কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা টেট-এ সফল প্রার্থীদের নিয়োগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ঘোষণার পরই তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে শিক্ষা দপ্তরে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যাতে কোনরকম বিলম্ব না হয় তার জন্য একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। এবার কাউন্সেলিং হবে অনলাইনে। এর পাশাপাশি নিয়োগের কাজ দ্রুত এবং নির্বিঘ্নে সেরে ফেলতে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই মুহূর্তে টেট সংক্রান্ত একাধিক মামলা আদালতের আওতাধীন। তবে এই বিষয়ে সঙ্গে জড়িত সব পক্ষই মনে করছে কয়েকদিনের মধ্যেই এই সংক্রান্ত রায় ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। মামলাগুলির শুনানি শেষ হয়ে গিয়েছে বলে টেট পরীক্ষার্থী সংগঠন জানিয়েছে। বাকি শুধুমাত্র রায় ঘোষণার। সামনের কয়েকদিনের মধ্যেবতা হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। টেট (TET) নিয়ে যদি স্থগিতাদেশ উঠে যায় তাহলে দ্রুত নিয়োগের কাজ সম্পন্ন করতে কোমর বেঁধে নামছে শিক্ষাদপ্তর। চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে এবার অনলাইন কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে চলছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (School Service Commission)। স্থগিতাদেশ উঠে গেলেই অনলাইনে প্রার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হবে কারা কারা কাউন্সেলিংয়ে ডাক পাবেন। এসএসসি সূত্রে খবর, প্রস্তুতির চূড়ান্ত পর্বের কাজ চলছে। কোন কোন স্কুলে কি কি বিষয়ে শূন্যপদ রয়েছে সেই তালিকাও দেওয়া হবে অনলাইনে। এবং সফল প্রার্থীদের তালিকার পাশাপাশি প্রকাশ করা হবে কারা কারা বিবেচিত হলেন। এই সংক্রান্ত সুপারিশ এসএসসির তরফে পাঠিয়ে দেওয়া হবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে। পর্ষদ মারফত নিয়োগপত্র পাবেন সফল প্রার্থীরা।
[আরও পড়ুন: আসনরফা নিয়ে জোটের স্নায়ুযুদ্ধ জারি, বাম-কংগ্রেসের ম্যারাথন বৈঠকে প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা]
শিক্ষাদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে নিয়োগ সংক্রান্ত কাজ দ্রুত সেরে ফেলতে। সেই কমিটিতে এসএসসির (SSC) দুই সর্বোচ্চ পদাধিকারী থাকছেন।রয়েছেন, শিক্ষা দপ্তরের ডেপুটি সেক্রেটারি পদমর্যাদার আধিকারিক। শিক্ষামন্ত্রী মনোনীত দুই প্রতিনিধি এবং শিক্ষা দপ্তরের আইন বিভাগের আধিকারিক এই কমিটিতে রয়েছেন। এই কমিটি নিয়োগ সংক্রান্ত খুঁটিনাটি বিষয় দেখভাল করবে এবং সেই অনুযায়ী পরামর্শ দেবে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলিকে। এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর স্বাভাবিকভাবেই খুশির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে। পশ্চিমবঙ্গ আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের সহ-সভাপতি সুশান্ত ঘোষ জানিয়েছেন, নিয়োগ সংক্রান্ত ঘোষণার পর একটি ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল কারা চাকরি পাবেন তা নিয়ে। তবে বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা খবর নিয়ে জেনেছি, নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় একটি কমিটি তৈরি হয়েছে পাশাপাশি অনলাইন কাউন্সেলিংয়ের বিষয়টিও আমাদের কানে এসেছে। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীদের কথাই নিয়োগ সংক্রান্ত ঘোষণায় ইঙ্গিত করা হয়েছিল।
উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন এবং অনলাইন কাউন্সেলিং নিয়ে এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনও ঘোষণা করা হয়নি। তবে শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অতিমারীর সময় কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া অনলাইনের মাধ্যমে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থগিতাদেশ উঠে যাওয়ার পর সেই কাজ কীভাবে দ্রুত করা যাবে তা নিয়েই চূড়ান্ত প্রস্তুতি সেরে নিতে চাইছে শিক্ষাদপ্তর।