সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: অকাল বর্ষণের মাঝেই মিনি ফুটবল প্রতিযোগিতা চলছিল ঝাড়গ্রামে (Jhargram)। বৃহস্পতিবার রাতে ১০টা থেকে লালগেড়িয়া এলাকায় ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। বল মাঠে রেখে খেলোয়াড়রা একে একে তৈরি হয়ে নিচ্ছিলেন। এমনই সময় ছড়াল ব্যাপক আতঙ্ক। খেলোয়াড় নয়, মাঠের গোলপোস্ট ভেদ করে একেবার মাঝমাঠে গিয়ে হাজির মস্ত বড় এক দাঁতাল (Elephant)! দেখেই সকলের চক্ষুচড়কগাছ। গজরাজের অবশ্য সেদিকে হুঁশ নেই। তিনি দিব্যি ফুটবলে মজে গিয়েছেন!
ঝাড়গ্রামে লালগেড়িয়া এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতের বেলা মিনি ফুটবল (Football)প্রতিযোগিতার ঠিক আগে এভাবেই ছড়িয়ে পড়ল উত্তেজনা। মাঝমাঠে ফুটবলে মেতে ওঠা দাঁতালকে সরাতে তখন হিমশিম দশা বনকর্মীদের। এমনিতেই ফুটবল খেলা দেখার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা মাঠে ভিড় জমিয়েছিলেন। তার মধ্যে মাঠে হাতিটিকে ঢুকতে দেখে তাঁরা আতঙ্কের জেরে তাড়াহুড়ো করে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান। তবে তাকে তাড়ানোর জন্য মানুষজন আগুনের গোলা ছুঁড়ে ভয় দেখান বলে অভিযোগ, যা এখন বন সুরক্ষা আইনের আওতায় সম্পূর্ণ বেআইনি।
[আরও পড়ুন: পদ ছাড়ার আগেই সাংসদ তহবিলের বাকি টাকা মঞ্জুর বাবুল সুপ্রিয়ের, দিলেন ট্রোলের জবাবও]
এ নিয়ে মানিকপাড়া রেঞ্জের ডিএফও শেখ ফরিদ জানিয়েছেন, ”বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। কারা হাতিটিকে লক্ষ্য করে আগুনের বল ছুঁড়েছে, সেটাও জানার চেষ্টা করছি। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সবমিলিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয় রাতের বেলা। শেষমেশ অবশ্য বেশ খানিকক্ষণ পর গজরাজকে জঙ্গলে ফেরত পাঠানো হয়। দেরি করে শুরু হয় ম্যাচ।
[আরও পড়ুন: সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের সদস্য কমল আডা়ই লক্ষ! আলিমুদ্দিনকেই দায়ী করল ছাত্র নেতৃত্ব]
অন্ধকার রাস্তায় হাতি বেরিয়ে, স্থানীয় এলাকায় তাণ্ডব চালায় কিংবা দিনের বেলায় জাতীয় সড়ক বা রাজ্য সড়ক পারাপারে সময় যানবাহনের গতি রোধ করে দেয় – এই দৃশ্য পরিচিত। কিন্তু কৃত্রিম আলো দেখলে সাধারণত হাতি সেদিকে যায় না। অথচ বৃহস্পতিবার রাতে ফুটবল মাঠের অত আলোর মধ্যেও কীভাবে দাঁতালটি মাঠে ঢুকে গেল, তা ভাবাচ্ছে বনকর্মীদের। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, হাতিটি স্থানীয় এলাকায় রামলাল বলে পরিচিত। ঝাড়গ্রাম ব্লকের মানিকপাড়া রেঞ্জের স্থায়ী বাসিন্দা সে। মাঝেমধ্যেই রাস্তায় উঠে গাড়ি থামিয়ে সেখান থেকে খাবার লুট করায় তার বেশ ‘বদনাম’ আছে। সে-ই রাতের বেলা মাঠে ফুটবল খেলতে ঢুকে পড়েছিল।
এই মুহূর্তে ঝাড়গ্রামে স্থানীয় হাতি ছাড়াও রয়েছে বেশ কিছু দলমার দাঁতাল। শাবক-সহ একপাল হাতি নেমে এসেছে ঝাড়গ্রাম বনাঞ্চলে। বৃষ্টি হওয়ায় তাদের তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে বনকর্মীদের কাছে। ফলে সবমিলিয়ে ঝাড়গ্রামের জঙ্গলগুলিতে হাতিদের দাপাদাপি চলছেই। তবে ফুটবল মাঠে এই দাপটের নেপথ্যে রয়েছে স্থানীয় ‘রামলালে’র নামই উঠছে।