shono
Advertisement

Lata Mangeshkar: ছোটবেলায় কী নাম ছিল লতা মঙ্গেশকরের? কেন যাননি স্কুলে? জানুন এমনই অজানা কাহিনি

বিশ্বকাপজয়ী ধোনিবাহিনীর সাফল্য কামনায় উপোস করেছিলেন লতা মঙ্গেশকর।
Posted: 02:28 PM Feb 07, 2022Updated: 02:28 PM Feb 07, 2022

সুরলোকে পাড়ি দিয়েছেন সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar)। দীর্ঘ ৯২ বছরের মহাজীবনে তিনি রেখে গেলেন চিরকালীন সম্পদ- তাঁর গান। নশ্বর জীবনকে অতিক্রম করেও যা যুগ যুগ ধরে অক্ষয় থাকবে কিংবদন্তির রেখে যাওয়া এই সম্পদ। কিন্তু প্রতিটি রক্তমাংসের মানুষের জীবনেই থাকে এমন সব কাহিনি যা শেষ পর্যন্ত অজানাই থেকে যায়। কোকিলকণ্ঠীর জীবনেও রয়েছে তেমনই আশ্চর্যজনক কিছু কাহিনি। সংকলনে  গৌতম ব্রহ্ম।

Advertisement

১) লতা মঙ্গেশকরের নাম ছিল হেমা। পরে বদলে হয় লতা। এই নামবদলের পিছনে একটি গল্প আছে। বাবা দীননাথ মঙ্গেশকরের ‘ভাও বন্ধন’ নাটকে লতিকা নামে একটি জনপ্রিয় চরিত্র ছিল। সেই লতিকা থেকেই লতা।

২) গোয়ায় মঙ্গেশি নামে একটি গ্রাম রয়েছে। সেই গ্রামের নাম অনুসারেই মঙ্গেশকর পদবি।

৩) মাত্র একদিনের জন‌্য স্কুলে গিয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর। প্রথম দিনই সঙ্গী হয়েছিল বোন আশা। স্কুলে গিয়ে লতা সহপাঠীদের গান শেখাতে শুরু করেছিলেন। তাতেই মাস্টারমশাইদের বকুনি জোটে। আর স্কুলে যাননি সুরসম্রাজ্ঞী।

৪) ১৯৪২ সালে প্রয়াত হন লতা মঙ্গেশকরের বাবা দীননাথ মঙ্গেশকর। বাড়ির বড় মেয়ে হিসাবে পরিবারের দায়িত্ব লতার উপর এসে পড়ে। উপার্জনের আশাতেই ১৯৪২-১৯৪৮, আটটি সিনেমায় অভিনয় করেন লতা।

৫) মারাঠি সিনেমা ‘কিটি হাসাল’-এ প্রথম প্লে ব‌্যাক করেছিলেন লতা। কিন্তু ফাইনাল এডিটিংয়ের সময় গানটি বাদ পড়ে।

৬) ১৯৪৮ সালে শশধর মুখোপাধ‌্যায়ের সিনেমা ‘শহিদ’-এ গান গাওয়ার কথা ছিল লতার। কিন্তু পাতলা গলা বলে শশধরবাবু লতাকে বাদ দেন। আসলে সেই সময় নুরজাহান এবং শামসাদ বেগমের মতো ‘অনুনাসিক কণ্ঠ’ জনপ্রিয় ছিল।

৭) লতা মঙ্গেশকর প্রথম ভারতীয় শিল্পী যিনি ১৯৭৪ সালে লন্ডনের র‌য়‌্যাল অ‌্যালবার্ট হলে অনুষ্ঠান করেছিলেন।

৮) ১৯৯৯ সালে রাজ‌্যসভায় মনোনীত হন লতা মঙ্গেশকর। কিন্তু সাংসদ হিসাবে তিনি কোনও অর্থ গ্রহণ করেননি। দিল্লিতে তাঁর জন‌্য বরাদ্দ বাড়িও ব‌্যবহার করেননি।

[আরও পড়ুন: জীবনের প্রথম আয় মোটে ২৫ টাকা, কত টাকার সম্পত্তি রেখে গেলেন লতা মঙ্গেশকর?]

৯) লতা মঙ্গেশকরের ডিজাইন করা হীরের গয়না এক লক্ষ পাঁচ হাজার পাউন্ডে নিলাম হয়েছিল। পুরো টাকাটাই কাশ্মীরের ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মানুষের কল‌্যাণে দান করেছিলেন তিনি।

১০) ভারতরত্ন লতা মঙ্গেশকর আরও অনেক পুরস্কারের পাশাপাশি নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি-সহ ছ’টি বিশ্ববিদ‌্যালয়ের সাম্মানিক ডক্টরেটে ভূষিত হয়েছিলেন।

১১) ১৯৩৮ সালে সোলাপুরে নূতন থিয়েটারে লতা প্রথম মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করেন। খাম্বাবতি রাগ ও দু’টি মারাঠি গান গেয়েছিলেন। পেয়েছিলেন ২৫ টাকা।

