সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: নির্দেশ ছিল সুপ্রিম কোর্টের। ইলেক্টোরাল বন্ডের সমস্ত তথ্য জমা দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। সেইমতো বৃহস্পতিবার বিকেলেই এসবিআই তথ্য জমা দেয়। অবশেষে তা প্রকাশ্যে আনল কমিশন। এই তথ্যের মধ্যে রয়েছে নির্বাচনী বন্ডের ক্রমিক সংখ্যাও।
প্রসঙ্গত, বহু বিতর্কের পর প্রকাশ্যে এসেছে ইলেক্টোরাল বন্ডের (Electoral Bond) তথ্য। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের তোপে পড়তে হয় এসবিআইকে। দেখা যায়, বার বার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও সমস্ত তথ্য প্রকাশ করছে না রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটি। তাই সম্পূর্ণ তথ্য জমা দেওয়ার নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয় শীর্ষ আদালত (Supreme Court)। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ২১ মার্চ বিকেল পাঁচটার মধ্যে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জমা দিতে হবে এসবিআইকে। সেই সঙ্গে জমা দিতে হবে বিশেষ হলফনামা। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করতে হবে, নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জমা দিয়েছে এসবিআই। সেই নির্দেশ মেনেই এদিন সব তথ্য কমিশনের কাছে জমা দেয় স্টেট ব্যাঙ্ক। আর তার পরই সেই তথ্য নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।
[আরও পড়ুন: ‘ছক করে কংগ্রেসকে গুঁড়িয়ে দিতে চাইছেন মোদি’, অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ নিয়ে তোপ সোনিয়া-খাড়গের]
ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরেই বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করেছিল এসবিআই। তা থেকে দেখা গিয়েছিল, বন্ড থেকে সবচেয়ে বেশি আয় করেছে বিজেপি (BJP)। ৬৯৮৬.৫ কোটি টাকা পড়েছে গেরুয়া শিবিরের তহবিলে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তৃণমূল (TMC)। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল মোট ১৩৯৭ কোটি টাকা পেয়েছে এই বন্ড থেকে। তৃতীয় স্থানে থাকা কংগ্রেস পেয়েছে ১৩৩৪ কোটি। তেলেঙ্গানার বিআরএসের খাতায় পড়েছে ১৩২২ কোটি টাকা। তবে বন্ডের ইউনিক নম্বর তখনও প্রকাশ্যে আসেনি। এবার কমিশন যে তথ্য প্রকাশ করল তা থেকে দাতা ও গ্রহীতা, সবাইকেই চিহ্নিত করা যাবে। অর্থাৎ কোন রাজনৈতিক দল কার কাছ থেকে কত টাকা পেয়েছে সেটা পরিষ্কার বোঝা যাবে। এর আগেও এসবিআই কমিশনকে দুটি তালিকা দিয়েছিল। যা ১৪ মার্চ প্রকাশ করেছিল কমিশন।
এদিকে বিভিন্ন সময়ে যে দাবি তুলে আসছিল বিভিন্ন বিরোধী দল, নির্বাচনী বন্ডের ইউনিক নম্বর সম্বলিত তথ্য প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে তাতে লাগতে শুরু হল সিলমোহর। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে তথ্য আপলোড হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখা গেল এক সংস্থা, যার অর্ধেক মালিকানা আম্বানিদের রিলায়েন্সের দখলে, ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ৪১০ কোটির বন্ড কিনেছে। যার ৯১ শতাংশেরও বেশি, ৩৭৫ কোটি টাকা গিয়েছে বিজেপির কাছে। বাকি টাকার মধ্যে ২৫ কোটি শিব সেনা ও ১০ কোটি পেয়েছে এনসিপি।