বাংলাদেশের তদারকি সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস নোবেল বিজয়ী। যে-সে লোক নন তিনি। কিন্তু তিনি যদি সাহিত্য, অর্থশাস্ত্র বা বিজ্ঞানে নোবেল পেতেন এবং তাঁর দেশে অপার অত্যাচার চালাতেন হিন্দুদের উপর, সেটা এমন বিদ্রুপ, ঠাট্টা, পরিহাসের বিষয় হয়ে উঠত না। কিন্তু ইউনুস নোবেল পেয়েছেন এমন সব কর্মকাণ্ডের জন্য, এমন বার্তার জন্য, যা নাকি পৃথিবীতে ‘শান্তি’ এনেছে ভিন্ন রূপে ও মাত্রায়।
মহম্মদ ইউনুস যেভাবে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর ব্যাপক ধ্বংসলীলা ও নারকীয় অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন, তাতে মনে হয়, তিনি শান্তির পরম শত্রু এবং অশান্তির নিশ্চিত, নিরন্তর দূত। এজন্য সারা ভারত জুড়ে প্রতিবাদ গড়ে উঠেছে তঁার অপশাসন এবং হিন্দুবিদ্বেষের বিরুদ্ধে। ইতিমধে্য নরওয়ের নোবেল শান্তি কমিটির কাছে চিঠি লিখে আবেদনও করা হয়েছে, ইউনুসের নোবেল পুরস্কারটি যেন নোবেল কমিটি কেড়ে নেয়। এই মণিহার তঁারে সতি্যই না সাজে।
ইউনুস সমস্ত অনাচার, অত্যাচার, অশান্তির মধে্যও মৃদু হাসির মুখোশ পরে মিথ্যা শান্তির বাণীর নির্লজ্জ আদিখে্যতা বজায় রেখেছেন। নোবেল শান্তি কমিটি কি তঁার এই ধূর্ত বিরোধাভাস বা ডাইকোটমির সঙ্গে একমত হয়ে থাকতে পারবে? না কি সেই কমিটি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর সাহস দেখাবে যে, নোবেল প্রাইজকে এইভাবে প্রতিদিন অসম্মানিত করার অধিকার কোনও নোবেলজয়ী মানুষেরও নেই! অতএব, মাননীয় মহম্মদ ইউনুস, আপনার নোবেল প্রাইজটি দয়া করে ফেরত দিয়ে নোবেল পুরস্কারের মান-মর্যাদা-সম্মান রক্ষা করার কাণ্ডজ্ঞান দেখান। আপনি হারিয়েছেন শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কারের যোগ্যতা। আপনি নিজে থেকে এই স্বীকারোক্তিটি করে নোবেল পুরস্কারের অহমিকা, খ্যাতি ও মর্যাদা থেকে বিদায় নিন।
তবে এই সাহস ও সততা তিনি দেখাতে পারবেন না। যেমন পারেননি মায়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর বিখ্যাত নেত্রী সু-কি। তিনি এক হাতে নোবেল শান্তি পুরস্কার অঁাকড়ে রেখে, অন্য হাতে মায়ানমারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের উপর কী অকথ্য অত্যাচার চালিয়েছিলেন। রোহিঙ্গারা সেই অত্যাচারের ত্রাসে ও যন্ত্রণায় বাংলাদেশে অাশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তখন বাংলাদেশে প্রতিবাদের রবের সঙ্গে এই দাবিও গর্জে উঠেছিল যে, সু-কি’র নোবেল শান্তি পুরস্কার যেন ফেরত চায় নোবেল কমিটি।
একেই বলে ইতিহাসের ঠাট্টা বা পরিহাস। বাংলাদেশের শীর্ষ ক্ষমতার আসনে বসে থাকা নোবেল লরিয়েট ইউনুসের অত্যাচার ও অপশাসনের বিরুদ্ধেও উঠল এই দাবি, যেন তঁার নোবেল পুরস্কারও কেড়ে নেওয়া হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি শান্তির নোবেল পুরস্কারের কপট আড়াল থেকে প্রসারিত অশান্তির দাপট ও হুংকার চালিয়ে যাচ্ছেন। এবং সমস্ত লাজলজ্জা বজায় রেখে মুখে ধরে রেখেছেন অস্পষ্ট ব্যঞ্জনার এক মৃদু হাসি। ক্রমশ ঝরে যাচ্ছে, গলে যাচ্ছে, ধুলোয় মিশছে, রক্তে রাঙা হচ্ছে শান্তি-নোবেলের শুভ্র সূচিতা।
(মতামত ব্যক্তিগত)