১২) ১৯৪৫ সালে প্রথম হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করেন। ছবির নাম ‘মাস্টার বিনায়ক–বড়িমা’।

১৩) তখন ফিল্মফেয়ার অ‌্যাওয়ার্ডে প্লে ব‌্যাক সিঙ্গারদের জন‌্য কোনও পুরস্কার ছিল না। লতার দাবি মেনে প্রথম এই বিভাগটি অন্তর্ভুক্ত হয় ১৯৫৮ সালে। ১৯৫৮ থেকে শুরু করে ১৯৬৬–টানা ‘বেস্ট প্লে ব‌্যাক সিঙ্গার’ পুরস্কার পান লতা। ১৯৬৯ সালে লতা জানিয়ে দেন, এই পুরস্কার নবাগত প্রতিভাদেরই দেওয়া হোক।

১৪) ১৯৯০ সালে ‘লেকিন’ সিনেমায় প্লে ব‌্যাক করার জন‌্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান ৬১ বছরের লতা মঙ্গেশকর। এত বেশি বয়সে কোনও সংগীতশিল্পী জাতীয় পুরস্কার পাননি।

১৫) অজ্ঞাতপরিচয় এক ব‌্যক্তি লতা মঙ্গেশকরের উপর বিষ প্রয়োগ করেছিল। তিন মাস বিছানায় শয‌্যাশায়ী ছিলেন শিল্পী। লতার বয়স তখন ষাট।

১৬) ‘আনন্দ ঘন’ ছদ্মনামে বহু মারাঠি গানে সুরারোপ করেছেন লতা। ১৯৫৫ সালে মারাঠি ফিল্ম ‘রাম রাম পারহাভা’-তে সংগীত পরিচালকের ভূমিকায় দেখা যায় শিল্পীকে।

১৭) শোনা যায়, লতা কখনও মেকআপ করতেন না।

[আরও পড়ুন: ‘শৈশবই ভাল ছিল!’ লতার ছবি পোস্ট করে স্মৃতিতে ভাসলেন বোন আশা ভোঁসলে]

১৮) ১৯৫২ সালে হেমেন গুপ্ত তৈরি করেন ‘আনন্দমঠ’। এই সিনেমায় ‘বন্দে মাতরম’ গানটি লতার কণ্ঠে রেকর্ড হয়। প্রথমে রাজি ছিলেন না লতা। হেমন্ত মুখোপাধ‌্যায় অনুরোধ করায় বরফ গলে।

১৯) ১৮৬টি বাংলা গান গেয়েছেন লতা। প্রথম গান সলিল চৌধুরীর সুরে ‘প্রেম একবারই এসেছিল নীরবে’।

২০) ক্রিকেট অসম্ভব ভালবাসতেন লতা। ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর ক্রিকেট খেলতেন। ভাইয়ের সূত্র ধরেই রাজ সিং দুঙ্গারপুরের সঙ্গে পরিচয়, ঘনিষ্ঠতা।

২১) লর্ডসের মাঠে লতা মঙ্গেশকরের খেলা দেখার জন‌্য একটি গ‌্যালারিতে বিশেষ দু’টি আসন সংরক্ষিত ছিল। বিসিসিআই-ও প্রত্যেকটি ক্রিকেট ম্যাচে দু’টি করে আসন কোকিলকণ্ঠীর জন‌্য সংরক্ষিত রাখত।

২২) ২০১১ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ী ধোনিবাহিনীর সাফল্য কামনায় উপোস করেছিলেন
লতা মঙ্গেশকর।

২৩) বোন আশাকে নিয়ে : দুই বোনের দূরত্ব নিয়ে বহু গল্প পল্লবিত। একটি সাক্ষাৎকারে এই নিয়ে মুখ খুলেছিলেন লতা। জানিয়েছিলেন, তাড়াতাড়ি বিয়ে করা নিয়ে আশার সঙ্গে মতানৈক‌্য হয়েছিল। কিন্তু পরে সেই সমস‌্যা মিটে যায়। বম্বেতে লতা-আশা পাশাপাশিই থাকতেন। এমনকী, দু’টি বাড়ির মধ্যে যাতায়াতের জন‌্য একটি বিশেষ দরজাও ছিল।

২৪) বিয়ে নিয়ে: বিয়ে না করা নিয়ে লতা একবার এক সাক্ষাৎকারে মুখ খোলেন। জানিয়েছিলেন, কেরিয়ারের প্রথম দিকে ভাইবোনেদের দেখভাল করতে গিয়ে বিয়ের কথা ভেবেই উঠতে পারেননি। পরে অনেক সময় একাকীত্ব অনুভব করলেও আশপাশে ভালবাসার এত মানুষ ছিল যে তা কখনও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।

[আরও পড়ুন: ‘লতা হয়ে আর জন্মাতে চাই না’, আক্ষেপ করে বলেছিলেন কিংবদন্তি, প্রকাশ্যে ভিডিও]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement