে থাকতে পারবে না। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের দুর্দশার কথা তুলে ধরতে ভারত রাষ্ট্র সংঘ এবং সার্ক-এর মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চের সুবিধা নিতে পারে।

দ্বিপাক্ষিক হস্তক্ষেপের ধারণা হ্রাস করে এটিকে একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ইস্যু হিসাবে তৈরি করা উচিত। অন‌্যদিকে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে, উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও, ভারতের উচিত ব্যাকচ্যানেল কূটনীতির মাধ্যমে জড়িত থাকার সদিচ্ছা, বিশেষ করে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলিতে গুরুত্ব দেওয়া দরকার।

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সংকটের সম্ভাব্য প্রভাবের মধ্যে রয়েছে উদ্বাস্তু আগমন এবং আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ। ভারতকে অবশ্যই তার সীমান্ত নিরাপত্তা এবং মানবিক সহায়তার ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে, যাতে এই ধরনের বিপর্যয়গুলি কার্যকরভাবে পরিচালনা করা যায়। তবে, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বিরোধী দলগুলিরও ভূমিকা স্পষ্ট করতে হবে। এই সময়টা আদর্শগত ভিন্নতা ভুলে সহযোগিতামূলক রাজনীতি দেখানোরও সুযোগ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ভারতের পূর্ব-পশ্চিমে দুই প্রতিবেশী দেশ– বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক অস্থির পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার এই অংশেও আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।
  • বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শান্তিরক্ষায় ভারতের উচিত ভারসাম্যমূলক এবং সক্রিয় কূটনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করা। তবেই বিপর্যয় কাটবে।
  • কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বিরোধী দলগুলিরও ভূমিকা স্পষ্ট করতে হবে।
Advertisement