সুপর্ণা মজুমদার: কথায় বলে রাগ মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু। তবে আমার মনে হয় তার থেকেও বড় শত্রু অভিমান। কাছের সম্পর্কটিকেই দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়। মাঝখানে রয়ে যায় গভীর ক্ষত। যেতে তো পারি কিন্তু কেন যাব? ‘সরি’ বলতে তো পারি কিন্তু কেন বলব? এই ‘কেন’র বোঝা সারাটা জীবন কীভাবে বয়ে বেড়াতে হয়, সেই কাহিনিই ‘ত্রিভঙ্গ’তে তুলে ধরেছেন পরিচালক রেণুকা সাহানি (Renuka Shahane)। তিন নারীর এই কাহিনি তাঁরই লেখা। জীবনের বাস্তব মুহূর্তগুলির সূক্ষ্মতা চিত্রনাট্যে তুলে ধরেছেন রেণুকা।
তিন প্রজন্মের গল্প বলেছেন রেণুকা। কিন্তু ‘মেয়েবেলা’র কথা বলতে গিয়ে অযথা পুরুষদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাননি। তার বদলে মা, মেয়ে এবং মায়ের কাহিনি বলেছেন। মানে? একটু উদাহরণ দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করি। এই যেমন কমবেশি প্রত্যেক মেয়েকেই মায়ের কাছে একটি কথা শুনতে হয়। “নিজে মা হলে তারপর বুঝবি!” ছবিতে অনুও সেভাবে মা নয়নের দৃষ্টিভঙ্গী বুঝেছিল যখন মাশা নিজের তিক্ততার কথা তাকে জানিয়েছিল।
[আরও পড়ুন: ‘গান্ধী কলোনিকে গডসে কলোনি আপনারাই বানাবেন’, তথাগত রায়কে তোপ সায়নী ঘোষের]
অনুর চরিত্রে কাজলের (Kajol) সহজাত অভিনয়কে ব্যবহার করেছেন। ছোটবেলায় মায়ের প্রেমিকের হাতে যৌন নিগ্রহের ঘটনা প্রতিক্রিয়া থেকে কোমা-শয্যায় পড়ে থাকে মাকে বহুদিন বাদে ছোঁয়ার দৃশ্যগুলি অনবদ্য। নয়নের চরিত্রে অতিরিক্ত অভিনয় করে মেলোড্রামা সৃষ্টি করার চেষ্টা একেবারেই করেননি তনভি আজমি (Tanvi Azmi)। তাঁর মেদহীন অভিনয়ই ছবির সম্পদ। আপাত দৃষ্টিতে শান্ত এবং বুঝদার মনে হওয়া মানুষগুলির ভিতরেও যে ঝড় বয়ে যেতে পারে, মাশার ভূমিকায় তা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন মিথিলা পালকর (Mithila Palkar)। তবে ‘লিটিল থিংস’ সিরিজের কাব্য চরিত্রের মতো সহজাত অভিনয় পাওয়া গেল না।
সিরিজে মিলনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন কুণাল রায় কাপুর। তাঁর সঙ্গে কাজলের খুনসুটি দেখতে ভাল লাগে। বাকি চরিত্রে কনওয়ালজিৎ সিং, বৈভব তত্ত্বাওয়াড়ি, মানব গোহিল নিজেদের চরিত্রের চাহিদা পূর্ণ করেছেন। নিজের এই কাহিনি নিয়ে প্রথমে মারাঠি ভাষায় ছবি তৈরি করবেন বলে ঠিক করেছিলেন রেণুকা। তা করলে দর্শকদের প্রতি অবিচার করতেন তিনি। তার বদলে নেটফ্লিক্সের (Netflix) এ পাওনা বেশ ভাল।
[আরও পড়ুন: ভগবান শিবের অপমান! মুক্তির পরদিনই সইফের ‘তাণ্ডব’ সিরিজ বয়কটের ডাক]
This browser does not support the video element.