কৃষ্ণকুমার দাস: ওপার বাংলার ‘একুশে গ্রন্থমেলা’র আদলে এবার একুশে ফেব্রুয়ারি কলকাতায় হচ্ছে ‘একুশে বই উৎসব’। আগামী ২১ তারিখ, রবিবার থেকেই দক্ষিণ কলকাতার তালতলা মাঠে এই মেলা চলবে টানা আটদিন। প্রতি বছর ‘কলকাতা আন্তর্জাতিক পুস্তকমেলার’ মতো একুশে বই উৎসবেরও উদ্যোক্তা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড (Publishers’ and Book sellers’ guild)। বিশেষ সহযোগিতায় রয়েছে কেএমডিএ ও যোধপুর পার্ক উৎসব কমিটি।
২০০৯ সালে ময়দান থেকে আন্তর্জাতিক পুস্তক মেলা সরে যাওয়ার পর এই প্রথম দক্ষিণ কলকাতায় বইমেলা হচ্ছে। গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, “একুশে বই উৎসবের উদ্বোধনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে গ্রন্থকার তথা মুখ্যমন্ত্রীকে। মোট ৭০টি স্টল হবে। কলকাতার নামী প্রকাশন সংস্থা যেমন থাকবে তেমনই ক্ষুদ্র ও মাঝারি বহু প্রকাশক থাকবে স্টলে। প্রতিদিন দুপুর দু’টো থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত বইমেলা চলবে।” গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, এবার থেকে প্রতি বছর ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে তালতলা মাঠেই পুস্তক মেলা হবে। নয়া বইমেলাকে সফল করতে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল শুরু না হওয়ায় এ’বছর বিদেশের কেউ না আসতে পারলেও একুশে বই উৎসবের নানা সেমিনারে বাংলাদেশ উপদূতাবাসের আধিকারিক ও অন্যান্য বিশিষ্টরা অংশ নেবেন।
[আরও পড়ুন: ভোট ঘোষণার আগেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী, ফেব্রুয়ারির শেষে মোতায়েন আধাসেনা]
আমফান ও করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত প্রকাশকদের সাহায্য করার পাশাপাশি পুস্তকপ্রেমীদের কাছে গ্রন্থ পৌঁছে দিতে মহানগরের দক্ষিণে এই নয়া বইমেলা। তবে বইমেলার আলোচনার বিষয় ঘিরে বাংলা ভাষার উপর আক্রমণ ও ভাষা রক্ষার চেষ্টার নেপথ্যে রাজনৈতিক রং দেওয়ার চেষ্টা করেছেন কেউ কেউ। কিন্তু গিল্ডের সভাপতি স্পষ্ট জানান, “ভাষাশহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে মাতৃভাষা এবং নানা শব্দের অপব্যবহার নিয়েই আলোচনা হবে। এর মধ্যে কোথাও কোনও রাজনীতি নেই। বাংলা সাহিত্য ও পাঠকরাই এখানে মূল অবলম্বন।” যেমন, ২২ ফেব্রুয়ারি থাকছে – বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি কি বিপন্ন? ২৩ শে মিডিয়া কি বাংলা সাহিত্যের পাশে আছে? ২৪ শে ‘লেখক ও প্রকাশক কি যথাযথ নীতি মেনে চলছেন?’ ২৫ শে ‘কবিতার লেখক বাড়ছে, নাকি পাঠক বাড়ছে?’ ২৬ তারিখ ‘বাংলা ভাষা কি পাল্টে যাচ্ছে?’ ২৭ শে, ভাষার জন্য সংগ্রাম। ২৮ শে ‘ছোট গল্পের দিন কি শেষ?’
[আরও পড়ুন: বিধানসভা নির্বাচনের আগে রবীন্দ্রসংগীত গেয়ে জনসংযোগ মন্ত্রী গৌতম দেবের]
এছাড়াও প্রতিদিনই বইমেলার মঞ্চে আবৃত্তি ও সংগীতানুষ্ঠান থাকছে। ক’দিন আগে লিটল ম্যাগাজিনের মেলা হয়েছে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে তাই এই উৎসবে ক্ষুদ্র পত্র-পত্রিকাকে আলাদা করে জায়গা দিচ্ছে না গিল্ড।