সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দু’দিন আগেও তিনি ছিলেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ। ‘পদ্মাবতী’ চললে সিনেমাহল পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। বনশালি এবং দীপিকার মুণ্ডচ্ছেদে ১০ কোটি টাকা ইনামও ঘোষণা করেছিলেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও নাক কাটার হুমকি দিয়েছিলেন। শেষমেশ ডানা ছাঁটা হল হরিয়ানার বিজেপি নেতা সূরজ পাল আমুর। হরিয়ানা বিজেপির দলীয় মুখপাত্রর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তিনি।
[ লস্কর জঙ্গিদের ‘বিগেস্ট সাপোর্টার’, বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি পারভেজ মুশারফের ]
‘পদ্মাবতী’ নিয়ে বিজেপি আনুষ্ঠানিক কোনও বিবৃতি দেয়নি। কিন্তু গোড়া থেকেই সরব ছিলেন বিজেপি নেতা আমু। ‘পদ্মাবতী’ বিতর্ককে তিনিই কয়েক কাঠি চড়িয়ে দেন। কিন্তু দেশের বৃহত্তম দলের জনপ্রতিনিধি হয়ে কীভাবে মুণ্ডচ্ছেদের মতো হুমকি দিতে পারেন তিনি? উঠেছিল প্রশ্ন। কিন্তু তাতেও অবশ্য থামানো যাচ্ছিল না তাঁকে। এর আগে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি একযোগে ‘পদ্মাবতী’র বিরুদ্ধে কেন্দ্রের কাছে নালিশ জানিয়েছিল। তাতে সায় ছিল পাঞ্জাব ও বিহারেরও। ‘পদ্মাবতী’র প্রদর্শনে যে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হবে এমনটাই মত তাঁদের। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার উলটো অবস্থানকে ‘পদ্মাবতী’কে বাংলায় স্বাগত জানিয়েছেন। এই চাপানউতোর চলছিলই।
[ ‘পদ্মাবতী’ নিয়ে নেতাদের এত কথা কেন, কেন্দ্রকে তোপ সুপ্রিম কোর্টের ]
পরিস্থিতি বদলায় সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার পর। মঙ্গলবারই সর্বোচ্চ আদালত সমালোচনা করে জানায়, উচ্চ পদাধীকারীরা এত কথা বলছেন কেন? ছবি যখন সেনস্ররে ছাড়পত্র পায়নি, তখন সেটি বিচারাধীন বিষয়ের মতোই। সেই সময় জনপ্রতিনিধিদের এত কথা বলা সাজে না। কেন্দ্রকে একরকম তুলোধোনাই করে দীপক মিশ্রর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। ঠিক তার পরদিনই আমুর ইস্তফা বেশ ইঙ্গিতবাহী। আমুকে ঝেড়ে ফেলে ‘পদ্মাবতী’ বিতর্ককে গা থেকে ঝেড়ে ফেলতেই উদ্যোগ বিজেপির। এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞের। ‘পদ্মাবতী’ নিয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব মুখে কুলুপ এঁটেছে। যদিও হুমকি বা পালটা হুমকির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি। কারও কারও মত, রাজপুত সম্প্রদায়ের ভাবাবেগকে কাজে লাগিয়ে হিন্দু ভোটব্যাঙ্কের দিকে নজর শাসকদলের। রাজপুত গৌরব রক্ষা তো সামনের কথা, সূত্রের খবর, নির্বাচনে লড়ার স্বপ্নে এখন বুঁদ কর্ণি সেনাও। ফলত পদ্মাবতীকে রাজনৈতিক বিতর্ক ও স্বার্থসিদ্ধি বেশ ভাল মতোই যে জড়িয়ে ধরেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ নিয়ে পরবর্তীকালে সবথেকে বেশি জবাবদিহি করতে হবে বিজেপিকেই। তাই আগেভাগেই সতর্ক শাসকদল।
যদিও পদ ছেড়ে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন আমু। জানিয়েছেন, “এমন উদ্ধত মুখ্যমন্ত্রী তিনি আগে কখনও দেখেননি। দলীয় কর্মীদেরই সম্মান করেন না মুখ্যমন্ত্রী।” ‘পদ্মাবতী’র কোপ যে বিজেপির অন্দরেও ভাল প্রভাব ফেলেছে, আমুর ক্ষোভেই তা স্পষ্ট।
The post ‘পদ্মাবতী’র কোপ বিজেপির অন্দরে, দলীয় মুখপাত্রের পদ ছাড়লেন আমু appeared first on Sangbad Pratidin.